আমাদের ছিল সুন্দরবন, সুন্দর মন অথচ এখন ………. ?
সাদেক আহমেদ॥সিলেটে জন্ম সূত্রে বিভিন্ন সময়ে চা বাগান ও পাতাকুরির দেশ ছাড়িয়ে আমরা শুনতাম বাংলাদেশে কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকত স্বাস্থ্যকর স্থানের কথা এবং সুন্দর বনের সুন্দর সুন্দর গাছ ও পশু পাখি ও মধুর গল্প। সেই মিষ্টার কক্স নামের নাবিকের আবিষ্কার করা এশিয়া বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত দীর্ঘতম বালুকনা সমুদ্রের ঢেউ যখন গিয়ে প্রথম দেখি তখন মনে হচ্ছিল পশ্চিম পাশের বাংলাদেশের পলিমাটি ঘেরা সুন্দরবন কবে দেখতে পাবো। আমরা এই দুটি পর্যটন কেন্দ্র বিদেশিদের যেভাবে দেখাতে পারতাম দেশি বিদেশি হীন চক্রান্তে তা আমরা পারছিনা। আমি আমার দাঁড়াও পথিক তৃতয় খন্ড বইতে লিখেছিলাম যে অন্য দেশ পেরুর দূরে পাহাড়ের উপরে অনেক পাথরের দ্বারা প্রাচীন মাছুপাছু শহরের কথা। যা ইউনিস্কে তাদের গবেষনায় পৃথিবীর সপ্তাচার্যের তালিকায় নিয়েছিল। অনেকে পর্যটকরা আকৃষ্ট হয়ে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া স্বত্তেও এডভাঞ্চার ও আনন্দ এক করে জাম্পেজ মজা উপভোগ করে। তা লেখতে যে আমি যেহেতু আমি পথিক তাই অনেকে আমাকে সুন্দরবনের কি খবর প্রশ্ন করায় বইতে লিখেছিলাম যে মুহুর্তে হীন স্বার্থবাদী দেশি বিদেশি চক্রান্তকারীরা এখানে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ তাপ প্রকল্পের মাধ্যমে এখান থেকে সেন্দুইচ বানিয়ে খাবে তাতে আমি একা কি করব। যাই হোক এখন সুন্দরবন নিয়ে আমার মন কি বলে ছোট বাচ্চারা ক্লাস ফাইভে সুন্দরবন নিয়ে রচনা লিখতে যেয়ে আমার ভাতিজি ঐদিন আমাকে বলল, কি লিখবে। আমি তাকে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে সুন্দরবন যে ধ্বংশ হবে অন্যরা এখান থেকে মজা লুটবে পরবর্তীতে একথা গুলো লেখতে যেয়েও তাকে নিষেধ করলাম। পরবর্তীতে ভাবলাম যে, এই কথা গুলো লিখলে হয়তো তাকে মার্কই দেওয়া হবে না। আমি গত সপ্তাহে সিলেটের পশ্চিম দিকে লামাকাজিতে যাই একটা সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। ঐ লামাকাজিতে বলেছিলাম যে, সিলেটিরা শিক্ষাদীক্ষায় প্রশাসনে যে পিছিয়ে পড়ছে তাতে লামা পর্যায় থেকে উপরে উঠতে হলে, শিক্ষাদীক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। এতসব লন্ডনী বাড়ী-ঘর দিয়ে কি হবে ঐ বাড়ী ঘরে মানুষ নেই কেয়ার টেকার দেখা শুনা করে। পরবর্তীতে লন্ডনী নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশে সিলেটে আর আসবে না। তারা ব্রিটেনে মূল জনসূত্রের সাথে মিশে যাচ্ছে। সিলেটি ভাষায় লামা অর্থ নিচু রাস্তা। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট মরহুম জিয়াউর রহমান তার খাল কাটা কর্মসূচী হযরত শাহ জালাল (রঃ) এর মাজার জেয়ারতের মাধ্যমে এই লামাকাজির সুরমা নদী থেকে শুরু করেছিলেন। আজ বাংলাদেশে বহু নদী ভরাট হয়ে গেছে। এই লামাকাজির পাশে সাবেক নৌ বাহিনীর প্রধান মরহুম এম,এ খান বড় জনদরদী নেতা। তিনি যে সুরমা নদীর উপর ছাতক সুনামগঞ্জে সেতু করে দিয়েছিলেন তার নামে ঐ ব্রীজটির নামকরণ করা হয়। ঐ জায়গায় উত্তর পার্শ্বে আসামের চেরাপুঞ্জি থেকে একটা বড় রাস্তা হাইওয়ে সরাসরি এদিক দিয়ে এসে ঢাকা রাস্তার সাথে মিলিত হওয়ার একটা পরিকল্পনা বহু আগের থেকেই ছিল। তবে সবচেয়ে যে বড় ইতিহাস আমি শুনেছি তা হলো হযরত শাহ জালাল (রঃ) এর আগমনের পূর্বে দিল্লির বাদশাহ সেকান্দার শাহা ঐ জায়গায় সিলেটের পবিত্র মাটির টানে এসেছিলেন। তার দুই ছেলে শাহ গাজী ও কালু শেখ, দুজনই ছিলেন ওলি। পরবর্তীতে দুজনই সুন্দরবনের দিকে চলে যান এবং তাদের মাজার সুন্দরবনে রয়েছে। আজ কিসের জোরে কারা কলকাঠি নাড়ছে বাংলাদেশের সুন্দরবন ধ্বংশ করতে একদিন তার জবাব দিতে হবে এই জাতির কাছে। পূর্বে বলেছিলাম খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে। এখন ধ্বংশ হয়েও ঐ পাড়ে কোন এক ব্যাংকে বাংলাদেশের মানুষ সুদে আসলে খাজনা দিতে হবে। কি তাজ্জব কথা। আমি কুয়াকাটায় গেলে পশ্চিম দিকে ঝাউবন পেরিয়ে দেখতে পাই কিছু অংশ নাম ফাতরার বন। জনগনের সাথে ফাতরামী, ফাইজলামির একটা সীমা থাকা উচিৎ। পশ্চিম বঙ্গের সিঙ্গুরে টাটা প্রজেক্ট মূখ্যমন্ত্রী মমতা বেনার্জির কঠুরতার করণে করতে না পেরে এখন কৃষকরা তাদের জমি ফিরৎ পাচ্ছে। আমাদের দেশে ওলি আউলিয়াগন ও জিন্দাপীরগণ দেশকে দেখাশুনা করেন মহান আল্লাহর দরবারে তারা সেভাবে সব খবরাখবর পৌছিয়ে দেন। সুন্দরবনেও দুই ওলি আছেন। এখন আমাদের কি হবে। চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশে সফরের সময় তাকে যে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সব দেশ প্রেমিক শক্তি তাকে যেভাবে নিরাপত্তা দিয়েছিল আজ সুন্দরবনেও যদি ঐরূপ নিরাপত্তা রাখা হয়, তবে দেশ বাঁচবে। সুন্দরবন নিয়ে এরপর কি রচনা ভবিষ্যত প্রজন্ম লিখবে জানিনা। আমি আর কয়দিন বাঁচবো দেখে যেতে পারবো না। আল্লাহ দেশের মঙ্গল করুক।
মন্তব্য করুন