উত্তরভাগ চা বাগান কর্তৃক হলদিগুল সড়ক কাটার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ চা বাগান কর্তৃক শত বছরের কবরস্থানসহ পাশের সড়ক কেটে নেবার অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় রাজনগর সহকারি জজ আদালত, মৌলভীবাজার-এ মামলা দায়েরসহ ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসী।
ঘটনাটি উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের চা বাগান বেষ্টিত হলদিগুল গ্রামের। মামলা সূত্র (মোকদ্দমা নং ১৯/২০২৩ ইং,(সত্ব) ও ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ সূত্র থেকে জানা যায়, উপজেলার উত্তরভাগ টি,সি মৌজার জেএলনং ২৩,এসএ খতিয়ান নং-১, এসএ দাগ নং ১,আরএস খতিয়ান নং-১ ও আর এস দাগ নং-১ অন্তর্ভুক্ত এলাকার হলদিগুল গ্রাম থেকে সিংহরগুল এলাকাগামী সড়কটি উত্তরভাগ চা বাগান ঘেঁষে চলে গেছে।
সম্প্রতি বাগান কর্তৃপক্ষ ওই আধা পাঁকা সড়কটিসহ কবরস্থান কেটে অন্যত্র রাস্থাটি সরিয়ে ফেলায় ওই গ্রামের মতছির আলী, এ.কে শাহজাহান, রুজেল আহমদ, আব্দুল মতিন গংরা উত্তরভাগ টি এন্ড ট্রেডিং কোম্পানীর ম্যানাজার, পলিমার এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড’র ব্যবস্থাপক, জেলা প্রশাসক, মৌলভীবাজার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), মৌলভীবাজার ও সহকারি কমিশনার (ভূমি)-কে বিবাদী করে আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করেন।
মোকদ্দমা’র আরজি-তে বলা হয়, ২৬ শতক জমিতে শত বছরের কবরস্থানসহ গ্রামের ওই সড়কটিও ওই স্থান দিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। ওই জমি কেটে ফেলায় মুলমানদেও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে।
এদিকে গেল ২৪ শে জানয়ারী উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা, রাজনগর’র কাছে একই বিষয় নিয়ে পৃথক আরেকটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এ.কে এম শাহজাহান, রুজেল আহমদ, ববিরুল ইসলামসহ ১৫ জনের স্বাক্ষরিত আরও অনেকে। অভিযোগে বলা হয়, এশিয়ান হাইওয়ে থেকে সড়কটি সিংহরগুল গিয়ে লেগেছে।
সুন্দর ওই সড়কটি উত্তরভাগ চা বাগান কর্তৃপক্ষ কেটে ওখানে থাকা পাইপ ও কালবার্ট সরিয়ে নিয়েছে। এতে পূর্বপরুষদের কবর থাকায় গ্রামবাসীগণ ভিষণ উদ্বীগ্ন হয়েছেন।
এদিকে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, হলগিগুল গ্রামের ওই সড়কটি উত্তরভাগ চা বাগান ঘেঁেষ সিংহরগুল গিয়ে পৌছে গেছে। টিলা বেষ্টিত ওই বাগান’র পাশ দিয়ে যাওয়া সড়কটি কতেক যায়গা কেটে অন্যত্র নতুনভাবে সংস্কার করা হয়েছে। স্থানীয়রা যেখানে কবরস্থানের কথা বলেছেন, সেই কবরস্থান ভরাট করে চা বাগানের উপযোগী করা হয়েছে।
স্থানীয় হলদিগুল গ্রামের রুজেল আহমদ ও খালেদ আহমদ জানান, তাদের ওই সড়কটি উত্তরভাগ বাগান কর্তৃপক্ষ কেটে নেওয়ায় তারা বাকরুদ্ধ হয়েছেন। বিশেষ করে কবরস্থানের জমি কেটে নেয়াতে বাপ-দাদার স্মৃতিতে আঘাত লেগেছে।
উত্তরভাগ চা বাগান ব্যবস্থাপক লোকমান চৌধুরী সড়ক কেটে নেবার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, আমরা ওই সড়কটি কাটিনি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জনগণের সুবিধার জন্য এটা করেছেন। আমাদের কি ঠেকা পড়েছে এটি কাটার। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, যারা আমাদের বিরোদ্ধে কথা বলছেন তারা স্বার্থলোভী জনসাধারণ।
এ ব্যাপারে স্থানীয় উত্তরভাগ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান দিগেন্দ্র সরকার চঞ্চল ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তানজিদা সুলতানা’র মুঠোফোনে একাধিবার ফোন দিলে তারা রিসিভ করেননি।
মন্তব্য করুন