“একাত্তোরের বিশে ডিসেম্বর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে মাইন বিস্পোরনে শহীদ রহিম বক্স খোকার কথা স্মৃতি কথাঃ ইতি কথা ॥
মুজিবুর রহমান মুজিব॥ আমাদের জাতীয় জীবনের হাজার বছর এর গৌরবময় ইতিহাসে একাত্তোরের মহান মুক্তিযুদ্ধ একটি ঐতিহাসিক অধ্যায়। আমাদের প্রজন্মের চরম সৌভাগ্য ও পরম পাওয়া মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহণ ও দায়িত্ব পালনের সুযোগ লাভ। ষাটের দশকের শুরুতে “ছাত্রলীগের” মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেই প্রথমে আমাদের কলেজ শাখা অতঃপর মহকুমা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব প্রাপ্ত হই। সত্তোর সালের সাধারন নির্বাচনকে বাঙ্গাঁলি জাতীয়তা বাদী আন্দোলনের জনক, স্বাধীনতার মহান স্থপতি আওয়ামীলীগ প্রধান বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান “ছয় দফার” রেফারেন্ডাম হিসাবে ঘোষনা দিয়ে নির্বাচনে নিরংকুশ সংখ্যা গরিষ্টতা অর্জন করতঃ জাতির একক নেতা হিসাবে আত্বপ্রকাশ করেন। পাকফৌজি প্রেসিডেন্ট লেঃ জেঃ আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা হস্থান্তরে টাল বাহানা করতঃ বাঙ্গাঁলিদের উপর নির্যাতন চালাতে থাকেন। বঙ্গঁবন্ধুর আহ্বানে অহিংস ও অসহযোগ আন্দোলন চলতে থাকে। স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এর পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ, পতাকা উত্তোলন সহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হতে থাকে। একাত্তোরের অগ্নি ঝরা দিন গুলিতে আমাদের ছোট মহকুমা মৌলভীবাজারও উত্তাল হয়ে উঠে। আমি তখন ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে মাষ্টার্স ফাইনাল এর ছাত্র। চল্লিশের দশকের দিকে ব্যবসা ও বৈবাহিক সূত্রে মোহাম্মদ তাহির বক্স সাহেব মৌলভীবাজার শহরে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। কোর্ট রোড ও শাহ মোস্তফা সড়ক সংলগ্ন শত শত শতকের বিশাল বাসা বাড়িটি তাহির বক্স সাহেব এর “বক্স ভিলা”। মরহুম তাহির বক্স সাহেব একজন বিনয়ী ও স্বজ্জন ভদ্র লোক ছিলেন। একই শহর বাসিও প্রতিবেশি হিসাবে আমার পরিচিত ছিলেন। তাঁর কন্যা হেনা আমার সহপাঠিনি ছিলেন। তাঁরই পুত্র আব্দুর রহিম বক্স খোকা আমার কনিষ্ট হলেও আমার সঙ্গেঁ সু-সম্পর্ক যুক্ত ছিল। শ্লোগান ও মিটিং মিছিল এর প্রতি উৎসাহী না হলেও ছাত্র ইউনিয়নের সমর্থক ছিল রহিম বক্স খোকা। আমার সহপাঠি বিশিষ্ট বন্ধু বর্ত্তমানে বৃটেন প্রবাসী জহির উদ্দিন আহমদ ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ও শক্তিমান মঞ্চ শিল্পী ছিল। ষাটের দশকের শুরুতে আওয়ামী লীগে যোগদানের পূর্বে সাবেক সাংসদ ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অগ্রজ প্রতিম এম.আজিজুর রহমান মৌলভীবাজারের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বলিষ্ট সংঘটক ও মঞ্চাভিনেতা ছিলেন। তারই অনুজ জহির ও আমি মঞ্চ শিল্পী ছিলাম। রহিম বক্স খোকা নাট্যাভিনয়ে খুবই উৎসাহী ছিল। মাঝারি উচ্চতার শ্যামলা চেহারার হালকা শরীরের সুবেশি খোকা খুবই পোশাক সচেতন ছিল। পেন্টের ব্যেক পকেটে ছোট হ্যেন্ডচি রুনী রাখত, ঘনঘন মাথা আচ রাত। কিèনশেভ সরু এবং এক ফালি গোঁফ এবং এক মুখ মিষ্টি হাসি সমেত খোকা সকল মহলে সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ছিল। ভদ্র ও বিনয়ী ছিল। বন্ধুবর জহির উদ্দিন আহমদ সম্পর্কে খোকার মামা সুবাদে আমাকে মামু বলে ডাকত রহিম বক্স খোকা। প্রতিবেশিও মঞ্চাভিনয়ের কারনে খোকার সঙ্গেঁ আমার সু-সম্পর্ক ছিল। তাঁর বাসায় আমার আসা যাওয়া ছিল-একটি পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। সে কালে মানুষে মানুষে সামাজিক বন্ধন সৌহার্দ ও সম্প্রিতি সুদৃঢ় ছিল-মজবুত ছিল। দূঃখও দূর্ভাগ্যজনক ভাবে হাল আমলে মায়া মমতা কপূরের মত হাওয়ায় উড়ে গিয়ে ভালোবাসাও বন্ধুত্বের বন্ধনের ভিত দূর্বল হয়ে সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় হচ্ছে। ফলতঃ সামাজিক অস্থিরতা ও অশান্তি বানিজ্যায়ন ও দূবৃত্তায়ন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তেইশে মার্চ একাত্তোরে পাকিস্তানের “প্রজাতন্ত্র দিবসে” স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ঘোষনা মোতাবেক আমরা ও মৌলভীবাজারে প্রতিরোধ দিবস পালন করলাম। ঐ দিন বিকালে চৌমুহনা চত্বরে পূর্ব ঘোষনা মোতাবেক মহকুমা ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সভাপতি হিসাবে সুদর্শন ও সংগ্রামী ছাত্রনেতা দেওয়ান আব্দুল ওয়াহাব চৌধুরীর সভাপতিতে এবং নবনির্বাচিত সম্পাদক ছাত্র নেতা নূরুল ইসলাম মুকিত এর পরিচালনায় আমি সদ্য প্রাক্তন সভাপতি এবং ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় শাখা ছাত্র লীগ কর্মি সংঘটক হিসাবে ঐ সভায় আনুষ্ঠানিক ভাবে পাকিস্তানের পতাকা এবং জিন্নাহ সাহেব এর ছবি পুড়িয়ে লাল সবুজের স্বাধীন বাংলার পতাকা এবং বঙ্গঁবন্ধুর ছবি উত্তোলন করি। পঁচিশে মার্চের কাল রাত্রিতে পাকফৌজি প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খাঁন-“অপারেশন সার্চ লাইট” নামে বাঙ্গাঁলি নিধন লুন্টন শুরু করেন। শুরু হয় আমাদের মুক্তি সংগ্রাম। স্বাধীনতা সংগ্রাম।
আমাদের মৌলভীবাজার চার নম্বর সেক্টারাধীন ছিল। সদরের এম.পি.এ.আজিজুর রহমান সি-ইন-সি-স্পেশিয়ালের প্রশিক্ষন প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বের দায়িত্ব ভার গ্রহন করেন। আত্মীয় হিসাবে খোকার সামরীক প্রশিক্ষনে অংশ গ্রহন সহজ হয়েছিল। সামরীক প্রশিক্ষন গ্রহন করে চার নম্বর সেক্টারে সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা রহিম বক্স খোকা। প্রসঙ্গঁত উল্লেখ্য আমাদের এই চার নম্বর সেক্টারে সি-ইন-সি স্পেশিয়াল প্রশিক্ষন প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আব্দুল আহাদ চৌধুরী এবং সৈয়দ মহসিন আলী বীরত্বপূর্ন ভূমিকা ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ভ্রাতৃ প্রতিম আব্দুল আহাদ চৌধুরী স্বাধীন বাংলায় অধ্যক্ষ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্ত্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সফল চেয়ারম্যান হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। বন্ধুবর সৈয়দ মহসীন আলী পৌরপতি, সাংসদ, সমাজ কল্যান মন্ত্রী হয়ে অকালে ইন্তিকাল করেন। ক্যেপ্টেন এম, এ, রব মেজর জেনারেল হয়ে অবসর গ্রহন করেন।
ছয় ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের মিত্র শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারকে স্বীকৃতি দিলে মুক্তি ও মিত্র বাহিনীর যৌথ অভিযানে হানাদার পাক বাহিনী পিছু হটতে থাকে। আট ডিসেম্বর মৌলভবিাজার মুক্ত হয়। তৎকালীন এস, ডি, অ, অফিসে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন সদরের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.আজিজুর রহমান। আমরা সদলবলে প্রবেশ করি আমাদের প্রিয় শহরে। আমার মুসলিম কোয়ার্টারস্থ পৈত্রিক বাসগৃহ রসুলপুর হাউস লুন্টিত। ব্যেচেলার হাউস হিসাবে আমার বাসা একটি অঘোষিত অফিস ছিল। ঘরোয়া বৈঠক হত এখানেই। পঁচিশে মার্চের শেষ রাত্রে আমাকে গ্রেপ্তার করতে খান সেনারা এই বাসায় অভিযান চালিয়ে ছিল। আমি সে রাতে আমার বাসায় ছিলাম না। আমার প্রিয় বন্ধু ও সহপাঠি আজিজুল হক ইকবালের গির্জাপাড়াস্থ বাস গৃহ-“হক ভিলায়” ছিলাম। মাঝে মাঝে আমি ওখানেও রাত্রি যাপন করতাম। দেশে এসেও আমার শরনার্থি জীবন শেষ হল না। আমার বন্ধু ও চিত্র প্রয়োজক আব্দুর রব এর সৈয়দ শাহ মোস্তফা সড়কস্থ বাস ভবন রশিদ ব্রাদার্স- এ- আমাকে নিয়ে গেল। মঞ্চ শিল্পী ও চলচ্চিত্রাভিনেতা আব্দুর রবও এখন পরলোকে। ষোল ডিসেম্বর বিকালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাক বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্বসমর্পনের পর আমাদের সসস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের পরিসমাপ্তি ঘটে। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে একটি ধ্বংস স্থপের মাঝে নুতন করে স্বপ্ন দেখি-সোনার বাংলার। বিজয়ের এক সপ্তাহ শেষ হয়নি বিশে ডিসেম্বরের এক কুয়াশা ডাকা সকাল। কুয়াসা আর শীতের চাদরে মোড়া মফস্বলীয় এই জনপদে জন জীবন শুরু হয়নি, ঘুমন্ত শহর এর বেশির ভাগ বাসা বাড়ির বাসিন্দা স্থানান্তরে- গ্রামাঞ্চলে। বিশে ডিসেম্বরের শীতের সেই কুয়াশা ডাকা সকালে প্রাকৃতিক নীরবতা ভঙ্গঁ করে ব্রজ্রপাত বোমা বর্ষনের মত দ্রিম-দ্রিম-ভোম-ভোম-আওয়াজ হতে থাকে। প্রচন্ড আওয়াজে ভূ-কম্পন হতে থাকে, দরজা জানালা পালংকে কম্পন অনুভব করি। রশিদ ব্রাদার্স এ রাত্রি যাপন করছি আমি ও বন্ধু আব্দুর রব। বাকি পরিবার সদস্যরা তখনও গ্রামাঞ্চলে। আমার মনে হল হয়ত ভূমিকম্প হয়েছে, কিংবা বিমান হামলা হচ্ছে। কিন্তু বিমান হামলার কোন কারন নাই, কারন পাক হানাদার বাহিনী আত্ব-সমর্úনের পর বন্দী। বিমান বাহিনী ও বৈমানিক নেই, কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না, বাসার বাহিরে এসে বুঝলাম গভঃ হাই স্কুল এলাকা