একটু চিন্তা করুন
পথহারা পথিক॥ নৈতিকতার চরম বিপর্যয় ঘটে চলেছে কিন্তু কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। আমাদের কেন এ অবক্ষয় ? আমাদের পরবর্তী প্রজজ¥ আজ পথহারা বিভ্রান্ত। কিন্তু কেন ? তার প্রধান এবং একমাত্র কারণ হলো ধর্মীয় ও কোরানী শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাওয়া। দুনিয়াবী আরাম-আয়েশ, লোভ-লালসা, ধন-সম্পদ অর্জন ও যশ-খ্যাতির পিছনে আজ আমরা পাল্লা দিয়ে দৌড়াচ্ছি। যদি আমরা এ চিন্তা চেতনা থেকে দুরে সরে আসতে না পারি তবে আমাদের সামনে আরো ভয়াবহ দিণক্ষণ অপেক্ষা করছে। সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি আমাদের কোরানী শিক্ষাকে অগ্রাধিকরা দিতে হবে। কোরানী শিক্ষা ছাড়া আপনার সব শিক্ষাই ব্যর্থ।কারণ মৃত্যুর পর আপনি যে ভাষারই হোন না কেন আপনার ভাষা হবে কোরানী ভাষা অর্থাৎ আরবী ভাষা। আর আল্লাহর কিতাবের জ্ঞান ছাড়া আপনার পরকালের অনন্ত জীবন সম্পূর্ণ বৃথা। এ ব্যাপারে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন- “তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা মূর্খ, মিথ্যা আশা-আখাংঙ্কা ছাড়া তাদের কাছে আল্লাহর কিতাবের কোনই জ্ঞান নেই। তারা শুধু অমূলক কল্পনাই ( জান্নাতে যাওয়ার) পোষন করছে”( বাকারা-৭৮)।আর ধন-সম্পদ অর্জন, যশ-খ্যাতির কথা বলছেন এব্যাপারে আল্লাহ বলছেন-“আর সে ধন-সম্পদকে বেশি ভালবাসে।তার কি সে সময়টি জানা নেই যে, কবরে যা আছে তা বের করা হবে”( আল আদিয়াত-৮,৯)। অন্যত্র সুরা আত্ তাকাছুর এ আল্লাহ বলছেন-তোমাদেরকে ভুলিয়ে রাখে প্রাচুর্যের লালসা। যে পর্যন্ত না তোমরা কবরে ্উপনীত হও।(আয়াত নং-১,২) এটা যারা জানেন ,কিংবা এটা জানার পরও আপনারা অনুভুতিকে কেন নাড়া দেয় না বা বিশ্বাস হচ্ছে না জানেন ? আল্লাহ পাক তাঁর এ বাণীকে জানার,বুঝার,অনুভূতিকে নাড়া দেওয়ার যে যন্ত্রটি(কল্ব) আপনার দেহে ফিট করে দিয়েছেন,সেটি আপনি নষ্ট করে ফেলেছেন । আধুনিক ভাষায় যদি বলি তবে বলতে হয় , আপনার সে যন্ত্রটি প্যারালাইজড হয়ে গেছে। যার কোন অনুভূতি নেই। কিভাবে অনুভূতি হীন হলো তা জানতে চান ? আমার চিন্তা-চেনতা থেকে যতটুকু বুজেছি- তা তুলে ধরছি। কাঁচের মত স্বচ্ছ পরিষ্কার যে যন্ত্রটি আল্লাহ-পাক আপনাকে দিয়েছিল। আপনি-আমি দুনিয়ায় আসার পর নানা রকম অপকমর্ যেমন- মিথ্যা বলা, গীবত করা, হালাল-হারাম ভক্ষণ,সুদ-ঘুষ, হিংসা, গর্ব, অংহকার ইত্যাদি রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে আপনার অন্তর আজ প্যারালাইজড ,অনুভুতিহীন। এখন আপনার প্রশ্ন ? দেশে এত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, মসজিদে এত মুসল্লি মানুষের পরিবর্তন নেই কেন? যারা পড়াচ্ছেন এবং যারা পড়ছেন তাদের বিশ্বাসও খুবই দর্বল। আমি যদি আপনাকে প্রশ্ন করি , আপনি আজ বিশ বছর ধরে নামাজ পড়ছেন, এতদিন সাধনা করে কি আপনি শুধু একটি অভ্যাস(যেমন ধরুন-মিথ্যা কথা) ত্যাগ করতে পেরেছনে। আমি বলব অবশ্যই না । আপনি যে নামাজ বিশ বছর যাবত পড়ে মিথ্যা কথাই ছাড়তে পারলেন না। অথচ সে নামাজ দিয়ে কাল কিয়ামতের দিন আপনি বেহেশতে যাওয়ার আশা পোষণ করছেন। কি হাস্যকর চিন্তা-চেতনা আমাদের। যে নামাজ আপনাকে দুনিয়াতে সামান্যতম পরিবতন করতে পারেনি, সে নামাজ দিয়ে ৃৃ…….?। অথচ আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরান মজিদে স্পষ্ট ভাষায় জােিয়ছেন –“নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। ( আনকাবুত -৪৫)।এ আয়াত কে না জানে। তাহলে আপনি কি বলতে চান আল্লাহ পাকের এ আয়াত মিথ্যা ?(নাউজুবিল্লাহ)। যারা আমাদের নামাজ পড়ান এবং আমরা যারা পড়ি সবাই জানি । কিন্তু কেউ কি কোনদিন নিজেকে অথবা কোন হুজুরকে কিংবা হুজুর নিজেও কি কোনদিন নিজেকে প্রশ্ন করেছেন,এতদিন নামাজ পড়ছি অথচ আমার পরিবর্তন নেই কেন ? দুনিয়া নিয়ে আজ আমরা এতই ব্যস্ত যে , সে ফুসরত টুকু আমরা পাচ্ছি না। অথচ দুনিয়াবী কোন রোগে আক্রান্ত হলে,এক ডাক্তার যদি ভাল করতে না পারে , ডাক্তার পরিবর্তন করছি প্রয়োজনে বিদেশে যাচ্ছি। কি অদ্ভুত মানুষ আমরা !!! দুনিয়ার ১৫(পনের সেকেন্ড) বাঁচার জন্য কতই প্রাণান্তকর চেষ্ঠা অথচ পরকালের অনন্ত জীবনের প্রতি আমরা চরম উদাসীন। আমরা যে নামাজ পড়ছি সে সর্ম্পকে আমি বলব এটা ফরমালিটির নামাজ , আখেরাতে মুক্তির জন্য নয় । আমরা যারা বিভিন্ন আমল করছি তা না জেনে যাচাই- বাছাই না করে অন্ধের মত করছি। তাই আজ আমাদের এ করুন পরিনতি। আসুন আমরা কোরান ও সহীহ হাদিস বুঝে পড়ি এবং তা আমল করার চেষ্টা করি। তবেই আমরা পাব দুনিয়াবী শান্তি,আখেরাতে আল্লাহর সান্নিধ্য এবং পরম সুখের জান্নাত।
মন্তব্য করুন