অপহরনের তিন দিন পর কমলগঞ্জের নবম শ্রেণির ছাত্রী এক প্রবাসীর তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে শিকল বাধা অবস্থায় উদ্ধার
প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ॥ কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের অভয়চরন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী শুক্রবার ৬ মে নিজ গ্রাম থেকে অপহৃত হয়েছিল। অপহরনের ৩ দিন পর এলাকাবাসীর সহযোগীতায় মৌলভীবাজারা সদর উপজেলার শেরপুরের দুর্গাপুর গ্রামের এক প্রবাসীর বাড়ির তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে শিকল বাঁধা অবস্থায় ছাত্রীটিকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে।
অপহৃতা স্কুল ছাত্রীর (রুমানা আক্তার) মা হাওয়ারুন বেগম জানান, শুক্রবার সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের অভয়চরন উচ্চ বিদ্যালয়ে সেলাই ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ শেষ করে সে (১৫) প্রতিদিনের মত বাড়ি ফিরছিল। বাড়ি ফেরার পথে দুপুর ১২টার দিকে নির্জ্জন এলাকার পথিমধ্যে একই গ্রামের আইয়ুব আলীর বখাটে পুত্র সাজু মিয়া পথরোধ করে জোরপুর্বক একটি গাড়িতে তুলে অপহরন করে। খবরটি জেনে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোজঁ করে তার সদ্ধান না পেয়ে বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করেন। পরে শনিবার ৭ মে দুপুরে ছাত্রীর চাচা সায়েদ মিয়ার মুঠোফোনে একটি অপরিচিত নাম্বার (০১৭৪৮-৪৩৫৮৬১) থেকে ফোন আসে। মুঠোফোনে মুক্তিপণের জন্য ৩ লাখ টাকা দাবি করা হয়। দাবিকৃত টাকা নিয়ে শেরপুরের দুর্গাপুর গ্রামে প্রবাসী আলী হুসেনের বাড়িতে টাকা পৌছে দিয়ে অপহৃতা ছাত্রীকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য বলা হয়। সাথে সাথে হুমকি দিয়ে বলা হয় কাউকে বিষয়টি জানালে ছাত্রীটির ক্ষতি হবে।
পরদিন রোববার ৮ মে বিকাল ৩টায় রহিমপুর ইউনিয়নের সদস্য মাহমুদ আলীসহ পরিবারের লোকজন অপহৃতা ছাত্রীকে উদ্ধারে শেরপুরের দুর্গাপুর গিয়ে সেখানের গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে বখাটে সাজুর আত্মীয় প্রবাসী আলী হুসেনের বাড়ি গেলে অপহরণকারী সাজু মিযা (২৪) ও রুমন মিয়া (২৬) লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। পরে লোকজন প্রবাসীর বাড়ির তালাবদ্ধ একটি কক্ষ থেকে শিঁকলে বাঁধা অবস্থায় অপহৃতা নবম শ্রেণির ছাত্রীকে মুমুর্ষ অবস্থায় রাত ১০টায় কমলগঞ্জ থানায় নিয়ে আসেন। ছাত্রীর (রুমানার) শারীরিক অবস্থা দেখে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করলে তাকে রাতেই মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমেেপ্লক্সের কর্তব্য চিকিৎসক আজিজুর ইসলাম মুমুর্ষূ অবস্থায় ছাত্রীকে ভর্তি ও রাতেই মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
সোমবার রাতে ছাত্রীর মা হাওরুন বেগম বাদী হয়ে অপহরণকারী সাজু মিয়া, রুমন মিয়া ও সাজু মিয়ার মা খয়রুন বেগমকে আসামী করে কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ১০ মে মঙ্গলবার মুঠোফোনে আলাপকালে নির্যাতিতা ছাত্রী (রুমানা) জানায়, অপহরণ করে নিয়ে তালাবদ্ধ করে আটকিয়ে দুইদিন তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বদরুল হাসান থানায় মামলা গ্রহন ও ছাত্রী উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে অভিযুক্ত সাজু ও রুমনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন