“উপমহাদেশের এক প্রখ্যাত নবাব পরিবারের গৌরবোজ্জল উত্তরাধিকারঃ নবাব আলী আব্বাছ খাঁনঃ নবাবহয়েও নবাবী দেখান নিঃ একসহজ সরল সাদা মনের মানুষ ॥ ”
মুজিবুর রহমান মুজিব॥ আধুনিক ইরান-প্রাচীন পারস্য প্রাচীন সভ্যতার তীর্থ ভূমি ছিল। পারস্য সভ্যতা পারশিয়ান সিভিলাইজেশন হিসাবে খ্যাত। মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশও বিবর্তনের ইতিহাসে পারস্য সভ্যতার অবদান অপরিসিম। শৌর্য্য-েবীর্জে যেমনি পারস্য স¤্রাটগণ ছিলেন মহাশক্তিশালীও ক্ষমতাধর তেমনি শিক্ষা, জ্ঞান, বিজ্ঞান, কাব্য, সাহিত্য ভাষাও সংস্কৃতিতে পারশীয়ানদের প্রভাব ছিল বিশ্বব্যাপী। প্রাচীন পারস্যের রাজ ভাষা ছিল ফার্সি। ফার্সি তখন বিশ্বব্যাপী সম্বৃদ্ধ, শক্তিশালীও লোক প্রিয় ভাষা।
মহা কবি আবুল কাসেম ফের দৌসির মহাকাব্য শাহনামা বিশ্বকাব্য সাহিত্যের এক খানা ক্লাসিক গ্রন্থ। মধ্য যুগে মুঘল ভারতের রাজ ভাষাও ছিল ফার্সি। প্রাচীন ভারত বর্ষকে বিশ্ববিখ্যাত বৃটিশ ইতিহাস বিদ ভিনসেন্ট স্মিথ (ঠরহংবহঃ ঝসরঃয) যথার্যভাবেই বিশ্বের নৃতাত্বিক যাদুশালা বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী প্রতিভা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রাচীন ভারতের ইতিহাস ঐতিহ্য প্রসঙ্গেঁ বলেছেন-
“হেথাআর্য্য, হেথা অনার্য্য,
হেথা দ্রাবিঢ়, চীন
শকহুন দল পাঠান মুঘল
একদেহে হল লীন।”
এহেন ঐতিহ্যবাহী মোঘল ভারতে পারস্য রাজ বংশের এক রাজ প্রতিনিধি সকি সালামত এর মুঘল ভারতে আগমন। মুঘলদের সঙ্গেঁ পারস্য স¤্রাটদের সখ্যতাও সু-সম্পর্ক প্রাচীন কাল থেকেই দ্বিতিয় মুঘল স¤্রাট নাসিরুদ্দীন মোহাম্মদ হুমায়ূন শাসারামের সামান্য যায়গীরদার পাঠান শেরখানের সঙ্গেঁ পরপর দুটি যুদ্ধে হেরে শিশু পুত্র আকবরকে ভারত বর্ষে ফেলেই ইরানে পারিয়ে যান। দেড় যুগ পারস্য স¤্রাাট শাহ তামাম এর আশ্রয়ে ছিলেন হতভাগ্য মুঘল স¤্রাট হুমায়ূন। পাঠান শের খানের মৃত্যুর পর পারস্য ্রাজের সাহায্য সহযোগিতায় পিতৃরাজ্য উদ্ধার করে ছিলেন মুঘল স¤্রাট হুমায়ুন। পারস্য রাজ বংশের প্রতিনিধি সাকি সালামত ভারতের রাজধানী দিল্লী এলে দিল্লীর মুঘলস¤্রাট কতৃক সম্ভধিত ও সম্পানিত হন। সুফি, পন্ডিত ও দার্শনিক সকি সালামত সেসময়কার রাজনীতি অনুযায়ী কেলকাতা, সিলেট, পৃথিমপাশা বিপুল পরিমাণ ভূূ-সম্পত্তি জায়গীর প্রাপ্ত হন। বিশাল জমিদারিও ক্রয় করেন। দিল্লীর স¤্রাটের নিকট থেকে নবাবি সনদ প্রাপ্ত হয়ে দক্ষিন শ্রীহট্টের পৃথিম পাশায় বসতি স্থাপন করেন ইরান রাজ বংশী সকি সালামত।
