মৌলভীবাজারে আলোচিত আইনজীবী হত্যাকান্ড : ৫ জন গ্রেপ্তার মিসবা ভেবে আইনজীবী সুজনকে হত্যা করে ভাড়াটে লোক-পুলিশ সুপার

April 10, 2025,

স্টাফ রিপোর্টার : মৌলভীবাজারের আলোচিত তরুণ আইনজীবী সুজন মিয়া হত্যা কান্ডের চারদিন পর হত্যাকান্ডের মূল ক্লু উদ্ধার করেছে পুলিশ। মিসবা মিয়া নামের অপর এক ব্যক্তিকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল। চেহারায় হুবহু মিল থাকায় তরুণ আইনজীবী সুজন মিয়াকে হত্যা করে।

বৃহস্পতিবার ১০ এপ্রিল দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এম, কে, এইচ, জাহাঙ্গীর হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। পুলিশ সুপার আরও জানান, আইনজীবী সুজন মিয়া হত্যাকান্ডে আব্দুর রহিম নামের এক ব্যক্তি মোবাইলের ইম্যুতে ভিডিও কলের মাধ্যমে মিসবা মিয়ার ছবি শনাক্তের জন্য হত্যা পরিকল্পনাকারি নজির মিয়া মুজিবকে অবহিত করে। পরে নজির মিয়া শনাক্ত করলে হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। আর ওই হত্যার স্বীকার হন তরুণ আইনজীবী সুজন মিয়া। হত্যা পরিকল্পনাকারি নজির মিয়াসহ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৫ জনকে পুলিশ তথ্য প্রমানসহ গ্রেফতার করলে তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করে। শনাক্তকারি আরও ৫ জনকে পুলিশ গ্রেফতারে তৎপরতা রয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খালিশপুর গ্রামের নজির মিয়া মুজিবের সাথে একই গ্রামের মিসবাহের পূর্বের শত্রুতা ছিল। এতে নজির মিয়া (মুজিব) মিসবাহকে শায়েস্তা করতে অনেক আগ থেকে পরিকল্পনা করতে থাকে। এক পর্যায়ে নজির মিয়া মুজিবের পূর্ব পরিচিত লক্ষণ নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে মিসবাহকে হত্যা করার জন্য ভাড়াটে লোক নিয়োগ করে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্ধসঢ়;) নোবেল চাকমা, সদর মডেল থানা অফিসার ইনচাজ গাজী মোঃ মাহবুবুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিনহাজ উদ্দিন সহ অন্যান্যরা। পুলিশের একটি বিশেষ টিম ঘটনাস্থলের বিভিন্ন সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ এবং তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা এদর গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-নজির মিয়া (মুজিব) (২৫), পিতা-সামছুল হল, সাং-বাসুদেবশ্রী (খালিশপুর), মো: আরিফ মিয়া (২৭), পিতা-মৃত সিজিল মিয়া, সাং-রঘুনন্ধনপুর, বাসা নং-৫২, হোসাইন আহমদ সোহান (১৯), পিতা-আনসার মিয়া, সাং-দিশালোক, দিশালোক ইটা সিংকাপন, থানা ও জেলা মৌলভীবাজার, লক্ষন নাইডু (২৩), পিতা-মনা নাইডু, সাং-মাথিউরা চা বাগান, রাজনগর, জেলা মৌলভীবাজার, আব্দুর রহিম (১৯), পিতা-মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাং-কাশিপুর পূর্বপাড়া, থানা কেন্দুয়া, জেলা-নোকোনা, বর্তমান ঠিকানা-মল্লিকসরাই (অলিম মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া), থানা ও জেলা-মৌলভীবাজার।

উল্লেখ্য ৬ এপ্রিল দিবাগত রাত ১১টার দিকে মৌলভীবাজার শহরের পৌরসভার উত্তর গেটের তামান্না ফুসকার দোকানের সামনে বসে তিন বন্ধুকে সাথে নিয়ে ফুসকা খাচ্ছিলেন আইজীবী সুজন। এমন সময় প্রায় ১০ জন দুর্বৃত্ত সুজনের বুকবরাবর ছুরি দিয়ে উপুর্যুপুরি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। সাথে থাকা বন্ধুরা সহ স্থানীয়রা দ্রুত সেখান থেকে সদর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরদিন ৭ এপ্রিল বিকাল ৫টায় শহরের শাহ মোস্তফা রহ: টাউন ঈদগাহে সুজনের জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতি দলের নেতৃবৃন্দ, বারের আইনজীবী সহ বিভিন্ন মহলের শোকার্ত মানুষের ঢল নামে। নিহত সুজন মিয়া শহরতলীর মোস্তফাপুর ইউনিয়নের খিদুর গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম এর ছেলে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com