থেকে আওয়াজ হচ্ছে-ধোঁয়া উড়ছে। অতি দ্রুতগতিতে আমি ও বন্ধুবর আব্দুর রব পায়ে হেটেই মৌলভীবাজার বহুমুখী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এলাম। এখানে মৃক্তিবাহিনীর একটি ক্যেম্প ছিল। ঘরে ফেরা বিজয়ী বীরগণ বিজয়ের চার দিন পরও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার কারনে এই ক্যম্প এ অবস্থান করছিলেন। ঘরে ফেরা বিজয়ী বীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম বক্স খোকা আনুষ্ঠানিকতা ও ডিসিপ্লেইন মেনে কয়েকশ গজ দূরে নিজের বাসায় না এসে সহযোদ্ধাদের সঙ্গেঁ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অবস্থান ও ঐ রাত্রেও রাত্রি যাপন করছিলেন। সদর উপজেলাধীন আমতৈল এলাকার ‘গনক’ কানু বাবু নিজস্ব বাই সাইকেল যোগে কোন আত্মীয়ের খুঁজে কিংবা কারো হাত দেখতে এই ক্যেম্প-এ-এসেছিলেন। পাক বাহিনীর ফেলে যাওয়া কিংবা পুঁতে রাখা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এ্যন্টিটেংক মাইন বিস্ফোরনে ক্যেম্প অবস্থানরত চব্বিশজন মুক্তিযোদ্ধার দেহ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। মাইন বিষ্ফোরনের আওয়াজে স্কুলের সম্মুখস্থ সীমানা প্রাচীর ধ্বংস হয়ে গেছে। স্কুলের চাল কাগজের মত দুমড়ে-মুচড়ে উড়ে গিয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ এর মধ্য প্রান্তে গিয়ে পতিত হয়েছে। স্কুল থেকে ধোয়া উড়ছে, মাংস-মানুষ পোড়া বোঁটকা কড়া গন্ধ বের হচ্ছে। এই ভয়াবহ ও করুন দৃশ্য দেখে আমি-থ-কিং কর্তব্য বিমুঢ় হয়ে গেলাম। জীবনকে বাজি রেখে যেসব বীর যোদ্ধারা পাক বাহিনীর আধুনিক সমরাস্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয়ী হয়েছেন, সেই সব বীর যুদ্ধ শেষে ঘরে ফিরে এসে আর মায়ের কোলে ফিরে যাওয়া হল না, জীবন দিলেন শত্রু মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে। আব্দুর রহিম বক্স খোকা, সুলেমান কিংবা কাজল পাল কারো লাশ-ই-সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। শক্তিশালী মাইন বিস্ফোরনে দেহ খন্ড বিখন্ড হয়ে যায়। স্কুলের প্রতিবেশি মধ্য পাড়া নিবাসি বদরুল ইসলাম (বর্ত্তমানে বিশিষ্ট আইনজীবী ও সমাজ সেবক।) স্মৃতি চারন করে জানালেন বিকট আওয়াজে মাইন বিস্ফোরনের ফলে ক্যেম্প এর রক্ষিত বুট-জুতা উড়ে গিয়ে তাদের বাসার পিছনের পুকুরে পতিত হয়েছিল। বেলা বাড়ার সাথে সাথে শহরের স্বল্প সংখ্যক বসবাস রত নাগরিক রিকসা চালক ও শ্রমিক শ্রেণীর লোকজন ছুটে আসেন। নেতাদের মধ্যে আজিজ ভাই, আহাদ ভাই, সৈয়দ মহসিন ছাড় কে বা কারা এসেছিলেন এই পঞ্চাশ বৎসর পর সকলের নাম আমার স্মরন নাই। রাজনগরের আদি অধিবাসি চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র ও ছাত্র লীগ নেতা আব্দুল আহাদ চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধা অন্তপ্রান-মুক্তিযোদ্ধা অধিনায়ক ছিলেন। তিনি তাঁর সহযোদ্ধাদের দেক ভাল এর কারনে বিজয় শেষেও এই শহরে বাসা বাড়ি নিয়ে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে অবস্থান করছিলেন। আমরা সম্মিলিত ভাবে আকস্মিক ভাবে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের দেহাবশেষ সংগ্রহ করি। লাশ সনাক্ত না করার কারনে জানাজা কিংবা দাহ্-শেষ কৃত্যানুষ্টান কিছুই করা সম্ভব হয় নি। সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের দক্ষিন পূর্বাংশে সবাইকে সমাহিত করা হয়। তিন ফুট উচ্চতা সম্পন্ন বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে শহীদানদের সমাধি স্থলকে সীমানা চিহ্নিত করা আছে। মৌলভীবাজার পৌরসভার উদ্যোগে জনপ্রিয় পৌরপতি আলহাজ্ব মাহমুদুর রহমানের উদ্যোগে বিশে ডিসেম্বর এর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত মাঝারি আকারের একটি শহীদ মিনার আছে। এই শহীদ মিনারে দুই নম্বরে শহীদ খোকার নাম খুদিত আছে। এই শহীদ মিনারের পূর্ব পশ্চিমে বড় আকারে দুটি শহীদ মিনার আছে। আদালত সড়ক সংলগ্ন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত বৃহৎ শহীদ মিনারটি বিগত চার দলীয় জোট সরকারামলে মরহুম অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী উন্নয়ন ও অগ্রগতির অগ্রদূত এম.সাইফুর রহমান এর বলিষ্ট উদ্যোগ ও নেতৃত্বে নির্মিত। এই শহীদ মিনারে তাঁর নাম ফলক আছে। যদিও বর্ত্তমানে তা অস্পষ্ট ও পাঠ যোগ্য নয়। এটি জেলার সর্ব বৃহৎ এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হিসাবে স্বীকৃত। এলাকার শহীদ মিনার ত্রয়ের পশ্চিমাংশের শহীদ মিনারটি পৌরসভার উদ্যোগে নির্মিত। মিনার গাত্রে পৌরপতি হিসাবে মাহমুদুর রহমান ও ফয়জুল করিম ময়ূন এর নাম ফলক আছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এম, সি,এ, আজিজুর রহমান জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর “ব্রজ কন্ঠ” শিরোনামে আকর্ষনীয় বেদি সহ বঙ্গঁবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের পর এলাকার সৌন্দর্য্য ও গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে এই ম্যুরাল এর ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান এবং ১৩/০৮/২০২০সালে শুভ উদ্ভোধন করেন জেলা সদরের মাননীয় সাংসদ জননেতা নেছার আহমদ। বর্ত্তমান পৌর মেয়র কর্ম চঞ্চল ও কর্ম্ম তৎপর আলহাজ্ব মোঃ ফজলুর রহমান পৌরসভার দায়িত্বভার গ্রহনের পর শহীদ সমাধি ও সমগ্র এলাকাটি দেখ ভাল এর দায়িত্বভার নিয়েছেন। এলাকাটি নির্জন ও অনাবাসিক। ইতিপূর্বে অরক্ষিত ও বেহাল অবস্থায় ছিল। এখানে বক্রাঈদে গরুর বাজারও হয়েছে। এলাকায় দিনের বেলায় ছিল ভবঘুরে, বখাটে, বাউন্ডেল, নেশাখোরদের বারোয়ারী আড্ডাখানা। রাত্রি বেলা ছিল তৃতীয় শ্রেণির বারবনিতাদের অবাধ বিচরন ক্ষেত্র। আশির দশকের শুরুতে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সত্যিকারের সুহৃদ সৈয়দ মহসিন আলী পৌরপতির দায়িত্ব পালন কালে আমি আমার নিজস্ব উদ্যোগে মমতাজ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিশে ডিসেম্বর এর শহীদ মিনার প্রাঙ্গঁনে একটি মত বিনিময় সভা এবং বৃক্ষরূপন ও পুস্প বিকাশে বাগান চর্চা সুন্নতে রাসুলুল্লাহ ছাড়া ও মানবদেহের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্যের প্রসঙ্গঁটিত আছেই। আমার পীর সাহেব হবিগঞ্জের এক সম্ভান্ত বংশীয় সংসার ত্যাগী সু-সন্তান আব্রু মিয়া রাস্তাঘাটে পথে প্রান্তরে গাছ লাগিয়ে গাছ পীর হুজুর হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। আমার সিলেটি বন্ধু সাংবাদিক কলামিষ্ট আফতাব চৌধুরী গাছ লাগাতে লাগাতে সিলেটের উপশহর বিবর্ন জীবনকে বর্ণময় করে তুলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত হয়ে সিলেটের মুখ উজ্জল করেছেন-আমাদেরকে অনুপ্রানিত করেছেন। আমি নিজে একাত্তোরি বীর এবং হাল আমলে কবিড বিজয়ী হলেও কবরের দ্বার প্রান্তে, কোন প্রাপ্তি যোগের প্রত্যাশানয়-বিবেক বোধ থেকে শুধুমাত্র দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। আশির দশকের সেই মায়াবি বিকাল-সোনালি সন্ধ্যায় আমার সভাপতিত্বে এবং পৌরপতি সৈয়দ মহসিন আলীর প্রধান আতিথ্যে আমরা ক-জন এই অমর শহীদানের মান সম্মান রক্ষার ওয়াদা করেছিলাম। আমার পক্ষ থেকে বৃক্ষায়ন ও পুস্পায়নের একটি ক্ষুদ্র পরিকল্পনা আছে। ইচ্ছা হয় সকল শহীদের সমাধিতে বুজুর্গানে দ্বীনের কবরস্থানে ফুলের বাগান বানিয়ে দেই, সন্ধ্যায় বাতি জ্বালিয়ে দেই কিন্তু এই পড়ন্ত বেলায় এই জীবন সায়াহ্নে শেষ সময়ে আমার সেই শক্তিও নাই, সময় ও নাই। এখন আমার গাড়ি চলে না চলে না রে অবস্থায় জেলা জামে মসজিদ, জেলাবার এলাকায় আমার লাগানো গাছ গুলির দিকে তাকিয়ে তৃপ্তি পাই, মানুষ জীবন ধারনের জন্য অক্সিজেন ও ছায়া মায়া পাবে, পাখ পাখালি বাসা বাঁধবে-পোকা মাকড় খাবে আহার গ্রহন করবে। আশির দশকে বিশে ডিসেম্বরের শহীদ মিনারে এলাকায় শহীদ সমাধিতে যে বৃক্ষ গুলি রোপন করেছিলাম সে গুলি বড় হয়ে বেড়ে উঠে ডালে পাতায় পূর্ন বৃক্ষে রুপান্তরিত হয়েছে, ছায়ায় মায়ায় পরম মমতায় বুক আগলে রাখছে শহীদ খোকা, সুলেমান, কাজল পালকে।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও ছড়াকার আবদুল হামিদ মাহবুব দৈনিক বাংলা বাজার পত্রিকায় যে সংবাদ পাঠিয়েছিলেন, তার শিরোনাম ছিল-“এই চারা গাছের পাতা একদিন আল্লাহর নাম জিগির করবে” এই ক’বছরে এলাকটি এখন সবুজের সমারোহ, দৃষ্টিনন্দন। সভা, সমাবেশ মেলা হয় এই এলাকায়। ১৬, ২৬, ২১শে ফেব্রুয়ারী জাতীয় দিবস সমূহে পুস্প স্থবক দেয়া হয় এই্ এলাকাস্থ শহীদ মিনারে। ইতিপূর্বে এই এলাকায় বখাটে বেলেহাজদের উৎপাত বৃদ্ধি পেলে আমি আমাদের তৎকালীন কর্মঠ ও সুদক্ষ জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান সাহেব (বর্ত্তমানে চট্টগ্রামের মাননীয় বিভাগীয় কমিশনার) কে মোবাইল কোর্ট মারফত অপকর্ম কারিদের বিরুদ্ধে বিহিত আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানালে তিনি তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়েছিলেন, পুলিশি তৎপরতায় এলাকার পবিত্রতা রক্ষা করা গিয়ে ছিল। দুষ্ট লোকেরা এলাকার