সেকাল থেকে এ কাল পর্যন্ত সামন্ত যুগের শাসক সম্প্রদায় এর মধ্যে দুই শ্রেণীর শাসক লক্ষ করা যায়। এক গণমুখী-প্রজা বৎসল শাসক। এরা দেশও মানব প্রেমিক। সামন্ত যুগে রাজনৈতিক দল ও নির্বাচনী প্রথা না থাকলেও স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়েই এসব শাসক গণ জনকাল্যানে জনহিত কর কাজ করতেন। সুপেয় পানীয় জলের জন্য পুকুর দিঘি খনন করে দিতেন, মানব সম্পদ ও শিক্ষা উন্নয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতেন। স্বাস্থ্য সেবার জন্য গ্রামাঞ্চলে হাসপাতাল ডিসপেনসারি স্থাপন করে দিতেন।
খাজনা আদায়ের জন্য প্রজা সাধারনকে ঝুলুম নির্যাতন করতেন না। এক কথায় এরা ছিলেন গণমুখীও প্রজা বৎসল নৃপতি। অপর পক্ষে আরেক ধরনের জমিদার শাসক ছিরেন অত্যাচারি, গণবিরোধী, লোভী স্বার্থপর, চরিত্রহীন ও মদ্যপ্য। এরা প্রজা সাধারনকে ঝুলুম নির্যাতন করে খাজনা আদায় করতেন, কোলকাতায় বাঈজী বাড়ীতে গানবাজনা, সুরাপান ও ভোগবিলাসে বিলাসী জীবন কাটাতেন। সকি সাকিলামত ও তার উত্তরাধিকারীগণ প্রথমোক্ত শ্রেণীভূক্ত জনদরদি ও গণমুখী সামন্ত শাসক ও আসাম অঞ্চলের বিখ্যাত ভূ-স্বামী-জনদরদি জমিদার ছিলেন। পৃথিম পাশার নবাব সাহেবদের কোলকাতা, পাটনা, মুর্শিদাবাদ, ঢাকা, সিলেট, আসামে বিপুল পরিমাণ ভূ-সম্পত্তি, জমিদারি, চা-বাগান ছিল। শিক্ষা ও মানব সম্পদ উন্নয়নে পৃথিম পাশার নবাব সাহেবদের ঐতিহাসিক ভূমিকা ইতিহাসের অংশ। সিলেটের আলী আমজাদের ঘড়ি, মৌলভীবাজার জেলা সদরের আলী আমজাদ সরকারি গালস্ হাই স্কুল, পৃথিমপাশা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ইত্যাদি পৃথিম পাশার নবাব সাহেবদের অর্থায়ন ও আন্তরিকতার ফলও ফসল।
সেকাল তেকে এ কাল পর্যন্ত পৃথিম পাশার নবাব সাহেব গণ জনদরদি ও গণ মুখী। পৃথিম পাশার নবাব সাহেবান গণ উচ্চ বংশীয়, সম্ভান্ত, শিক্ষিত ও বিত্তবান হলেও গণ বিচ্ছিন্ন ও জনবিরোধী ছিলেন না, বরং তারা ছিলেন গণমুখী ও জনদরদি। ১৮৫৭ সালে যখন ভারত বর্ষে রাজনীতি ও গণনীতি ছিল না তখন ও পৃথিম পাশার নবাব সাহেবগণ ছিলেন স্বদেশ প্রেম ও স্বাদেশিকতায় উদ্ভাদ্ধু। ঐ সালে সিপাহী বিদ্রোহ নামে খ্যাত সর্ব ভারত ব্যাপী বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের সমর্থক ছিলেন পৃথিম পাশার নবাব সাহেবগণ। স্বাধীনতা সংগ্রামী সুবাদার রজব আলী চট্রগ্রাম থেকে একদল বিদ্রোহী সিপাহী নিয়ে ভারতের বৃটিশ সরকারের সঙ্গেঁ সম্পর্কে ছিন্ন করতঃ আসাম সিলেট যাত্রাপথে পৃথিম পাশায় আশ্রয় ও বিশ্রাম নিয়ে ছিলেন। স্বাধীন ভারত প্রেমিক পৃথিম পাশার নবাব সাহেবানগণ বিদ্রোহী সিপাহীগণকে আশ্রয় প্রদান করতঃ রসদ ও অর্থ দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করেছিলেন। জনপ্রতিনিধিত্ব মন্ত্রীত ও নেতৃত্ব পৃথিম পাশার নবাব সাহেবদের জন্য নূতন নয়, তারা অদ্য চৌধুরী, অদ্য নবাব নন। নয়া ভাল মানুষ কিংবা-চিংড়ির পুত মাশুল নহেন, তাঁরা সাড়ে তিন দিনের যোগী হয়ে ভাতকে অন্ন বলেন না, কিংবা তাদের কারো আমি কি হনুরে ভাব নেই।
