উজানে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌলভীবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি : ত্রাণের অপেক্ষায় মানুষ
এস এম উমেদ আলী॥ উজানে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া,জুড়ী ও বড়লেখায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে রাজনগর উপজেলার মনু প্রকল্প এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কুশিয়ারা নদীর পানি কিছুটা কমলেও শেরপুরে ১৭ সেন্টিমিটার বিপদ সীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হলে মৌলভীবাজার জেলার সার্বিক পরিস্থিতির পুরোপুরি উন্নতি হবে। গত দু’দিন উজানে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখার বন্যা কবলিত এলাকায় ৫-৬ইঞ্চি পানি কমেছে। তবে রাজনগর উপজেলায় বন্যা অপরিবর্তিত রয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, আশ্রয় কেন্দ্র সহ বন্যা আক্রান্ত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ অভ্যাহত হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলায় তৃতীয় দফা বন্যায় জেলা সদরের সাথে বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্থরের ১৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ২৯টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে প্রতিদিন আক্রান্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বন্যা দূর্গত এলাকায় সরকারের তরফে এ পর্যন্ত যে ত্রাণ সহায়তা আসছে তা যেমন পর্যাপ্ত নয়। তেমনি বরাদ্দ গুলোও সঠিক ভাবে দূর্গতদের হাতে না পৌঁছারও অভিযোগ উঠছে। এ কারনে বন্যা দূর্গত বিভিন্ন এলাকায় তোপের মুখে পড়ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। ঘটছে এমন নানা অনভিপ্রেত ঘটনাও। আর নানা কারনে অন্যবারের মত এবার রাজনৈতিক দলগুলোও বন্যা দূর্গতদের পাশে দাঁড়াচ্ছে কম। ব্যক্তি,সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের ত্রাণ সহায়তার উদ্দ্যোগও নামমাত্র। দূর্দিনে বন্যা আক্রান্ত এলাকার মানুষগুলো চরম অসহায়। তাই এখন ত্রাণই তাদের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা ত্রাণের জন্য প্রতীক্ষা থাকেন তারা। ত্রাণ পেলে আহার, না পেলে অভূক্ত থাকছেন তারা। ২০০৪ সালের বন্যার পর এখন এমন দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কবলে পড়েছেন হাকালুকি হাওর তীরের মানুষ। তবে এবারকার বন্যার মত এতো দূর্ভোগ বা ক্ষতির শিকার হননি হাওর পাড়ের লোকজন।
এদিকে বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আখাইলকুড়া ইউনিয়নে প্রশাসনের উদ্যোগে বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে ২০ কেজি করে গম বিতরণ করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমির হোসেন, জেলা প্রশাসক মোঃ তোফায়েল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল আলম খান, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
পরে জেলা প্রশাসক স্থানীয় তহবিল থেকে বন্যার্ত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেন।
মন্তব্য করুন