এম.এ.রহিম সি.আই.পি ও নাসিমা রহিমের তেত্রিশতম বিবাহ বার্ষিকীর দোয়া ও শুভেচ্ছা
মুজিবুর রহমান মুজিব॥ মহা পবিত্র ইসলামী আইনের বিধান মোতাবেক মানবজাতির আদি পিতা ও প্রথম নবী আদম (আঃ) মানবের আদি মাতা বিবি হাওয়া (র)। ফেরেশতা মারফতে আল্লায়ী ইচ্ছায় বিবি হাওয়াকে আদম (আঃ) এর সঙ্গেঁ শাদী মোবারক দেয়া হয়। দুনিয়াতে আদম-হাওয়া-ই-প্রথম দম্পত্তি। আদম-হাওয়ার শুভ শাদী মোবারক এর পর জোড়ায় জোড়ায় ছেলে মেয়ের জন্ম হয়। মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ভাই-বোনের মধ্যে শাদী মোবারক এর মাধ্যমে আদিকালে মানব জাতির বংশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। তখন ভাই বোনের মধ্যে শুভ বিবাহ আইন শুদ্ধ ও জায়েজ ছিল- যা এখন কল্পনাই করা যায় না।
বিবাহ একটি ধর্মীয় প্রাচীন প্রথা মহান আল্লাহ আসামানী কিতাব আল কোরআনে বলেন“খালাক্ক নাকুম আজওয়াজা” আমি আমার সৃষ্টিকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি। এক জোড়া নর-নারি বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে নূতন জীবন শুরু, নূতন সমাজ ও সভ্যতা বিনির্মানে ভূমিকা রাখেন। ইসলাম ধর্মের বিধানানুযায়ী মুসলিম ম্যারেজ সিস্টেম খুবই যুক্তি সঙ্গঁত, অত্যাধুনিক, উভয় পক্ষের জন্যই নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ। মোহরানা স্বাক্ষী সুরাদ-নিকাহ্নামা-রেজিষ্ট্রেশন প্রচলিত প্রথা ও পদ্ধতি। ইসলামী আইনে বর-কনে-কে দিবেন মর্মে একটি মোহরানা সাব্যস্থ হয়। পক্ষদ্বয় এর তওফিক অনুযায়ী মোহরানার পরিমান পাঁচ লক্ষ টাকা থেকে কোটি টাকা পর্য্যন্ত নির্ধারিত হয়। বিত্তবান সিেিজন কন্যাদের মোহরানা এবং দাবী-দাওয়া অত্যধিক হয়ে থাকে। অনেক সময় হয়ে থাকে কোটি টাকার কাবিন।
মোহরানা একজন নারীর হক- ন্যায্য পাওনা। নবদম্পতি শুভ বিবাহের পর রেজিষ্টার্ড নিকাহ্নামা খানা হয়ত কোন দিন খুলে দেখেন ও না, তবুও বর-কনে মনে করবেন তাঁদের একটি রেজিষ্টার্ড নিকাহ্নামা আছে। অবশ্য একটি দম্পত্তির সুখময় দাম্পত্য জীবন গড়ে তুলতে নিকাহ্নামা মোটা অংকের মোহরানা নয়, তাঁদের ঈমান-আমল-বিশ্বাস এবং ভালোবাসাই মূল শক্তি হিসাবে কাজ করে। লাভ ম্যেরেজ, কোর্ট ম্যেরেজ এর ক্ষেত্রে একটি এফিডেভিট সম্পাদন করা হয়, যেখানে মোহরানার আইনী নিশ্চয়তা ও গুরুত্ব নেই। শাদী মোবারক এর মূল মহত্তম কাজটি হচ্ছে বর স্বাক্ষী সম্মুখে কনেকে কবুল বলে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধহন। আল্লাহ রাসূল স্বাক্ষী রেখে একজন পুরুষ আল্লাহর নামে একজন নারীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন, খুশীতে-গমিতে-বিবি মৌসুফাকে পিত্রালয়ে নাইওর দিতে ওয়াদা বদ্ধ থাকেন। একজন গুণবতী রমনী ও পিত্রালয় থেকে স্বামীর বাড়িতে এসে নূতন পরিবেশে এসে অচেনাকে চেনে, অজানাকে জেনে সবাইকে আপন করে নেন-মন জয় করেন। একজন গুণবতী রমনীর মমতাময়ী মা হিসাবে এটাই তাঁর কৃতিত্ব, মহত্ব, ও মাধুর্য্য। আধুনিক বাংলা ভাষায় যথার্থই বলা হয়েছে- “সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে” আজকাল যোগ করে দেয়া হয়- উপযুক্ত স্বামী যদি মিলে তাঁর সনে।