আমাদের প্রজন্মের অনেকের জন্মের পূর্বে সেই বৃটিশ ভারতে আসাম প্রাদেশি সরকারে আসাম বাংলার বিখ্যাত রাজনীতিবিদ স্যার সৈয়দ সাদ উল্লাহর মন্ত্রী সভায় কৃষি মন্ত্রী ছিরেন আধুনিক পৃথিম পাশার নবাব আলী আব্বাছ খান এডভোকেট এর পূর্ব পুরুষ নবাব আলী হায়দার কান এবং আসামের এম.এল.এ ছিরেন নবাব আলী আসগর খাঁন। পদ পদবী প্রাপ্তি ও নেতৃত্ব প্রদানে পৃথিম পাশার নবাব সাহেবান গণকে সকাল সন্ধ্যা দলবদল করতে হয়নি, আজ ধানছড়া, কাল ফুটবল, শেষে কুলা-মুলার পিছন ছুটে পরের নৌকায় সওয়ার হতে হয়নি, মনোনয়ন ও পদ বানিজ্যের বদনামও অভিযোগে অভিযুক্ত হতে হয় নি। বরং পদ পদবী তাদের পিছনে ছুটেছে। সত্তোর সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসাবে কুলাউড়ার এম.পি.এ নির্বাচিত হয়ে ছিলেন নবাব আলী আব্বাছ খানের চাচা নওয়াব আলী ছরোয়ার খান চুন্নু নবাব। চুন্নু নবাব সাহেব মুক্তি সংগ্রামকে সমর্থন করে ভারত গমন করে ছিলেন।
মুক্তি যুদ্ধের সংঘটক হিসাবে কাজে করেছিলেন নবাব আলী আব্বাছ খানের পিতা নওয়াব আলী সফদর খান রাজা সাহেব। মৌলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর বিশ্বস্থ সহচর, কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা এবং ভাষানী ন্যাপ এর কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। কৃষক শ্রমিক জনতার প্রিয় নেতা সর্বজন শ্রদ্ধেয় রাজা সাহেব চারনস্বর সেক্টরের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বিত্তবান ও ভূ-স্বামী রাজা সাহেব শ্রেণী চ্যোত বোর্জোয়ার মত পৃথিম পাশার বিশাল ঐতিহ্যবাহী নবাব বাড়ী ছেড়ে সাধারন্যে এসে বসত বাড়ী নির্মাণ করতঃ বসবাস করতে থাকেন। বিশাল ভূ-সম্পত্তি প্রজা সাধারনের মাঝে বিলিয়ে দেন, কোথাও নাম মাত্র মূল্যে বিক্রী করে দেন।
একাত্তোরের মুক্তি যুদ্ধের সময় পৃথিম পাশার নবাব সাহেবদের সঙ্গেঁ আমার সখ্যতা ও সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে। ইতি পূর্বে পরিচয় থাকলেও সম্পর্ক ছিল না। নবাব আলী সফদার খান এং নবাব আলী ছরোওয়ার খান আমাকে অনুজের মত ¯েœহ মমতা করতেন। চন্নু নবাব সাহেব এর সঙ্গেঁ আমার রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিল।
আমি স্বাধীনতা পূর্ব কালে মৌলভীবাজার কলেজ শাখা অতঃপর মহকুমা শাখার ছাত্রীগের সভাপতি ছিলাম। মুক্তি যুদ্ধের সময় আমাদের সকলের জনপ্রিয় নবাব আলী আব্বাছ খানের বয়স ছিল কম। সেকাল থেকে একাল পর্যন্ত তিনি আমাকে ব্যয়: জ্যেষ্ট হিসাবে সম্মান করেন দেখান। এতদিনে ভালোবাসা মমতা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো মজবুত হয়েছে। সেকাল থেকে একাল পর্যন্ত দেখছি একজন মানুষ কত সহজ সরল নির্লোভ নির্মোহ ও সাদামনের মানুষে হতে পারেন। হালকা পাতলা শ্যামলা চেহারা কোকরা চুলী মিষ্টি হাসি সমেত সাধারন পোষাকের একজন অসাধারন মানুষ নবাব আলী আব্বাছ খান্ একাধিক মেয়াদে সাংসদ হয়েছেন। বানিজ্যায়ন দূবৃত্তায়ন, ভ্রষ্টাচারের জোয়ারের বাংলাদেশে নবাব আলী আব্বাছ খাঁনকে কলংকের কালিমা স্পর্শ করতে পারেনি। তিনি সদাসর্বদা একজন মিঃ ক্লিন। তার পরিবারে ও জনপ্রতিনিধিত্ব আছে। সহোদর নবাব আলী নকী খান নিজ ইউনিয়নে নির্বাচিত চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করেছেন। দলগত ভাবে নবাব আলী আব্বাছ খাঁন জাতীয় পার্টি (জাফর) র কেন্দ্রীয় নেতা। বিশ দলীয় জোটের শরীক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার দুই এর একজন শক্তিশালী প্রার্থী ছিলেন। বি.এন.পি. থেকে প্রার্থী ছিলেন বি.এন.পির কেন্দ্রীয় নেতা সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি এডভোকেট এ.এন.এম আবেদ রাজা। ডক্টর কামাল হোসেন আশম আব্দুর রব, সুলতান মোহাম্মদ মনুসুর আহমদ, মাহমুদুর রহমান মান্না, ডাক্তার জাফরুল্লা চৌধুরী প্রেমুখের নেতৃত্বে ঐক্য ফ্রন্ট গঠিত হলে এবং বি.এন.পি বিশ দলীয় জোট জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টে যোগ দিলে কুলাউড়ার ভোটের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যুগ হয়। মৌলভীবাজার দুই নির্বাচনী এলাকায় সংসদ সদস্য পদ প্রার্থী হিসাবে ঐক্য ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা, সাাবেক সাংসদ, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংঘঠনিক সম্পাদক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং ডাকসুর সাবেক ভি.পি. সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদকে কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক মনোনয়ন দিলে মনোনয়নের দুই দাবীদার এ.এন.এম আবেদ রাজা এবং নবাব আলী আব্বাছ খান সহাস্য বদনে তামেনে নেন।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে রাজনৈতিক ডিগবাজি পদ বানিজ্য, মনোনয়ন বানিজ্য, মনোনয়ন বঞ্চিতদের বিদ্রোহ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ভোট প্রার্থনা একটি অপ সংস্কৃতি-কু-কালচারে পরিণত হয়েছে। খোদ সরকার দলে মনোনয়ন বঞ্চিত গণ বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে স্বতন্ত প্রতিদ্ধন্ধিতা করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নিজ জেলা ফরিদপুরে পর্যন্ত নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রী নেতার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। স্বতন্ত্রের তালিকায় আছেন সাবেক মন্ত্রী বি.এন.