শ্রীমঙ্গলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনের দাবিতে ইউএনও ও পৌর প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি জমা
এহসান বিন মুজাহির : শ্রীমঙ্গলে ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সদস্যদের অনুমোদনহীন অবৈধভাবে সংশোধিত গঠনতন্ত্র বাতিল করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমিতির গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রদানের দাবিতে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক কার্যালয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সদস্যদের পক্ষে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো: আবু তালেব ও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রশাসক মোছা: সাহানা আক্তার এর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য (৩০৭) মোহাম্মদ শাহিন আহমেদ।
স্মারকলিপিতে সাধারণ সদস্যরা উল্লেখ করেন যে, আমরা শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সদস্যবৃন্দ বিগত ৪ বছর ৩ মাস যাবৎ নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচন করার সুযোগ হতে বঞ্চিত হচ্ছি। বিভিন্ন টালবাহানায় বছরের পর বছর নির্বাচন আয়োজনে গড়িমসি করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিগণ।
সর্বশেষ ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। উক্ত সভায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের ব্যপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। উক্ত সভায় সিদ্ধান্ত হয় মতামত অনুযায়ী নতুন নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ সমিতির গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রয়োজন অনুযায়ী সমিতির গঠনতন্ত্র সংশোধন করবেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় সমিতির সদস্যদের বাদ দিয়ে এবং সমিতির গঠনতন্ত্রে উল্লেখিত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে সমিতির গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করা হয়েছে। এমনকি অদ্যাবধি সাধারণ সদস্যদের কাছে এবিষয়টি গোপন রাখা হয়েছে।
২০১০ সালের ২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় অনুমোদিত গঠনতন্ত্রে সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে কিভাবে এবং কোন প্রক্রিয়ায় সমিতির গঠনতন্ত্র সংশোধন/সংযোজন/বিয়োজন করতে হবে। সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী (১) প্রথমে সাধারণ সভায় গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের অনুমতি নিতে হবে সাধারণ সদস্যদের কাছ থেকে (২) গঠনতন্ত্র সংশোধনী কমিটি গঠন করতে হবে (৩) সংশোধনী কমিটি খসড়া গঠনতন্ত্র তৈরি করে সমিতির কার্যকরী কমিটিতে উপস্থাপন করবেন (৪) গঠনতন্ত্র সংশোধনী যাচাই-বাছাই করে কার্যকরী কমিটি সাধারণ সভা আহবান করবেন (৫) সাধারণ সভায় সমিতির সদস্যরা অনুমোদন দিলে তা চূড়ান্ত সংশোধিত গঠনতন্ত্র হিসাবে কার্যকর হবে।
২০১৭ সালের ২৪ মে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিন বছর মেয়াদি কমিটি গঠিত হয়, যা এখনও পর্যন্ত বহাল বলে কমিটির সদস্যরা দাবি করছেন। বিগত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের আশির্বাদপুষ্ট কমিটি একটি সুসংগঠিত ও শক্তিশালী সংগঠনকে অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছেন এবং বছরের পর বছর বিনা নির্বাচনে সমিতির সাধারণ সদস্যদের মতামত অগ্রাহ্য করে চলেছেন। ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সদস্যরা মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোব্ধ রয়েছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আপনি হস্তক্ষেপ না করলে যেকোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস মহোদয় একটি বক্তব্য প্রদান করেছেন। প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ‘সংস্কার’ করার কথা বলেছেন। কাজেই আমরা উপজেলা থেকে সংস্কার শুরু করতে চাই। এজন্য প্রথমে দরকার আমাদের উপজেলার ব্যবসায়ী সমিতির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমিতির নির্বাচণের ব্যবস্থা করা।
আমরা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সদ্যরা শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতিকে আরও গতিশীল করতে অনতিবিলম্বে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। একই সাথে অবৈধ অনুমোদনহীন গোপন গঠনতন্ত্র বাতিল করে ২০১০ সালের সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠান করার দাবি জানাই।
ব্যবসায়ীরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সাধারণ সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে ব্যবসায়ী নেতা নির্বাচণের সুযোগ করে দেয়ার অনুরোধ করেন।
স্মারকলিপি জমা দেয়ার সময় শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সদস্যদের মধ্যে ফখরুল মিয়া, রিপন মিয়া, কামরুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন