“আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশের ভূমিকা ও অবদান; ডি,এম,পি, কমিশনার একজন মোঃ শফিকুল ইসলাম থেকে পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ পি,পি,এম,বার এর কথাঃ কতেক প্রাসঙ্গিঁতা॥

November 27, 2019,

মুজিবুর রহমান মুজিব॥ মানব সভ্যতা ও মানব জাতির ইতিহাসে আইনের শাসনের আবিষ্কার ও অভ্যোদ্যয় ঐতিহাসিক ঘটনা। বিশ্ব সমাজ ও বিশ্ব সভ্যতা একটি আইনগত কাঠামোর উপর দাড়িয়ে আছে। লীগ অব নেশনশ (League of Nations) এর ব্যর্থতার পর বিশ্বসমাজ, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্টার লক্ষে গঠন করেন সম্মিলিত রাষ্ট্রপুজ্ঞ United Nations organization- U.N.O| । দুইটি বিশ্বযুদ্ধ মানব সভ্যতার ভিতকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। জাতি সংঘের সদস্য দেশ সমূহকে জাতি সংঘের আইনকানুন- চার্টার- মেনে চলতেই হয়। সদস্য দেশ সমূহের বাহিনী সমন্বয়ে জাতি সংঘের রয়েছে শান্তিরক্ষি বাহিনী। জাতি সংঘের শান্তি মিশনে কাজ করা সম্মান ও সৌভাগ্যের ব্যাপার। বিশ্বশান্তি মিশনে অংশ গ্রহণ কারী বাংলাদেশী সেনা সদস্যগণ বহিবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম, ইমেজ ও ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করছেন- দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারকেও সম্বৃদ্ধ করছেন।

বৃটিশ ভারতে, ভিন্নদেশী শাসক ইংরেজরা পুলিশ প্রশাসনের প্রবর্তক। বৃটিশ সরকার তাঁদের স্বার্থ ও প্রশাসনিক প্রয়োজনে সমগ্র বৃটিশ ভারতে প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তুলে। বৃটিশ প্রবর্তিত Iudian Penal Code- I.P.C সাতচল্লিশ সালে ভারত বিভক্তি এবং পাকিস্তান ও হিন্দু স্থান-দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হলে ও.I.P.C আদ্যাক্ষর পরিবর্তিত হয়েI Pakistan Penal Code- P.P.C নামে রুপান্তরিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর P.P.C আবার শুধু আদ্যাক্ষরের পরিবর্তন হয়। নাম হয় Bangladesh Penal Code B.P.C| । আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বাহিনীর একটি সাংঘটনিক কাঠামো আছে। কনেষ্টবল থেকে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ আই.জি.পি. পর্য্যন্ত পুলিশ প্রশাসনের এই-চেইন অব কমান্ড-অত্যন্ত সু-সংঘটিত ও সুশৃংখল।

একবিংশ শতাব্দীর এই অত্যাধুনিক সমাজে আইনের শাসন-সুশাসনের বিকল্প নেই-আইন-কানুন-বিধি-বিধান-বিহীন সমাজ-অকল্পনীয়-অচিন্তনীয়-মগের মুল্লুক। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী- ল এনফোর্সিং এ জেন্সী-হলেন পুলিশ। নাগরিকদের জানমাল-জীবন-সম্পদের নিরাপত্তা প্রদান করেন পুলিশ। পুলিশ মানুষের বিশ্বস্থ বন্ধু, শত্রু নহেন। জঙ্গী, চোর, ডাকাত, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মস্তান, চোরাকারকারী, মাদক সেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের দুষমন ও প্রতিপক্ষ হলেন পুলিশ। একজন দেশপ্রেমিক নিষ্টাবান আদর্শ পুলিশ সসস্ত্র অপরাধিদের মোকাবিলা করেন; কোথাও নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেন।

পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক শাসনামলের শেষ ভাগে পাক ফৌজি শাসকগণ রাষ্ট্রও সরকার পরিচালনায় পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করতেন।

ষাটের দশকে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম- ছাত্র রাজনীতির দায়িত্বে নেতৃত্বে ছিলাম। জীবনের এই শেষ প্রান্তে-এই পড়ন্ত বেলায় সেই অগ্নি ঝরা সেই দিন গুলির আলোড়ন সৃষ্টি কারি শ্লোগান গুলির মধ্যে পুলিশ তুমি যতই মারো, বেতন তোমার দুইশ বারো” এখনও মনে পড়ে। যতটুকু মনে পড়ে তখন পুলিশ বাহিনী বাংলা ও বাঙ্গালিদের স্বার্থ সংরক্ষন ও অধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্রতি ক্ষেত্র বিশেষে ব্যতিক্রম বাদে সংবেদন শীল ছিলেন- এগ্রেসিভ ছিলেন না। পাকিস্তানী আমলে পুলিশ বাহিনীর ঐতিহ্য মন্ডিত অবদান ও গৌরবোজ্জল ভূমিকা হল একাত্তোরের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ। পাক হানাদার বাহিনী পুলিশ হেড কোয়ার্টার আক্রমণ করলে পুলিশ বাহিনী সসন্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক পর্য্যায়ে সেনা বাহিনী ই.পি.আর. পুলিশ, আনছার, মোজাহিদ বাহিনী সামরীক প্রশিক্ষন থাকায় প্রাথমিক পর্য্যায়েই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতা উত্তর কালে বঙ্গঁবন্ধুর সরকার স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জিবিত বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক বাহিনী হিসাবে গড়ে তুলেন-কালক্রমে ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশ ডি.এম.পি. সহ বিভিন্ন মেট্রপলিটন পুলিশ ফোর্স গঠন করা হয়। এলিট ফোর্স রেপিড এ্যকশন ব্যেটেলিয়া-র‌্যাব পুলিশ বাহিনীর একটি অত্যাধুনিক সংযোজন। অপরাধ দমন, ন্যায় বিচার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্টায় কমবাইন্ড  এলিট ফোর্স, র‌্যাব এর দুঃসাহসী ভূমিকা দেশবাসি কর্তৃক প্রশংসিত। রাজধানী ঢাকায় মদ জুয়ার আসর-ক্যেসিনো কালচাার বিরোধী র‌্যাব এর প্রশংসনীয় অভিযান এবং ক্যাসিনো স¤্রাট-স¤্রাটদেরকে গ্রেপ্তার-রিমান্ড-জিজ্ঞাসাবাদ ও বিভিন্ন তথ্য উদ্ধার নিঃসন্দেহেই প্রশংসনীয় কাজ। একজন লোভী ডি.আই.জি.প্রিজন শ্যামল কান্তি, দা পুটে এস.পি.হারুন এবং দূর্নীতিবাজ ওসি মোয়াজ্জেম এর দোষে গোটা পুলিশ বাহিনীকে দোষারুপ করা যায় না। ষাটের দশক থেকে সাংবাদিকতা ও সমাজ কর্ম, নব্বইর দশকে এ জেলার পাবলিক প্রসিকিউটার এবং জেলাবার, রেডক্রশ, প্রেসক্লাব, শিশু একাডেমী, পাবলিক লাইব্রেরী, রোটারিক্লাব ইত্যাদি জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক সেবা সংঘটন সমূহের সভাপতি সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন কালে সামাজিক প্রয়োজনে প্রশাসনও পুলিশ বাহিনীর সঙ্গেঁ কাজ করতে হয়েছে। মহকুমার আমলে মহকুমা পুলিশের প্রধান ছিলেন সাবডিভিশনেল পুলিশ অফিসার- এস.ডি.পি.ও, জেলা হওয়ার পর জেলা পুলিশের প্রধান হলেন সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ এস.পি।

মহকুমা আমলে আমাদের মহকুমা পুলিশ প্রধানদের মধ্যে শহীদুল্লাহ খাঁন, জি.এম.চৌধুরী সাহেবদের কথা এখন ও আমার বার বার মনে হয়, মনে পড়ে। সুমন শহীদ নামে সুপরিচিত শহীদুল্লা খান বীর মুক্তিযোদ্ধা, তেয়াত্তোরের ব্যাচ এর কর্মকর্তা, সাংস্কৃতিক সংঘটক ও শিল্পী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের উপর ভিত্তি করে রচিত আমার লেখা নাটক-সোনার হরিনের-নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে সবার মনজয় করেছিলেন নায়ক চিত চেহারার সুদর্শন সুমন শহীদ। কৃতিত্বের সাথে অতিঃ আই.জি.পি. হয়ে অবসর গ্রহণ করেছিলেন তিনি। জেলা হওয়ার পর আমাদের এস.পি. সাহেবদের মধ্যে মাযহারুল ইসলাম পি.পি.এম. শাহ আলম সিকদার, এ.কে.এম. শহীদুল হক, মোঃ মকলিছুর রহমান, এ.কে.এম. সামসুদ্দীন আহমদ, মোঃ শাহ জালালের সঙ্গেঁ আমার সম্পর্ক ও সখ্যতা ছিল। এ.এস.পি সাহেবদের মধ্যে মোঃ শফিকুল ইসলাম সাহেব এর সঙ্গেঁও আমার সু-সম্পর্ক ছিল। তিনি কেয়ার টেকার সরকারামলে সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় পুলিশ সুপার ছিলেন। তাঁর কার্য্য কালে সুনামগঞ্জ বিয়ে খেতে গিয়েও তার সঙ্গেঁ দেখা হয়েছে। সুনামগঞ্জের আমার সহপাঠি বন্ধুমহল এবং আত্মীয় স্বজনের কাছে তার জনপ্রিয়তা, সততা ও কর্ম দক্ষতার কথা শুনেছি। জনাব ইসলাম সম্প্রতি ডি.এম.পি-এর কমিশনার হয়ে কঠোর হস্তে দায়িত্ব ভার গ্রহণ করেছেন। রাজধানী ঢাকার ক্যেসিনো কালচারের কালিন্য মুচন, আইনশৃংখলা পরিস্থিতি উন্নতি ও নিয়ন্ত্রনে রাখতে প্রয়োজনে ডি.এম;পি এর প্রত্যেকটি থানায় ও.সি.এর চেয়ারে বসে ওসিগিরি ঘোষণা দিয়ে মিডিয়া মহলে প্রশংসিত হয়েছেন। পুলিশের সদ্য প্রাক্তন আই.জি.পি এবং হাল হামলের বিশিষ্ট কলামিষ্ট এ.কে.এম. শহিদুল হক এ জেলায় দক্ষতা ও জনপ্রিয়তার সাথে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাঁর কার্য্যকালে এখানে কমিউনিটি পুলিশের ধারনা ও আন্দোলনটি বেগবান হয়। তার চিন্তা চেতনাও বলিষ্ট উদ্যোগ ও নেতৃত্বে জেলা সদরে প্রথম বারের মত কমিউনিটি পুলিশ প্রসঙ্গেঁ একটি ব্যতিক্রমী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়ে ছিল। সেই বিশাল ও বর্নাঢ্য সেমিনারানুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহীদ এম.পি- (বর্তমানে ডক্টর এবং একাধিক সরকারি উচ্চ পদও দায়িত্বে নিয়োজিত)। সৌভাগ্যক্রমে সেই সেমিনারানুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ ছিল আমার। আমাদের সদ্য প্রাক্তন এস.পি. হলেন মোঃ শাহজালাল। সুদর্শন ও মিষ্টভাষি এই ভদ্রলোক ছিলেন একজন সাহসী পুলিশ প্রশাসক। তাঁর কার্য্যকালে মৌলভীবাজারের ফতেপুর ও বড়হাটে কতেক কথিত জঙ্গীঁর মিনি জঙ্গীঁ তৎপরতা দেখা দিলে সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে তাঁর পুলিশ বাহিনী নিয়ে স্বয়ং দুঃসাহসী অভিযান চালান। এস.পি.শাহ জালালের দুঃসাহসী ভূমিকায় জান মালের নিরাপত্তা এবং জঙ্গীঁদমনে শত্রুর অস্ত্রের মুখে নিজের বুক পেতে দিয়ে ছিলেন জেলার যোগ্য পুলিশ সুপার মোঃ শাহ জালাল। সরকার তাঁকে পুরস্কৃত করেছে। তিনি পুলিশ পদকে ভূষিত হয়েছেন। সম্প্রতি আমি জনকল্যান ও দেশপ্রেম মূলক গণ মুখী কাজের “কি চমৎকার দেখা গেল” শিরোনামে কলাম লিখছি। প্রিন্ট মিডিয়া ছাড়াও অনলাইনেও দারুণ প্রশংসিত হয়ে উৎসাহিত হচ্ছি। এস.পি. শাহ জালালের এই সাহসী ভূমিকায় আবেগ আপ্লুত হয়ে লিখলাম এস.পি. শাহ জালাল পীরানে পীরের নাম জান বাজি কাম” লেখাটি ঢাকাস্থ জাতীয় দৈনিক ইনকিলাব, সিলেটের প্রায় সবকটি দৈনিক, মৌমাছি কন্ঠের সৌজন্যে- অন লাইনে-ও-গেল। লেখাটি দারুণ পাঠক প্রিয়তা পেয়েছিল। শুনেছিলাম কাজের মানুষ মোঃ শাহ জালাল ও লেখাটি পাঠ করে তাঁদের কাজের মূল্যায়ন হয়েছে বলে তৃপ্তি লাভ করে ছিলেন। আমি লেখাটি দেখিয়ে কিংবা লেখার কথা বলে বাহবা নিতে কিংবা নিউরা-করিনি। এজন কলম সৈনিক হিসাবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলা, সত্য প্রকাশ করা একজন কলম সৈনিক এর দায়িত্ব। চাটুকারিতা কিংবা হটকারিতা উভয়ই সত্য সন্দানী কলম সৈনিক এর পরিহার করা উচিত। এস.পি. শাহ জালাল মেয়াদ শেষে যাবার বেলায় ফেইসবুক যে স্ট্যাটাস দেন তা ছিল আবেগ ঘন ও হৃদয় গ্রাহী।

এস.পি. মোঃ শাহ জালালের বিদায় এর পর এ জেলার পুলিশ সুপার হিসাবে যোগদান করেন মোঃ ফারুক আহমদ পি.পি.এম- বার। প্রথম দর্শনে বিমুগ্ধ হওয়ার মত একটি মিষ্টি মুখ। ফর্সা চেহারা মাঝারি গড়নের দীর্ঘদেহী বিনয়ী ভদ্রলোক। দেড় দশকের চাকরিতেই তার মেধাও মনন কর্ম দক্ষতা ও কর্ম ক্ষমতার কারনে পেয়েছেন পুলিশ পদক। ডি.সি. এবং এস.পি. সাহেবরা নতুন কর্ম ক্ষেত্রে হলে প্রশাসন- সুধিজনের সঙ্গেঁ সৌজন্য সাক্ষাত ও মত বিনিময় করে থাকেন। এটাই প্রশাসনিক পদ্ধতি ও প্রচলিত প্রথাও রেওয়াজ। মৌলভীবাজার জেলার নবাগত পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ পি.পি.এম বার সেই প্রথা ও পদ্ধতি মোতাবেক সৌজন্য সাক্ষাতকার দিলেন-করলেন। কথাবার্তা বল্লেন। স্থানীয় প্রেস ও মিডিয়ার সঙেঁ ও কথা বল্লেন, মত বিনিময় করলেন পুলিশ সুপার সাহেব। একজন গ্রহ্ণ প্রেমিক হিসাবে প্রেস ক্লাবে পুস্তক ও উপহার দিলেন তিনি। প্রেসক্লাব আমার প্রিয় প্রাঙ্গঁন। আমার হাত দিয়েই এই প্রেসক্লাবের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। দীর্ঘদিন আমি প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি অতঃপর সভাপতি ছিলাম। প্রেসক্লাবের বর্তমান সভাপতি-সম্পাদক যথাক্রমে অনুজ প্রতিম আব্দুল হামিদ মাহবুব এবং ¯েœহভাজন সালেহ এলাহি কুটি আমার খুবই প্রিয়ভাজন। লেখার কারণে প্রেসক্লাব কর্মকর্তা এবং দৈনিক মৌমাছি কন্ঠের সম্পাদক সুপ্রিয় শেখ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ এর সঙ্গেঁ আমার প্রায় হর রোজই-দেখা হয়, কথা হয়। তাদের কাছেও আমাদের নবাগত এস.পি. সাহেব এর ব্যতিক্রমি কথাবার্তা শুনে বেশভালোলাগল। বয়োঃবৃদ্ধি, অসুস্থতা শারীরিক দুর্বলতা এবং সাম্প্রতিক কালে দূর্ঘটনাজনিত পায়ের অসুস্থতার কারনে আমার চলাফেরা এখন স্থিমিত। সর্বত্র-সহজে আজ কাল যেতে পারি না, যাই না। ইতিমধ্যে বড়লেখার একটি সভায় এ জেলার এস.পি. ফারুক আহমদ পি.পি.এম বার গর্বও গৌরবে, বল্লেন পুলিশের ষোলবছরের চাকরিতে ষোল টাকাও ঘুষ খাইনি। পত্রিকায় এমন সংবাদ দেখে আনন্দিত ও আবেগ আপ্লুত হলাম। দেশব্যাপী ধুমছে ধর্ষন, ঘুষ, দূর্নীতি, ভ্রষ্টাচার আর ক্যেসিনো কালচারের জোয়াড়ে জাতি যখন দিশাহারা তখন একটি জেলার আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানের এমন আত্যপ্রত্যয়ী ঘোষনায় আনন্দি হলাম। আজীবন ঘুষ-দূর্নীতির বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই করেছি, রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তা হিসাবে সততা ও নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রতিকুলতার সম্মুখীন হতে হয়েছি। সততা ও নিরপেক্ষতার জন্য আমাকে কিছু দুষ্ট লোকের বিরুপ সমালোচনা ও বিড়ম্বনার সম্মুখীন হয়েছে। এস.পি. সাহেবের এমন ঘোষনায় আশাবাদি হলাম। এমন একজন সৎ ও আদর্শ পুলিশ প্রধানের সঙ্গেঁ সাক্ষাত করে তাঁকে ধন্যবাদ জানানো, তার গণমুখী কর্মকান্ডে সহযোগিতা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি। গেল সপ্তায় তাঁর দপ্তরে এক বিকেলে ¯েœহভাজন শেখ সিরাজ সহ তাঁর দপ্তরে সাক্ষাত করি। আমার প্রথামাফিক আমার গ্রহ্ণ উপহার দেই। তাঁর কর্মকান্ডে সমর্থন ও সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করি। জাতীয় পর্য্যায়ে কিছু নষ্টরাজনীতিবিদ, কতেক দুষ্ট পুলিশ ও অসৎ আমলা এই তিনের অশুভ সম্মিলনে অফিস আদালতে দূর্নীতি, স্বজন প্রীতি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি-বানিজ্যায়ন-দূবৃত্তায়ন হয়। জেলা সদর-মৌলভীবাজার তিন এর মাননীয় সাংসদ জনাব নেছার আহমদ, জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান এম.আজিজুর রহমান সদর উপজেলার চেয়ারম্যান কামাল হোসেন এবং মৌলভীবাজার পৌরসভারচেয়ারম্যান মোঃ ফজলুর রহমান এই চারজন প্রতিনিধিই ঘুষ-দূর্নীতি- চাদাবাজ-ধান্দাবাজির বিরুদ্ধে সোচ্চার। এ জেলার জেলা ও দায়রা জজ শেখ আবু তাহের একজন কটুর ও কঠিন সৎ ও নিষ্টাবান, ন্যায় বিচারক হিসাবে সর্ব্বমহলে খ্যাত ও স্বীকৃত সেখানে নিঃসন্দেহেই বলা চলে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসাবে পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ পি.পি.এম.বার নির্বিবাদে নিজ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

বৃহত্তর সিলেটের দক্ষিনাঞ্চলের এই জেলা সীমান্ত বর্ত্তী এলাকা হিসাবে মাদক ও চোরাকার বারিদের অভয়রান্য না হলেও আনাগুনা আছে বলা চলে। পৌর এলাকায় অবৈধ দখল মুক্তিতে পৌরসভা-পৌর মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান ইতিপূবেৃই কৃতিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন যানযট একটি জাতীয় সমস্যা হিসাবে এ জেলা ও তার বতিক্রম নয়। শহরকে যানযট মুক্ত এবং অবৈধ টমটম এর দৌরাত্ব থেকে রক্ষা করতে হলে ট্রাফিক সিস্টেম আধুনিক করা, সড়ক ও জনপথকে নিরাপদ করার জন্য মোবাইল কোর্ট ও পুলিশিং জোরদার এর বিকল্প নাই। লাইসেন্স বিহীন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছোকরা ও বে-আদব টমটম চালক তিন আসনের টমটমে ট্রাফিক আইন ভঙ্গঁকরে তিন দিগুনে ছয়, সাতজন যাত্রী নিয়ে দ্রুত গতিতে চালায়, নিয়মিত দূর্ঘটনা ঘটায়। টমটম চালক কর্তৃক জেলা সদরের সর্বজন শ্রদ্বেয় শিক্ষাবিদ প্রফেসর করুনাময় রায় এর একমাত্র পুত্র গৌতম রায় এবং সম্প্রতি তরুন আইনজীবী আলতাফুর রহমান সুমনের মাতাকে নির্মমভাবে হত্যা করায় শহরে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল, কিন্তু এখনও অবস্থার তেমন উন্নতি হয় নি। বরং দিনকেদিন অবৈধ টমটম চালকদের দৌরাত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৌরবাসি আশা করেন পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ পি.পি.এম.বার এর বলিষ্ট ও গতিশীল নেতৃত্বে দুষ্টের দমন্য শিষ্টের পালন হবে। জেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অধিকতর উন্নত হবে। এ জেলার একজন প্রবীন নাগরিক হিসাবে পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ পি.পি.এম.বার এর সাফল্য, সুস্থতা ও পারিবারিক কল্যান কামনা করে তাঁর গনমুখীও জনকল্যান মুলক সফল কাজের প্রতি রইল শর্তহীন সহ আগিতার আশ্বাস। ডি.এম.পি.কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলামকে সহযোগিতা করার সুযোগও অবকাশ নেই-তাঁর জন্য রইল অশেষ শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা।

[ লেখকঃ ষাটের দশকের সাংবাদিক। বীর মুক্তিযোদ্ধা। সিনিয়র আইনজীবী। সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব। কলামিষ্ট।]

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com