কমলগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন, চা শ্রমিকদের ১০ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি প্রদান করে এনটিসিএল’র চা বাগান চালু করার দাবি

November 14, 2024,

প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ : চা শ্রমিকদের ১০ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি প্রদান করে ন্যাশনাল টি কোম্পানী (এনটিসিএল) এর আওতাধীন সকল চা বাগান চালু করার দাবিতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর দুপুর ১২টায় কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু দলই ভ্যালী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, চায়ের এখন উৎপাদন মৌসুম চলছে। বাগান বন্ধ থাকায় শ্রমিক, মালিক, সরকার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করে দ্রুত চা বাগান চালু করার জন্য সরকারের বিশেষ উদ্যোগ কামনা করেন। এ ব্যাপারে আগামি ১৮ নভেম্বর শ্রম উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী। এ সময় বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক উপদেষ্টা পুষ্প কুমার কানু, বালিশিরা ভ্যালীর সভাপতি বিজয় হাজরা, মনু দলই ভ্যালীর সভাপতি ধনা বাউরীসহ বিভিন্ন চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন, ন্যাশনাল টি কোম্পানী (এনটিসিএল) এর আওতাধীন সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার ফাঁড়িসহ ১৯টি চা বাগান রয়েছে। এই বাগানগুলোর শ্রমিকরা ১০ সপ্তাহ যাবত মজুরী পাচ্ছেন না। এনটিসিএল এর অর্ধেকের বেশি শ্রমিক রয়েছেন কমলগঞ্জ উপজেলায়। এই শ্রমিকরা ৬ সপ্তাহ মজুরী ছাড়া কাজ করার পর গত ২১ অক্টোবর থেকে বিকল্প কাজের চেষ্টায় বাগানের কাজে যেতে পারছেন না। পরিবার পরিজন নিয়ে সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। ছাত্র-ছাত্রী, অসুস্থ মানুষ, শিশু ও বয়স্ক সবাই কষ্টে আছেন। অন্তবর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কমলগঞ্জ উপজেলায় এই শ্রমিকদের জন্য ৫০ মে:টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিপূর্বে সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলায় একাধিকবার সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা করা হয়েছে। এজন্য অন্তবর্তী সরকার, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটের জেলা প্রশাসক এবং কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

তিনি আরো বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও এখন পর্যন্ত সফলতা আসেনি। চায়ের উৎপাদন মৌসুম চলার সময় বাগান বন্ধ থাকায় শ্রমিক, মালিক, সরকার সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করে দ্রুত চা বাগান চালু করা এবং চা বাগান চালু না হওয়া পর্যন্ত সরকারি সহায়তা অব্যাহত রাখার দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালীর সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, এনটিসিএল কোম্পানিতে প্রায় ১২ হাজারের অধিক চা শ্রমিক কাজ করেন। ১০ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। মজুরি না পেয়ে তারা অত্যন্ত কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এনটিসিএল’র চা বাগানের শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যা মোটেও কাম্য নয়।

ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান বলেন, কোম্পানীর ম্যানেজমেন্ট পরিবর্তন হয়েছে। সে জন্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সময় লাগছে কিছুটা। শ্রমিক ও স্টাফদের মজুরী ও বেতন ভাতা বকেয়া থাকা অর্থকষ্টে দিনাতিপাত করছেন। ব্যাংক থেকে টাকা দিচ্ছে না। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আশা করছি, সেখানেই চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি বিষয়টি দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com