একরামুল কবীর একজন নীরব সমাজকর্মী

November 11, 2017,

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি॥  স্বপ্ন তার মানব সেবা। মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়া। এলাকার মানুষের ভাল কাজে এগিয়ে যাচ্ছেন। শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ডা. মোঃ একরামুল কবীর। পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি শ্রীমঙ্গল উপজেলার কুঞ্জবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
কামারগাঁও গ্রামজুড়ে ডা. একরামুল কবীর একজন ভাল মানুষ হিসাবে ব্যাপক পরিচিতি আছে। তিনি একজন দানশীল ও সবাজসেবী বলেও সমাধিক পরিচিত। সমাজের যুবদের নিয়ে তিনি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকেন। বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে তিনি ধুমপান বিরোধী সমাবেশ, বৃক্ষ রোপণ কর্মসুচী করে থাকেন। ইতোমধ্যে বস নামে একটি সামাজিক সংগঠন এর মাধ্যমে বিভিন্ন জাগায় বৃক্ষ রোপণ কর্মসুচী পালন করে আসছেন। এলাকার এলাকার গরীব দুঃখীদের মাঝে সাধ্য মতো তার সহযোগীতার হাত সদা উম্মুক্ত। শিক্ষাক্ষেত্রে গরীব মেধাবীদের জন্য তার অনেক সহযোগীতার কথা বেশ প্রচলিত। পাঠ্যবই ক্রয় বা পরীক্ষার ফি বাবদ অনেক গরীব ছাত্রছাত্রী তার সহানুভূতির ছোঁয়া পেয়েছে। তিনি মহান শিক্ষকতা পেশাকে নেশায় পরিণত করার মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন,বাচ্চাদের কাছে তিনি শিশুবন্ধু বলে এলাকায় পরিচিত। তিনি দীর্ঘ ছয় বছর মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যৎ সমিতির পরিচালক নির্বাচিত হন,অতপর পরিচালকদের ভোটে পাঁচ বছরই সচিব নির্বাচিত হন।
এলাকায় শিশুদের উন্নত জীবন দর্শনে ও আধুনিক চিন্তা চেতনার বিকাশ সাধনের লক্ষে নিজে ২০০০সালে প্রতিষ্ঠিত করেন সাউথ বালিশিরা কেজি স্কুল। শুরু থেকে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বর্তমানে নিজে স্কুল দেখাশুনা করেন। তিনি জ্ঞানের বীজ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন ধরনরে বই সংগ্রহ করে নিজ বাসায় গড়ে তোলেছেন সাগর সংগম নামে একটি লাইব্রেরী। তার বাড়ীর সামনে রয়েছে প্রায় দুইশত বছরের পুরোনো ইটের তৈরী বাড়ী। সেখানে বিভিন্ন ধরনের নাটক, টেলিফল্ম বা গানের জন্য শুটিয় করা হয়েছে অনেকবার। এখনও শুটিং এর জন্য অনেকেই আসেন।
একরামুল কবীর এর এলাকার লোকজন তাকে ডা. বলে জানেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি তার গ্রামের লোকদের বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। মানব সেবাকে তিনি এবাদত মনে করে ১৯৯৭ ইং সাল থেকে বিনা মুল্যে চিকিৎসা চিকিৎসা দেয়ার মত কাজ করছেন,নিজ প্রতিষ্টান মানুষ মানুষের জন্য থেকে তিনি পর পর তিনটি ফ্রি মেডিকেল ক্লিনিক চালু করে বিনা মুল্যে ঔষধ বিতরণ করে মানব সেবার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এখন পর্যন্ত তিনি এমন কল্যাণ কাজে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন।


তিনি তার বিদ্যালয়ে শিশুদের জন্য মিড ডে মিল চালু করেছেন। বিগত দুই বছর ধরে তিনি নিজের ব্যক্তিগত অর্থ ব্যয় করে শিশুদের মিড ডে মিল দিয়ে আসছেন। বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য তিনি আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে শ্রীমঙ্গল বালিশিরা চা বাগানে ২০০০ সালে তৈরী করেছেন বালিশিরা নামে একটি কে জি স্কুল। বর্তমানে তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই শিক্ষা প্রষ্ঠিানেরও দেখা শুনা করে আসছেন।
ডা. মোঃ একরামুল কবীর সাহেব একজন শান্ত, ভদ্র বিনয়ী এবং সদালাপী মানুষ। যেকোনো স্তরের মানুষের সাথে তিনি সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে অভ্যস্থ। তিনি হাসতে এবং হাসাতে পটু। কারো ভালো কাজে তিনি আনন্দবোধ করেন এবং কাউকে মাত্রাতিরিক্ত স্বার্থপ্রবন দেখলে তিনি বিরক্ত হোন। সমাজের কর্মকান্ডে বিশেষ অবদান রাখছেন এবং মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখে আসছেন তিনি।
স্কুল জীবনে তিনি ক্লাসে ১ম ও শ্রেণি ক্যাপ্টেন সহ জীবনের ঊষালগ্ন থেকেই নেতৃত্বগুণ সমৃদ্ধ এক পরিপূর্ণ মানুষ,যা তার স্বতন্ত্র আলাদা জীবন বৈচিত্রময়ে অন্যরকম করে রেখেছে। ছাত্র রাজনীতির থেকে গণমানুষের রাজনীতি করলেও এখন নিজের নিরপেক্ষতা নিরবে ধরে রেখেছেন। জীবনকে নান্দনিকতার ছোঁয়ায় বৈচিত্রময় করতে ভালোবাসেন গান,লিখেন কবিতা। নিজ স¤পাদিত পাহাড়িকা সাহিত্য ম্যাগাজিন ১৯৮৬ সালে পাঠক নন্দিত হয়,নিজ স¤পাদনায় বর্ণমালা একুশ সংকলন প্রকাশ করেন ১৯৮৭ ইং সালে। তিনি পরোপোকারী নির্লোভ সাহসি একজন মানব। কর্মকে ধর্ম মনে করে সর্বদা এগিয়ে যান ।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com