অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা : ১০ জানুয়ারী রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন

January 11, 2020,

মকিস মনসুর: তোমার আগমনে এলো পূর্নতা ;রক্তে কেনা বাঙ্গালীর স্বাধীনতা। ১০ জানুয়ারী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস.।  বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে প্রবাসী সরকার তার নির্দেশনা অনুসরণ করে স্বাধীনতা অর্জনের পথে মুক্তিযোদ্ধা, জনতা ও মিত্রবাহিনীর যৌথ সংগ্রামে নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালীর বিজয়  চূড়ান্ত রূপ নিতে শুরু করে.। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হলে পাকিস্তানি বর্বর শাসকগোষ্ঠী বাধ্য হয় তাকে সসম্মানে মুক্তি দিতে।   নয়  মাস ১৪ দিন কঠিন কারাভোগ করে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারী  পাকিস্তানে বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেয়ে পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান  তারপর দিল্লি হয়ে  বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে  ১৯৭২ সালের এদিন বেলা ১টা ৪১ মিনিটে  রক্তস্নাত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে আসেন.।জীবন-মৃত্যুর কঠিন চ্যালেঞ্জের ভয়ঙ্কর অধ্যায় পার হয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে মহান এ নেতার  স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে পূর্ণতা পায় মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের বিজয়.।  আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানায়.।  ফাঁসির মঞ্চ থেকে ফিরে বিকাল ৫টায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে  বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু সেদিন আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেছিলেন যে, তাঁর সারাজীবনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে। একজন বাঙালি বেঁচে থাকতেও এই স্বাধীনতা নষ্ট হতে দেয়া হবে না বলে উল্লেখ করে   সশ্রদ্ধ চিত্তে তিনি সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন, সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করেন।সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করে  ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২৩ সদস্য বিশিষ্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে।স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম সরকারের সাফল্য ছিল যুদ্ধবিধস্ত দেশ পুনর্গঠন এবং প্রায় এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন। বঙ্গবন্ধু সরকার অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে এই গুরু দায়িত্ব সম্পন্ন করে। দুর্ভিক্ষের যে আশঙ্কা করা হয়েছিল, সরকার তা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করে। সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন গড়ে তোলা হয়। বাংলাদেশ সেই মুহূর্তে অল্প সময়ের মধ্যে শতাধিক রাষ্ট্রের কূটনৈতিক স্বীকৃতি লাভ করতে সক্ষম হয়। স্বাধীনতা লাভের তিন মাসের মধ্যেই বাংলার মাটি থেকে ভারতীয় সৈন্যদের প্রত্যাবর্তন বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছিল।১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ জারিকৃত প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশ বলে গণপরিষদ গঠন করে নভেম্বর মাসের মধ্যেই দেশের জন্য একটি সংবিধান উপহার দেয়া হয় এবং যা কার্যকর হয়.।বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এই দিনটি অবিস্মরণীয় ও ঐতিহাসিক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে এবং থাকবে. জনতার মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজের রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, অবশেষে সেই স্বাধীনতা নিয়ে দুঃখী জনতার কাছে ফিরলেন রাজনীতির কবি, মহামানব, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

পাকিস্তানের বন্দীশিবিরে মৃত্যু ছিল তাঁর  প্রতি মুহূর্তের সঙ্গী। কিন্তু তিনি বীর বেশে ফিরলেন তাঁর সাড়ে ৭ কোটি মানুষের ভালোবাসায়। সেদিন ইতিহাসের এই মহানায়কের প্রত্যাবর্তনে দেশবাসীর চোখ ভেসে গিয়েছিল আনন্দ অশ্রুতে। সাড়ে ৭ কোটি ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষ ফিরে পেয়েছিল তাদের মহান নেতাকে। এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে!!

ইতিহাসের পাতায় অনন্ত অক্ষয় হয়ে থাকবে বাঙালির রাখাল রাজা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন. এবারকার ১০ জানুয়ারি  জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী মুজিবর্ষ উদযাপনের শুভ লগ্নের  এই দিনে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুরস্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা বিনির্মাণে মানণীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ডিজিটাল বাংলার আলোর মিছিলকে এগিয়ে নেওয়া হোক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার.

অভিনন্দন সহ নিবেদনে বৃটেনের কচুয়া হাউস থেকে;-

মোহাম্মদ মকিস মনসুর.  সভাপতি হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ইন ইউকে.

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com