আলোচিত ভ্রুন নষ্ট মামলায় লন্ডনী বধূসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা : গ্রেফতার-১

October 26, 2016,

হোসাইন আহমদ॥ মাতৃগর্ভে আলোচিত ভ্রুন হত্যা মামলার এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ। মাতৃগর্ভে ভ্রুন নষ্ট করার অপরাধে শশুর তার পুত্রবধু সহ ৯ জনকে আসামী করে মামলা করেন।

পুলিশ জানায় মাতৃগর্ভে ভ্রুন নষ্ট করার অপরাধে ২০১৩ সালের ৩০ জুন সিলেট চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লন্ডন প্রবাসী মোঃ হাসানুজ্জামান হোসাইন এর পিতা মোঃ আরব আলী বাদী হয়ে মোট ৯ জনকে আসামী করে মামলা দায়েন করেন। আসামীরা হলেন আমিনা ইয়াছমিন খাঁন (পাসপোর্ট নং ৩০৮৬৪২৩৭৪), মোজাহিদ খাঁন (পাসপোর্ট নং ৩০৭৬৫৬৯৯৬), রোকেয়া বেগম, এনামুল হক, নজরুল ইসলাম, নিকুঞ্জ বিহারি দাস, ডা: রেজাউল ইসলাম হেভেন, ডা: মুন্সি মিজানুর রহমান ও স্বপ্না পাল। পরে পুলিশি তদন্তে স্বপ্না পালকে ঐ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং আমিনা ইয়াছমিন খান, মোজাহিদ খান, রোকেয়া বেগম, এনামুল হক, নজরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সিলেট চীফ জ্যুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আসামি ডা: নিকুঞ্জ বিহারী দাস, ডা: রেজাউল ইসলাম, ডা: মিজানুর রহমান জামিনে রয়েছেন।

মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ গত ১৯ অক্টোবর রাত ৮ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মৌলভীবাজার শহরের বাস ষ্ট্যান্ড এলাকা থেকে মামলায় আসামি লন্ডন প্রবাসী বধূর খালু এনামুল হককে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার মূলহুতা শিশুর মা আসামী আমিনা ইয়াসমিন খাঁন, শিশুর নানা আসামী মুজাহিদ খাঁন, নানী রোকেয়া বেগম ও নজরুল ইসলাম লন্ডনে থাকায় গ্রেফতার করা যায়নি।

অনুসন্ধানে জানাযায়, মৌলভীবাজার শহরের রঘুনন্দনপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ হাসানুজ্জামান হোসাইন এর সাথে ২০১০ সালে ৮ নভেম্বর সিলেটর দক্ষিণ সুরমা উপজেলার জফরাবাদ ইউনিয়নের মোঃ মোজাহিদ খানের মেয়ে আমিনা ইয়াছমিন খাঁন এর বিবাহ লন্ডনে আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্পন্ন হয়। দেড় বছরের দাম্পত্য জীবনে আমিনা ইয়াছমিন গর্ভ ধারন করেন। গর্ভাবস্থায় আমিনা ইয়াছমিন তার পিতা-মাতাকে নিয়ে স্বামীর অজান্তে ১৪ সেপ্টেম্বর ১১ ইং তারিখে দেশে ভ্রমনে এলে পারিবারিক জোগসাজেসে গর্ভে থাকা ২৭ সপ্তাহের অপূর্ণ শিশুকে ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর সিলেট ডেল্টা স্পেশালাইজড হসপিটালে অস্বাভাবিক ভাবে ভূমিষ্ট করান। পরে ভুমিষ্ট অপরিপূর্ণ নবজাতককে অজ্ঞাত স্থানে পুতে রাখা হয়। যার হদীস এখনও পাওয়া যায়নি।

পরে ১১ অক্টোবর ২০১১ইং তারিখে আমিনা ও তার মা রোকেয়া এবং ২০ অক্টোবর ২০১১ইং তারিখে তার বাবা মোঃ মুজাহিদ খান গোপনে লন্ডন চলে যান। সেখানে গিয়ে মোঃ হাসানুজ্জামান হোসাইনকে জানানো হয় গর্ভে থাকা সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে। এ সংবাদটি তার সন্দেহ হলে তিনি লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে লিখিত ভাবে বিষয়টি অবগত করেন ও সে দেশের হাইকোর্টে তার স্ত্রী ও তার শশুর-শাশুরির উপর একটি ভ্রুণ হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং টই১২চ০০২০১)। মামলার সুষ্ট তদন্তের স্বার্থে সিলেট পুলিশ সুপারের নিকট তিনি গত ১৭ জুলাই ২০১২ইং তারিখে আবেদন করেন।

এ আবেদন থেকে আরো জানাযায়, বিগত ২ আগস্ট ২০১১ইং তারিখে লন্ডনস্থ ঞযব যরষষরহমফড়হ যড়ংঢ়রঃধষ পরীক্ষা নিরিক্ষা করে দেখা যায় আমিনা ২০ সপ্তাহের অন্তসত্ত্বা। ঐ সংবাদ শুনে আমিনার বাবা-মা তাকে নানা কু-পরামর্শ দেন এবং মানুষিক ভাবে বিপর্যস্ত করে গর্ভ নষ্ট করতে চাপ সৃষ্টি করেন। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১১ ইং তারিখে আমিনা মা খুব অসুস্থ্য সংবাদ আসলে তিনি থাকে দেখতে যান। তার বাবার বাসায় যাওয়ার পর থেকে আমিনা নিখোঁজ হন। পুলিশ অনেক খোঁজাখুজি করেও থাকে পায়নি। পরে তিনি একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ১১গওঝ০৩১২৩১)।

এ বিষয়ে মামলার বাদী মোঃ আরব আলী বলেন, দেশে থাকা আসামীরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন।

 

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com