বৈদ্যোতিক বাতি হয় খুলে নিয়ে যায় কিংবা ভেঙ্গেঁ ফেলে-ফলতঃ এলাকাটি রাতের বেলা অরক্ষিত হয়ে নিশি কন্যাদের নিয়ন্ত্রনে চলে যায়। সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ এর পশ্চিমাংশে আমার পৈত্রিক বসত বাড়ি রসুলপুর হাউস, মাঠের পূর্বাংশে শহীদ মিনার শহীদ সমাধি। আমার যৌবন কালে দেক ভাল করেছি, ফজরের নামাজ মর্নিং ওয়াক শেষে জিয়ারত করেছি। এখন আমি শয্যা ও সোফাশায়ী-চলাফেরা নাই, তাই লেখার নামে এই আকুল কান্না। সুহৃদ-সুশীল সমাজের কাছে এই বিনীত নিবেদন। ইসলামী আইনের বিধান মোতাবেক “আলমে আরওয়া” থেকে হাসরের ময়দান পর্য্যন্ত মানবাত্বার ক্রম বিকাশের ধারার দুনিয়াবি সময় টুকু ক্ষনস্থায়ীও অনির্ধারিত। একজন মুমিনের মৃত্যোমানেই সব শেষ নয়, বরং অনাদি অনন্ত কালের যাত্রা শুরু মাত্র। দুনিয়া শেষে মৃত্যো পরবর্ত্তী জীবন “আলমে বরযক”। প্রিয় খোকার বরজকি জীবন সুখময়-মঙ্গঁলময় হউক এই মোনাজাত করি। দোয়া করছি। বাংলাদেশে জন্ম নেয়া বর্ত্তমান প্রজন্ম আব্দুর রহিম বক্স খোকাকে দেখেন নি-দেখার কথাও নয়, কারন স্বাধীন বাংলার এক সপ্তাহের মাথায় বিশে ডিসেম্বর খোকা শহীদ হয়। খোকা বেঁচে থাকলে তার বিয়ে হত, খোকা খুকির বাপ হত, বংশ বৃদ্ধি হত। পৈত্রিক সুত্রে প্রাপ্ত কোটি কোটি টাকা মূল্যের বিশাল বাসাবাড়ির মালিক হত, কিন্তু মহান মালিক তাকে নিয়ে গেছেন তার দুনিয়াবি জীবন শেষ হয়ে গেছে বলে। আব্দুর রহিম বক্স খোকা এই শহরে একটি অপরিচিত নাম। তাঁর পরিবার বর্গ তাঁর স্মৃতি রক্ষা করেছেন তাঁর বাসার সামনে তাদের একটি দোকান গৃহের নাম দিয়েছেন “শহীদ মুক্তিযোদ্ধা খোকা ষ্টোর”। এ দিকে এলে ঐ দিকে গেলে তাঁর নামের সাইন বোর্ড এর দিকে তাকাই আর স্মরন করি স্নেহ ভাজন খোকার কথা একদিন মন্ত্র মুগ্ধের মত ঢুকে গেলাম খোকা ষ্টোর-এ। জানা গেল তাঁর ভগ্নি পতি দোকানটি চালান। খোকার ভাই মুন্সি, আজাদ, কেমন আছে কোথায় আছে জানি না, খোকার বোন মনোওয়ারার বিয়ে হয়েছিল সুনাপুর এর আমার প্রিয়জন নূরুল ইসলাম এর সঙ্গেঁ। আশির দশকে বৃটেন ভ্রমন কালে আমি ‘রবিন হুড’ এর শহর ‘নটিংহাম’ ভ্রমনে যাই। নূরুল-ই-দাওয়াত দিয়ে নিয়েছিল। আমার প্রিয়ভাজন নূরুলও এখন পরলোকে-আল্লাহ তার বেহেশত নসীব করুন। বিশে ডিসেম্বর স্থানীয় শহীদ দিবস হিসাবে দিবসটি যথাযথ মর্য্যাদার সাথে পালন করা হয়। কর্ম চঞ্চল পৌরপতি মেয়র ফজলুর রহমান শহীদ সমাধি স্থম্বের অদুরস্থ ফুচকা বাজারকে উচ্ছেদ করে ফুলের বাগান বানিয়েছেন, এলাকার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সমাধি এলাকায় হাই পাওয়ার ইলেকট্টিক বাল্ব এবং একজন নিয়মিত নৈশ প্রহরি নিয়োগ দিলে শহীদানের রুহ-আত্বা শান্তি পাবে। এলাকার পবিত্রতা রক্ষা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল, জেলা পর্য্যায়ে জেলা কমান্ড এবং উপজেলা পর্য্যায়ে নির্বাচিত কমিটি ছিল। উপজেলা থেকে কেন্দ্র পর্য্যন্ত এই সংস্থা মুক্তিযোদ্ধাদেরকে দেক ভাল করেন। দীর্ঘদিন যাবত মুক্তিযোদ্ধাদের কেন্দ্র থেকে উপজেলা পর্য্যন্ত নির্বাচিত কমিটি না থাকায় মুক্তিযোদ্ধা সমাজ অভিভাবক ও নেতা হীন। জেলায় জেলা প্রশাসক এবং উপজেলায় উপজেলা নির্ব্বাহী অফিসার গন পদাধিকার বলে যথাক্রমে জেলা ও উপজেলা কমান্ডার এর গুরু দায়িত্ব অতিরিক্ত ভাবে পালন করেন। একজন বীরের মৃত্যোর পর গার্ড অব অনার এর গুরু দায়িত্ব তাদেরকেই পালন করতে হয়। স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারামলে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করছেন, তবে অদ্যাবধি মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্নাঙ্গঁতালিকা তৈরী হয় নি এবং দীর্ঘদিন যাবত সংসদের নির্বাচিত কমিটি না থাকায় স্বাভাবিক কার্য্যক্রম গতিশীল নয়। সকল বিষয়ের মত এ ব্যাপারেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি প্রদান প্রয়োজন।
স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশত বার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তি উপলক্ষে এ বারের বিশে ডিসেম্বর স্থানীয় শহীদ দিবস ভিন্ন মাত্রায় অত্যন্ত ভাব গম্বীর পরিবেশ ও গুরুত্ব সহকারে উদ্যাপিত হয়েছে। জেলা সদরের মাননীয় সাংসদ, জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভাপতি জননেতা নেছার আহমদ এবং জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সাধারন সম্পাদক মিছবাহুর রহমানের যৌথ নেতৃত্বে পুস্প স্থবক এর মাধ্যমে আনুষ্টানিক ভাবে অনুষ্টান শুরু হয় বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে ও শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হয়। শহীদ দিবসের সভানুষ্টানে বক্তাগন শহীদানের স্মৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতঃ বঙ্গঁবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনের দৃঢ় অঙ্গীঁকার ব্যক্ত করেন। প্রাতিষ্টানিক ভাবে জেলা প্রশাসন, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ, জেলা পুলিশ প্রশাসন, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা, মৌলভীবাজার পৌরসভা, বিলুপ্ত জেলা ও উপজেলা ইউনিট এবং সাংবাদিক সমাজ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে একাত্তোরের বিশে ডিসেম্বর এর শহীদানদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন। সভানুষ্টানে বিপুল সংখ্যক গন্যমান্য নাগরিক সাংবাদিক, সুশীল সমাজ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার বর্গ উপস্থিত ছিলেন।
একাত্তোরের বিশে ডিসেম্বর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে মাইন বিস্ফোরনে শহীদ সকল মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি, তাদের রুহের মাগফিরাত, আত্বার শান্তি ও সদগতি কামনা করছি।
বিশে ডিসেম্বর শহীদ খোকা তোমাকে ভূলি নাই, ভূলব না, ভূলতে পারি না, মহান মালিক তোমার বেহেশত নসীব করুন-এই মোনাজাত করছি।
[মুক্তিযোদ্ধা। এডভোকেট হাইকোর্ট। সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব।
শহীদ খোকার ঘনিষ্ট গুরুজন।
মন্তব্য করুন