একই পরিবারের দুই শিশু ধর্ষণ
রাজনগর প্রতিনিধি॥ মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ৬নং টেংরা ইউনিয়নের হইররপুর গ্রামের একই পরিবারের সাড়ে চার বছরের ও দশ বছরের দুই শিশুকে ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবার একই গ্রামের পাশ^বর্তী বাড়ির ফারুক মিয়ার ছেলে রাহিম মিয়া (১৩) দশ বছরের শিশু মেয়েটিকে তার বাড়ি থেকে ফুসলিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এই রাহিম মিয়া ভিকটিমের সাড়ে চার বছরের চাচাতো বোনকে কিছু দিন পূর্বে ধর্ষণ করে। এই ঘটনা ধামা চাপা দেওয়া হয়।
১১ মার্চ রবিবার শিশু দুটিকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
ভিকটিমের মা জানান, শুক্রবার দুপুর দুইটার সময় বাড়ির উঠানে খেলা করছিল আমার মেয়ে। এ সময় রাহিম মিয়া আমার বাড়িতে এসে বারান্দায় বসে। আমি তাকে আসার কারন জিজ্ঞেস করলে সে বলে, আজ কোনো কাজ নেই তাই কিছু ভালো লাগছেনা তাই ঘুরে বেড়াচ্ছি। কিছুক্ষন পর আমি ঘরে চলে যাই এবং শরীরটা ভালো না লাগায় শুয়ে পড়ি। বেশ সময় পরে আমার মেয়ে কেঁদে কেঁদে বাড়িতে এসে বলে রাহিম তাকে জোর করে মুখে চেপে তার ঘরে নিয়ে যায় এবং তার সাথে খারাপ কাজ করেছে (ভাষায় বলা যাচ্ছে না)।
আমি মেয়ের অবস্থা আশংকা জনক দেখে কান্না কাটি করি। আমার কান্না শুনে আশপাশের লোকজন এসে জড়ো হয়। তারা আমাকে শান্তনা দিয়ে ছেলের বাবার নিকট যাওয়ার জন্য বলে। আমি ছেলের বাড়িতে গিয়ে ছেলের বাবাকে ঘটনাটি বললে, ছেলের বাবা ও ভাই ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করে শান্তনা দেয়। ছেলের মা পারভীন বেগম আমার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে বলে, আমার ছেলে যা করছে ভালোই করেছে, ছেলেরা এরকম করেই এতে দোষের কিছু নেই।
তোমাদের মেয়ে বড় হলেও করবে, এখানে হাল্লা চিৎকার করে কোনো লাভ নেই চুপচাপ চলে যা। আমি তর্কে না জড়িয়ে মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে স্থানীয় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। ছেলের মা পারভীনের হুমকি ধামকির কথা মনে করে আমি হাসপাতালে না গিয়ে স্থানীয় ডাক্তার দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েছি। ছেলের বাবা কয়েকবার কয়েকজন মানুষ নিয়ে এসে আমার কাছে ক্ষমা চায়। এবং ছেলের বিচার করবে বলে আর ছেলে এ রকমের কাজ আর করবে না বলে আশ^াস দেয়। কিন্তু ছেলের মা পারভীন বেগম হুমকি ধামকি দিতে থাকে।
আমি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের শরণাপন্ন হই। চেয়ারম্যান মেম্বার আমাকে আইনের আশ্রয় নিতে ও মেয়ের সু-চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। মেয়ের বাবা জানান, আমার দুটি ছেলে ছিল পর পর মারা গিয়েছে। এই মেয়েটাই আমার একমাত্র সন্তান। তাকে নিয়ে খুব দু:চিন্তা ও ভয়ের মধ্যে আছি। রাহিম মায়ের আশ্রয় প্রশ্রয় দিন দিন খুব খারাপ প্রকৃতির ছেলে হয়ে উঠছে। এখন যদি সঠিক বিচার না করা হয় তবে ভবিষ্যতেও আরো খারাপ হবে।
একই পরিবারের সাড়ে চার বছরের মেয়েকে এই ঘটনার কয়েক দিন পূর্বে রাহিম ধর্ষণ করেছিল। সেই ঘটনা রাহিমের মায়ের ভয়ে চেপে রাখা হয়েছিল। কিন্তু একের পর এক ঘটনা করেই যাচ্ছে রাহিম তার মায়ের প্রশ্রয়ে। দুটি শিশু মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এ বিষয়ে রাজনগর থানার অফির্সার ইনচার্জ (ওসি) শ্যামল বণিক ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষণের ঘটনাটি জেনেছি। আমাদের কাছে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি, আমি ভিকটিমের নিরাপত্তার জন্য দুজন মহিলা পুলিশ হাসপাতালে ডিউটিতে দিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন