অবশেষে বড়লেখার দক্ষিণভাগ হাইস্কুল ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন
বড়লেখা প্রতিনিধি॥ অবশেষে বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ এনসিএম হাইস্কুলের নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন দিল সিলেট শিক্ষাবোর্ড।
২৩ জুলাই রোববার বোর্ডের স্কুল পরিদর্শক ড. সৈয়দ মোয়াজ্জম হুসেন স্বাক্ষরিত ১১ সদস্যের কমিটি অনুমোদনের কপি স্কুলে পৌছেছে। মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বানচালকারী সেই সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীদুল ইসলাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানকে প্রভাবিত করে প্রায় ২ মাস কমিটির অনুমোদন ঝুলিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দক্ষিণভাগ হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ পরীক্ষায় জুড়ী হাজী ইনজাদ আলী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আসুক আহমদ নির্বাচিত হন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীদুল ইসলাম নিয়োগ পরীক্ষায় বাদ পড়ায় এ নিয়োগ বাতিলের অপতৎপরতা শুরু করেন। এঘটনায় ২৭ সেপ্টেম্বর ছাত্র-জনতার হাতে স্কুলে তিনি প্রহৃত হন। নানা নাটকীয়তা শেষে ১৮ অক্টোবর আসুক আহমদ প্রধান শিক্ষক হিসেবে এ স্কুলে যোগ দেন। এরপর সহকারী প্রধান শিক্ষক (সাবেক ভারপ্রাপ্ত) শাহীদুল ইসলাম নবনিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আসুক আহমদকে প্রধান আসামী করে ১২ জনের বিরুদ্ধে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়েল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন। এ মামলার কারণে নিয়োগের ১০ মাস অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি তিনি এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। এদিকে ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ইউএনও’কে সভাপতি করে ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদের এডহক কমিটি গঠিত হয়। এডহক কমিটি চলিত বছরের ২০ মে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অভিভাবক সদস্যপদে আমির উদ্দিন, আব্দুল বাছিত, আব্দুল লতিফ ও সেবুল আহমদ, শিক্ষক প্রতিনিধি পদে সিনিয়র শিক্ষক লুৎফুর রহমান, বদরুল হক, মার্জিয়া হামিদ, সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য পদে ফাহিমা বেগম, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পদে অভিজিৎ দাস নির্বাচিত হন। নির্বাচিত কমিটির সদস্যবৃন্দ প্রথম সভায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজির উদ্দিনকে সভাপতি করে তা অনুমোদনের জন্য প্রধান শিক্ষক আসুক আহমদ গত ২৪ মে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন করেন। কিন্তু অদৃশ্য অভিযোগে তা প্রায় দুই মাস ঝুলিয়ে রাখায় স্কুলের শিক্ষ/কর্মচারী ও নির্বাচিত কমিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উদ্বেগ, হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করে। অবশেষে কমিটি অনুমোদন হওয়ায় সর্বমহলে স্বস্তি ফিরে আসে।
সুত্র জানায়, সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (বর্তমানে সহকারী প্রধান শিক্ষক) উক্ত কমিটি অনুমোদন না করতে বোর্ড চেয়ারম্যানের নিকট গোপন অভিযোগ জমা রাখেন। আর এতেই প্রায় ২ মাস বোর্ড চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া কমিটি আটকিয়ে রাখেন। উল্লেখ্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীদুল ইসলাম বোর্ড চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়ার ঘনিষ্টজন। তার দাপটে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে তিনি স্কুলে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি চালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধের দুর্নীতির অনেক অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলেও বোর্ড চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি। এতে সে বেপরোয়া হয়ে উঠে।
এডহক কমিটির সভাপতি ও ইউএনও এসএম আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচিত কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়ে তা সম্পন্ন করেন। সভাপতি নির্বাচন করেই প্রধান শিক্ষক বোর্ডে কমিটি অনুমোদনের আবেদন করেন। জুনের প্রথম সপ্তাহে তা অনুমোদনের কথা। কিন্তু দীর্ঘদিন তা ঝুলিয়ে রাখায় স্কুলের শিক্ষক/কর্মচারীরা তাদের বেতন বিলে স্বাক্ষরের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এ ছাড়া নির্বাচিত সদস্যরাও তাকে নানা কথা বার্তা বলেছেন।
প্রধান শিক্ষক আসুক আহমদ জানান, আবেদনের প্রায় ২ মাস পর গত রোববার তিনি বোর্ড কর্তৃক কমিটি অনুমোদনের কপি পেয়েছেন। বোর্ডের স্কুল পরিদর্শক ৩০ দিনের মধ্যে একজন শিক্ষানুরাগী (কো-অপ্ট) সদস্য নির্বাচনের নির্দেশনা দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন