আদিবাসী দিবসে মৌলভীবাজারে ৯০ টি ক্ষুদ্রনৃজাতী গোষ্টির উন্নয়নে কাজ করছে সরকার—-উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি

August 10, 2016,

বিকুল চক্রবত্তী॥ সরকার আদিবাসীদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। সর্বশেষ বাজেটেও ক্ষুদ্রজাতিগোষ্টী অর্থাৎ যারা নিজেদের আদিবাসী বলেন তাদের জন্য বিশেষ বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। তাদের জীবনমান উন্নয়নে বর্তমান সরকার কাজ করছে। বিশ্ব আদিবাসী দিবসে মৌলভীবাজার জেলার ৯০টি ক্ষুদ্রজাতী গোষ্টীর উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন, জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি। উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদের বাসবভনে আদিবাসী দের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে এসব আদিবাসীদাবীদার অধিবাসীদের ক্ষুদ্রনৃজাতী গোষ্টি হিসেবে মুল্যায়ন করে তাদের জন্য প্রতন্ত এলাকায় বিদ্যালয় প্রতিষ্টা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের জন্য ললিতকলা একাডেমী স্থাপন, দূর্গম পাহারে বিদুৎ , পানির ব্যবসথা করা ও পাকা রাস্তার করে দেয়া হয়েছে। কিছু এলাকা বাকী রয়েছে যা প্রকৃয়াধিন। এ সময় তিনি বলেন, ক্ষুদ্রনৃজাতী গোষ্টির উপর তিনি গবেষনা করছেন। এর কারন হিসেবে তিনি জানান, এই জাতী গোষ্টির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য আমাদের দেশকে সমৃদ্ধ করেছে। বিশেষ করে তাদের বসবাসের এলাকাগুলোর পরিবেশ খুবই সুন্দর। যা পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে। আর এই জাতীগোষ্টির বিশাল একটি অংশ তার নির্বাচনী এলাকায় রয়েছে। তিনি জানান, সরকারীভাবে এখন পর্যন্ত ২৭ টি নৃ-গোষ্টিকে সংরক্ষন করা হয়েছে কিন্তু তার গবেষনায় শুধু মৌলভীবাজারে পাওয়া গেছে ৯০টি ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্টি। আর এর প্রত্যেকটি জাতী গোষ্টির ঐতিহ্য রক্ষায় সরকার বদ্ধ পরিকর। একই সাথে এই জাতী গোষ্টিকে সমৃদ্ধ ও সম্মানজন জনগোষ্টি হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে সরকার কাজ করছে। তাদের উৎপাদিত পন্য যাতে তারা সহজে বহন ও বিপনন করতে পারে সরকার সে দিকেও বিশেষ নজর দিচ্ছে।
এদিকে দিবসটিকে সামনে রেখে ৯ আগষ্ট মঙ্গলবার দুপুরে জেলার শ্রীমঙ্গল টি আইবি অডিটরিয়ামে নানা কর্মসূচীর আয়োজন করে সিলেট বিভাগ আদিবাসী ফোরাম ও সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক)। সনাক আহবায়ক সৈয়দ নেসার আহমদ এর সভাপতিত্বে আদিবাসীদের শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়ে সভায় বক্তব্যদেন আদিবাসী ফোরামের কেন্দীয়নেতা জিডিসন প্রধান সুচিয়াং, মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন সিংহ, সাংবাদিক বিকুল চক্রবর্ত্তী, পরিমল সিং বারাইক, শিক্ষক ধিরেন সিংহ, সুনিল মৃধা, বীর বল সিংহা, জয়া শর্ম্মা ও আশিক আহমদসহ বিভিন্ন জাতী গোষ্টীর অর্ধশতাধিক নেতা। আলোচনা সভা শেষে অডিটরিয়ামে আয়োজন করা হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এ ব্যপারে আদিবাসী নেতা ডিজিসন প্রধান সুচিয়াং বলেন, বর্তমান সরকার দেশের নৃতাত্তিক জনগোষ্টির উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও মৌলভীবাজারের পাহারে বসবাসকারী অর্ধশতাধিক খাসি পুঞ্জি ও গাঢ় অধিবাসীরা রয়েছেন এখনও নানা সমস্যায় জড়জড়িত। শিক্ষা চিকিৎসা, যোগাযোগ ও ভুমি সমস্যা প্রবল হলেও তাদের উৎপাদিত পণ্য রপ্তানী হচ্ছে ইউরোপ ও মধ্য প্রাচ্যে। যা ভুমিকা রাখছে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে।
গাঢ়, মনিপুরী, সাঁওতাল,উড়াং,হাজরা ও খাসিসহ মৌলভীবাজারে প্রায় ৯০টিরও অধিক জাতি প্রথার লক্ষাধিক নৃতাত্তিক জনগোষ্টির বসবাস। আর এই নৃতাত্তিক জনগোষ্টিরা বিগত বিশবছর ধরে নিজেদের সরকারী ভাবে আদিবাসী স্বীকৃতি দিয়ে তাদের জীবনমানের উন্নয়নসহ নিজস্ব ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি সংরক্ষনের দাবী জানিয়ে আসছেন। ইতিমধ্যে মনিপুরী সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি লালনের লক্ষ্যে কিছু কাজ হলেও উপেক্ষিত এ এলাকার পাহারে বসবাসকারী পান চাষি খাসি ও গাঢ় অধিবাসীরা। জঙ্গলে বসবাস কারী খাসিরা একদিকে যেমন আছেন ভুমি উচ্ছেদ আতংকে অন্যদিকে রয়েছেন রাস্তাঘাট, শিক্ষা চিকিৎসাসহ নিজেদের সংস্কৃতি হারানোর দুশ্চিন্তায়।
আর নিজেদের অধিকার প্রতিষ্টায় নিজ উদ্যোগেই প্রতিবছর বিশ্ব আদিবাসী দিবস পালন করে যাচ্ছেন বলে জানালেন, বৃহত্তর সিলেট আদিবাসী ফোরামের সভাপতি পিডিসন প্রধান সুচিয়াং।
এ আদিবাসী দিবসে শিক্ষার উন্নয়নের পাশাপাশি আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতিসহ তাদের জন্য নিজস্ব ভুমিকমিশন চালুর দাবী জেলার খাসি আদিবাসী সম্প্রদায়ের।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com