একই উঠানে মসজিদ-মন্দির শ্রদ্ধা-সম্প্রীতির প্রাচীন বন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার॥ এক পাশ থেকে ভেসে আসছে ধূপকাঠীর সুবাতাস অন্যপাশে আতরের ঘ্রাণ। একই আঙিনায় দুই ধর্মের মানুষের প্রার্থনালয়। মন্দিরে পূজা হয়, মসজিদে নামাজ। যুগ যুগ ধরে সম্প্রীতির এক উজ্জল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে ভূয়াই জামে মসজিদ ও ভূয়াই মন্দির।
এই মসজিদ ও মন্দিরের অবস্থান মৌলভীবাজারের জড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নে। দুই উপসনালয়ের কমিটির সদস্যরা একে অন্যকে ধর্মীয় উৎসব পালনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আজানের সময় থেকে নামাজের জামায়াত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের মাইক, ঢাক-ঢোলসহ যাবতীয় শব্দ বন্ধ থাকে। জামায়াত শেষ হলে মন্দিরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। মন্দির কমিটির কাছে নামাজের সময়সূচিও আছে। সেই অনুযায়ী নিজেদের কার্যক্রম থাকে মন্ডপে।
ভূয়াই জামে মসজিদের মুসল্লি মোস্তাকিম আহমদ বাবুল বলেন, ‘এখানে কোনো ধরনের বিভেদ নেই। হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষেরা যার যার ধর্ম পালন করে আসছেন। দুর্গাপূজার সময়েও ঢাক-ঢোল নিয়ে কোনো সমস্যা হয় না। মসজিদ ও মন্ডপ কমিটি সমন্বয় করে যার যার ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করেন।’
ভূয়াই জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এখানে একই উঠানে দুইটা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এখানে মুসলমান এবং হিন্দুরা যে যার ধর্ম সুষ্ঠুভাবে পালন করছেন। আমরা নামাজ পড়ছি, তারা পূজা করছেন। কেউ কারো ধর্মে কোনো হস্তক্ষেপ করছেন না। আমাদের মাঝে ধর্মীয় আচারবিধি পালন করা নিয়ে কোনো দ্বন্ধ নেই। কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই অনেক বছর ধরে চলছে এ সম্প্রীতির বন্ধন।’
জায়ফরনগর ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রতীশ চন্দ্র দাশ ও ভূয়াই পূজা মন্ডপের সভাপতি পিযুষ কান্তি দাস বলেন, ‘এখানে একটি টেবিলে নামাজের সময়সূচি রাখা আছে। নামাজের শুরু ও শেষ দেখে আমরা আমাদের পূজা উদযাপন করি। নামাজে যাতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। আমাদের এখানে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে কোনো ধরনের বিভেদ নেই। আমরা মিলেমিশে যার যার ধর্ম পালন করছি।’
ভূয়াই জামে মসজিদের সভাপতি সাইস্তা মিয়া বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে আমরা ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রেখে চলছি। আমাদের এখানে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই।
মন্তব্য করুন