পি-র সাবেক কেন্দ্রী নেতা ব্যারিষ্টার নজমুল হুদাও। কুলাউড়ার একাধিক মেয়াদের সাবেক সাংসদ ক্লিনইমেজের জনপ্রিয় শক্ত প্রার্থী নবাব সাহেব একজন হেভীওয়েট প্রার্থী হয়েও বিদ্রোহ করেন নি, তাকে বিভিন্ন বলয় থেকে বিভিন্ন লোভ দেকালেও তিনি কারো ফাদে পা দেননি বরং ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা আরেক সাদামনের মানুষ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এর সঙ্গেঁ সার্বক্ষণিক ভাবেই আছেন আন্তরিক ভাবেই নুতন ভাবে ঘোষনা করেছেন সেই পুরাতন শ্লো-গান,নিজের খেয়ে ধানছড়া, নিজের খেয়ে সুলতান মনসুর কুলাউড়ার ভোটের রাজনীতিতে একভোটে দুই এম.এ.পি শ্লো-গানটি খুবই জনপ্রিয়। এই লোক প্রিয় আওয়াজটি জননেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এবং সাদামনের সরল মানুষ জননেতা নবাব আলী আব্বাছ খানকে কেন্দ্র করেই প্রচলিত। এবার জননেতা নবাব আলী আব্বাছ খাঁন ঘোষনা করেছেন ধানেরর শীষে এক ভোটে দুই এম.পি.। নওয়াব আলী আব্বাছ খাঁন আন্তরিক ভাবে তাঁর শুভাকাংখী সমর্থক ও দলীয় কর্মীদেরকে বলছেন ধানের শীষে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদকে ভোট দিলে সে ভোট তিনি পাবেন। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এম.পি. হলে তিনিই এম.পি. হবেন। জননেতা নবাব আলী আব্বাছ খান এর এই আন্তরিক আহ্বান ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। কুলাউড়ায় ধানের শীষের জোয়ার উঠেছে। দ্বিধাবিভক্ত কুলাউড়া উপজেলা বি.এন.পি ইতি পূর্বেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সুলতানের স্বপক্ষে মাঠে নেমেছেন। পত্রিকায় সংবাদ এসেছে- সুলতানে একট্টা কুলাউড়ার বি.এন.পি। মাঠে ঘাটে আওয়াজ উঠেছে “সুলতান মনসুর এগিয়ে চল আমরা আছি তোমার সাথে। কন্ঠ শিল্পী আবগময় কন্ঠে সুরেলা কন্ঠেসুর তুলেছেন গাইছেন- সুলতান এসেছে।”
নবাব আলী আব্বাছ খান নব্বইর দশকে জেলাবারের সদস্য হিসাবে আইন ব্যবসায় যোগ দেন। পেশাটি সম্মান জনক এবং অলাভ জনক ও নয়। এখানেও আইন ব্যবসা করে অনেকেই বাসাবাড়ি করেছেন কোটিপতি হয়েছেন। নবাব সাহেবের সঙ্গেঁ সম্পর্ক ও সখ্যতার সুবাদে স-সম্মানে আমার টেবিলে আমার পাশের চেয়ারেই জায়গা দিলাম। ক দিন লয়ার ক্লায়েন্ট সম্পর্ক বাতচিত পেমেন্ট সিষ্টেম দেখে তাঁর এসব ভালো লাগল না, তিনি বললেন ক্লায়েন্টদের সঙ্গেঁ এত কথা বলে এত বুঝাবুঝি করে টাকা আদায় আমার পক্ষে সম্ভব নয়, তাছাড়া আমরা বংশানুক্রমে দিয়ে এসেছি, নিতে অভ্যস্থ নই। আমি তাকে উর্ধ্ব আদালত মহামান্য হাই কোর্টে যোগ দিতে পরামর্শ দিলাম- যেখানে মানুষের চাইতে কাগজ পত্রের সাটিফায়েড নকলের প্রয়োজন বেশি। নবাব আলী আব্বাছ খান সাহেব এর এখানে আর ওকালতি করা হয় নি। তিনি করেন নি। রাজনীতিকে ও বানিজ্যায়ন দূবৃত্তায়ন চাঁদাবাজি, ধান্দাবাজির হাতিয়ার ও পথ হিসাবে নেন নি এই নবাব সাহেব। তিনি ও তাঁর পূর্ব পূরুষ রাজনীতির কারণে আকাশ থেকে মাটিতে নেমে এসেছেন, রাজনীতি মারফত তিনি মাটি থেকে আকাশে উঠেন নি। যদি ও আমাদের অনেকেরই রাজনীতির কারণে-পাখ- ফইর উঠেছে, চেহারা সুরতে চিকনাই লেগেছে নাম ধামের ও পরিবর্তন হয়েছে। অনেক কেরামত উল্লারা, অনেক ভচু অচলমাল লাইনে উঠেছেন কেরামত উল্লাহ থেকে ক্রেম্যেট এ্যালি হয়েছেন। কিন্তু নবাব আলী আব্বাছ খান সাহেবরা যা ছিলেন তাই আছেন, বিত্তবেসাত জমিদারি না থাকলেও মানসম্মান আছে, অহংকার অহংবোধ না থাকলে ও আত্ব মর্যাদা বোধ আছে। ভোটের সময় প্রতিদ্বন্ধী রাজনৈতিক দল সমূহ এবং প্রার্থীদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিযোগীতা বাহাসবাক-বিতন্ডা-থাকে-এটাই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির শোভাও সৌন্দর্য্য। বিশ্ব বিখ্যাত দার্শনিক ভলতেয়ার বলে ছিলেন আপনার মতের সঙ্গেঁ আমি এক মত না হতে পারি কিন্তু আপনার মত প্রকাশের জন্য আমার জানটা দিতে পারি। এই রাজনৈতিক বাহাস হওয়া উচিত শালীন, শ্লীল-অসালীন, অশ্লীল, আপত্তিকর নয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একে অন্যের জানি দুষমন-ভাউর-সতীন নহেন- রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মাত্র। রাজনীতিতে গোালাগুলি-গালাগালি-চুলাচুলি নয়-কোলাকুলিই কাম্য। নবাব আলী আব্বাছ খাঁন কুলাকুলি কালচারে বিশ্বাস করেন। গালাগালি নয় কারন সেটা তাদের পারিবারিক শিক্ষা নয়। নবাব আলী আব্বাছ খাঁন রাজনীতিতে গালাগালি, গুলাগুলির চাইতে কুলাকুলিতে বিশ্বাস করেন।
সদাহাস্যময় নবাব আলী আব্বাছ খাঁন সেদিন জানালেন দুঃখ প্রকাশ করে বললেন- একজন প্রার্থী তাঁর কাছ থেকে কোন আনুকুল্য ও মৌনং গোপন সমর্থন না পেয়ে তিনিও তাঁর পরিবার প্রসঙ্গেঁ আপত্তিকর ও অসত্য মন্তব্য করছেন। এমনসংবাদ শুনে আমি শরমিন্দা হলাম তাঁর জন্য দুঃখ প্রকাশ করলাম। বর্তমান প্রজন্মকে তাঁর ঐতিহ্যবাহী জনদরদি পরিবাারের কথাও কাহিনী জানাবার দায়িত্ব নিলাম। পারশিয়ান ফুল-সুফিও দার্শনিক সকি সালামত এবং তাঁর বংশধর, তাঁর গৌরবোজ্জল উত্তরাধিকার দানিশমন্দ উপাধি প্রাপ্ত এবং বাংলা সন দানিশব্দের প্রবর্তক মৌলভী মোহাম্মদ রবি খাঁর রবির বাজার, এই বংশের বর্তমান প্রজন্ম জনদরদি জননেতা নবাব আলী আব্বাছ খাঁন এর বর্ণাঢ্য, বর্ণীল, বাঙময়, প্রাণময়, ঐশ্বর্য্য ও ঐতিহ্য মন্ডিত কথাও কাহিনী বয়ানের ক্ষমতা আমার নাই। এ-এক-যৎ কিঞ্চি ঝলক-চমক-মাত্র।
সহজ সরল সাদামনের মানুষ বাপকা বেটা- নবাব আলী আব্বাছ খাঁন এর সুস্বাস্থ্য দীর্ঘায়ু ও কল্যান কামনা করছি। শান্তিপূর্ণ ভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্টিত হউক দেশে পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা লাভ করুক এই কামনা করছি।
লেখক:- সিনিয়র এডভোকেট, হাইকোর্ট, মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেসকøাব]
মন্তব্য করুন