ইডেনের ঘটনায় ছাত্রলীগ বিব্রত
হারিস মোহাম্মদ॥ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান বলেছেন, অনেক সময় দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারি ও ঝগড়া হয়। একটি হল বা ক্যাম্পাসে অনেক শিক্ষার্থী থাকে। সেখানে তাদের অনেক পার্সোনাল সমস্যা থাকতে পারে। কেউ যদি ব্যক্তিস্বার্থে সংগঠনকে বিতর্কিত করতে চায় সেটা ঠিক নয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকবে। ছাত্রলীগের মূলনীতি শিক্ষা- শান্তি- প্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করবে। ইডেন কলেজে অনেকে তাদের পার্সোনাল দ্বন্দ্বকে সংগঠনের উপর বর্তিয়ে সংগঠনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে আমরা এমনটাই পেয়েছি। তবে ইডেন কলেজের ঘটনায় আমরা বিব্রত। ইতিমধ্যে কলেজের কমিটি স্থগিত ও কয়েক জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।’
তিনি শনিবার ১ অক্টোবর রাতে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা সদরের জাঙ্গিরাই এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মুমিত চত্বরে একটি রেস্তোরাঁয় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। এর আগে তিনি উপজেলার পূর্ব গোয়ালবাড়ী গ্রামে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের বাড়িতে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
অতীতের চেয়ে সংগঠনের বর্তমান অবস্থা কেমন জানতে চাইলে আল নাহিয়ান খান বলেন, তাঁরা পূর্ণ দায়িত্ব পাওয়ার পর দেশে করোনার সংক্রমণ দেখা দেয়। এ সময়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম ব্যাহত হলেও মানবিক কার্যক্রমে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যুক্ত ছিলেন। সংগঠনের অতীত গৌরব-ঐতিহ্যকে তাঁরা ধরে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত সংগঠন ভালো চলছে বলে দাবি করেন।
ছাত্রলীগের স্থায়ী বহিষ্কৃত নেতাকে আর দলে নেওয়ার আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, কোন নেতার বিরুদ্ধে অন্যায় হলে কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদ বসে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
জুড়ীতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক নেতাকে দেওয়া সংবর্ধনায় সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কৃত এক নেতার উপস্থিতি নিয়ে ছাত্রলীগের উপজেলা ও তৈয়বুন্নেছা খানম কলেজ কমিটি আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে চায়। এতে আপত্তি জানানোয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাদের তর্কাতর্কি হয়। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে আল নাহিয়ান খান বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা এ ব্যাপারে নালিশ করেছেন। সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঢাকার ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে ক্যাম্পাসে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ সেপ্টেম্বর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে প্রাথমিকভাবে পাওয়া প্রমাণের ভিত্তিতে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ১৬ জন নেতা-কর্মীকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।
মন্তব্য করুন