ইসলামের দৃষ্টিতে‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’
এহসান বিন মুজাহির॥ নতুন বছরের আগমন গুরুত্বপূর্ণ। বছরের সূচনালগ্নেই নতুন বছরের পুরো পরিকল্পনা গ্রহণ করা সচেতন ব্যক্তি ও মুমিনের ঈমানি দায়িত্ব। অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও নতুন বছরকে বরণের প্রবণতা ব্যাপক। তবে একজন মুসলিমের জন্য ইংরেজি নববর্ষ পালন কল্যাণকর নয়।
খ্রিস্টানদের অনুকরণে নতুন বছর বরণের পদ্ধতি ও ধরন মুসলমানদের সভ্যতা, সংস্কৃতির অংশ নয়; বরং তা অপসংস্কৃতি। ইংরেজি বছরের শুরুতেই ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ পালন করাকে ইসলাম সমর্থন করে না। এ রাতে বর্ষবরণের নামে যেসব কর্মকাণ্ডে মেতে উঠে তরুণেরা তা ইসলামের দৃষ্টিতে গুরুতর অপরাধ এবং শরিয়তের সীমালঙ্ঘন।
বিজাতীয় সংস্কৃতি উদযাপন থেকে বিরত থাকতে কোরআন ও হাদিসে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া (ইসলামি রীতিনীতি) অন্য কোনো ধর্মের অনুসরণ করবে, কখনো তার সেই আমল গ্রহণ করা হবে না। আর পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুরা আলে ইমরান : ৮৫)।
নবীজী (সা.) এরশাদ করেন, ‘যে অন্য জাতির সঙ্গে আচার-আচরণে, কৃষ্টি-কালচারে সামঞ্জস্য গ্রহণ করবে সে তাদের দলভুক্ত বিবেচিত হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ : ২৭৩২)। আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক জাতির জন্য আমি একটি নির্দিষ্ট বিধান এবং সুস্পষ্ট পথ নির্ধারণ করেছি’। (সুরা মায়িদা : ৪৮)। রাসুল (সা. ) বলেন, ‘যদি তুমি খারাপ কাজ করো, আর তোমার খারাপ লাগে, ভালো কাজ করে ভালো লাগে তাহলে তুমি মুমিন। কিন্তু যদি খারাপ কাজ করে ভালো এবং ভালো কাজ করে খারাপ লাগে তাহলে তুমি মুমিন হতে পার না’। (মুসলিম : ১৯২৭)।
একজন ঈমানদার নর-নারীর প্রতিটি দিন-রাত উৎসব ও আনন্দের। বছরে গুটিকয়েক দিন নয়; বরং প্রতিটি দিন আনন্দের। প্রতিটি দিন-ক্ষণ আমাদের জন্য মূল্যবান। আমাদের দায়িত্ব হলো এই রাতে অনুশোচনা ও আত্মসমালোচনা করে আগামী বছরের কল্যাণ কামনা করা। সিজদাবনত হয়ে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া। তওবা, ইস্তেগফার, দোয়া- দুরুদ, নফল নামাজসহ ভালো কাজ করা। আল্লাহর প্রিয় হওয়ার অফুরন্ত চেষ্টা করা। আমাদের নতুন বছর শুরু হোক তওবার মাধ্যমে। আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন।
লেখক : কোষাধ্যক্ষ, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাব, প্রিন্সিপাল শ্রীমঙ্গল আইডিয়াল স্কুল মৌলভীবাজার।
মন্তব্য করুন