বড়লেখায় মসজিদ কমিটির সেক্রেটারিসহ ৭ বাড়িতে হামলা ভাংচুর, আহত ৫
আব্দুর রব : বড়লেখায় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে এক ঘরে ঘোষিত ব্যক্তিকে সেক্রেটারির মেয়ের আকিকায় দাওয়াত দেয়ার জেরে প্রতিপক্ষ রাতের আঁধারে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন খানসহ ৭ ব্যক্তির বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে। লুট করে নিয়ে গেছে মুল্যবান জিনিপত্র। এতে আহত হয়েছেন ৫ ব্যক্তি।
শনিবার ২৮ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০ টায় বিওসি কেছরীগুল গ্রামে সন্ত্রাসী এই ঘটনাটি ঘটেছে। সোমবার ৩০ ডিসেম্বর এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মাঝে চরম উদ্বেগ আতংক বিরাজ করতে দেখা গেছে।
অভিযোগ উঠেছে আফজল হোসেন, কামাল আহমদ, কাশেম আহমদ গংদের নেতৃত্বে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। রাতের আঁধারে চালানো হামলায় আহত হন-ফরিদা বেগম ও স্বপ্না বেগম। এর আগে আহত হন মসজিদের সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন, আব্দুল জলিল ও প্রতিপক্ষের আপ্তাব উদ্দিন। এদের দুইজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী একটি পরিবারের গৃহকর্তী রুশনা বেগম রোববার ২৯ ডিসেম্বর প্রতিপক্ষের ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন। আদালত আগামি ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সরেজমিনে ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিওসি কেছরীগুল গ্রাম পঞ্চায়েত উশৃঙ্খলার কারণে সয়ফুল আহমদকে গ্রাম থেকে একঘরি করে রাখেন। সয়ফুল আহমদ মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন খানের ভাতিজা হয়। কামাল উদ্দিন একঘরি ঘোষিত সয়ফুল আহমদকে মেয়ের আকিকায় দাওয়াত দেওয়ার জেরে গ্রামের কিছু সংখ্যক ব্যক্তি ক্ষেপে যায়। তারা শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর বাদ জুম্মা একঘরে সয়ফুল আহমদকে কেন আকিকায় দাওয়াত দিলেন কামাল আহমদকে কৈফত তলব করেন। একপর্যায়ে তারা তাকে মারধর শুরু করে। উপস্থিত মুসল্লিলারা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন।
এদিকে শনিবার দুপুরে গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের দ্বিতীয় ছেলে আব্দুল জলিল ভাগ্না কামাল উদ্দিন খানকে দেখতে গেলে প্রতিপক্ষের আপ্তাব উদ্দিন ও তার ছেলেরা ফেরার পথে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে আব্দুল জলিলের বাম হাতে মারাত্মক জখম হয়।
আহত জলিলকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এই ঘটনার জেরে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। অপরপক্ষের হামলায় আপ্তাব উদ্দিনও আহত হন।
আপ্তাব উদ্দিন আহত হওয়ায় তার পক্ষের লোকজন সঙ্গবদ্ধ হয়ে শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে দেশিয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আব্দুল জলিল, মসুদ আহমদ, আব্দুল কাইয়ুম, কামাল আহমদ খান, সায়ফুল আহমদ, মকবুল আলী ও জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে হামলা চালায়। ব্যাপক তান্ডব চালিয়ে দরজা জানালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্র, ইলেক্ট্রনিক্স দ্রব্যদি, আলমিরা ভেঙ্গে মালামালও লুট করে নিয়ে যায়।
মসজিদ কমিটির সভাপতি খলিলুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। এলাকার ময়মুরব্বিরা উদ্যোগ নিয়েছেন।
থানার ওসি মো. আব্দুল কাইয়ুম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ক্ষতিগ্রস্থ একটি পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মামলটি তদন্ত করছেন। যথাসময়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিবেন।
মন্তব্য করুন