সনাতনী বিধানে শুভ বিবাহের ধর্মীয় আনুষ্টানিকতা ও পরিচ্ছন্ন-মাধুর্য মন্ডিত। বিশুদ্ধ ব্রাহ্মন-অগ্নিস্বাক্ষী রেখে সাত পাকে বেঁধে, মন্ত্র উচ্চারনের মাধ্যমে আজীবনের মত কঠোর ও মধুর বাঁধনে বেঁধে দেন বর-কনেকে। খৃষ্ট ধর্মীয় শুভ বিবাহে চার্চ : পাদ্রী, ম্যেরেজ গাউনসহ আনুষ্টানিকতা আছে। শিখ সম্প্রদ্রায় ও বৌদ্ধ ধর্মীয় শুভ বিবাহের প্রথা পদ্ধতি দেখিনি- জানি না।
শুভ বিবাহের পর বিবাহ বার্ষিকী ম্যেরেজ ডে উদ্যাপন ও আমাদের মধ্যবিত্ত সমাজের একটি সামাজিক প্রথা-অনুষ্টান। এই জাতীয় সামাজিক অনুষ্টান গুলি উপভোগ্য। শিক্ষনীয়। বিগত দশকে জেলা শহরের প্রবীন প্রবাসী শাহ আব্দুল ওয়াহেদ সাহেব এর শুভ বিবাহের পঞ্চাশ বৎসর পূর্তি উৎসব হয়েছিল মহা ধুম ধামে। সেই ব্যতিক্রমী ও মহতি উৎসবানুষ্টানের আহ্বায়ক ছিলাম আমি। বর্তমানে পরলোকে শাহ ওয়াহেদ সাহেব আমাকে খুবই ¯েœহ করতেন। বেঙ্গঁল কমিউনিটি সেন্টারে একটি বর্ষনমুখর সন্ধ্যায় আমার সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত বৈচিত্রময় আলোচনাটি ছিল আকর্ষনীয় ও মনোমুগ্ধ কর। আকর্ষনীয় নৈশভোজের মাধ্যমে সু-সমাপ্ত শুভানুষ্টানটি নগরবাসির স্মরনে ছিল অনেক দিন।
বৃটেনের সাবেক কাউন্সিলার বিশিষ্ট শিক্ষঅনুরাগি, সমাজ সেবক ও রাজনীতিবিদ এম.এ.রহিম সি.আই.পি এবং বেগম নাসিমা রহিম এর তেত্রিশ তম বিবাহ বার্ষিকী একত্রিশে জুলাই উনিশ সাল। আজ থেকে বত্রিশ বৎসর পূর্বে এমনি এক একত্রিশে জুলাই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন এম.এ রহিম ও বেগম নাসিমা রহিম। বর হিসাবে তরুন এম.এ.রহিম ছিলেন যোগ্য পিতার যোগ্য পুত্র। উপযুক্ত পাত্র। ইউসুফ নগর রাতগাঁও এলাকার ভূ-স্বামী পরিবারের শিক্ষিত সন্তান। সু-সন্তান। সুদর্শন। বিদ্যান। বিত্তবান। পিতা আলহাজ্ব মকলিছুর রহমান একজন শিক্ষানুরাগি। সমাজ সেবক। তরুন এম.এ রহিম দেশপ্রেমিক-দেশ কর্মি-রাজনীতি সচেতন-নিবেদিত রাজনীতিবিদ। নির্ভীক মুজিব সৈনিক। কনে নাসিমা ঐতিহ্যবাহী হবিগঞ্জ জেলাধীন নবীগঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবারের কৃতি কন্যা। আমাদের নিকট প্রতিবেশী জেলা হবিগঞ্জ প্রাচীন কাল থেকেই একটি শিক্ষিত-সম্ভান্ত-সম্বৃদ্ধ জনপদ। বিজনা নদীর বিভক্তি পাশাপাশি দুই জেলার জনগণের ভালোবাসা ও বন্ধুত্বেয় বন্ধনকে বিভক্ত করতে পারে নি। নিকট প্রতিবেশী দুই জেলার আত্মীয়তা-দেয়া-নেয়া-ভালোবাসাও বন্ধুত্বের বন্ধন দিনদিন মজবুত হচ্ছে। মৌলভীবাজার জেলা ও জেলা সদরে একাধিক জনপ্রতিনিধি, জননেতা ও গন্যমান্য ব্যক্তি ও ব্যক্তিত্ববর্গের ঘর আলোকিত করেছেন, হবিগঞ্জের অনেক কৃতি কন্যা। রহিম-নাসিমার সুখময় দাম্পত্য জীবন মধুময়-প্রেমময় হয়েছে- দু’জনের বিশ্বাস ও নির্মল ভালোবাসায়। বর এম.এ.রহিম এবং কনে নাসিমা রহিম এই কঠিন, জটিল ও সংঘাতময় মানব জীবনকে মধুময়-প্রেমময় করে তুলেছেন তাদের বিশ্বাসে-ভালোবাসায়-মায়ায়-মমতায়। ইউসুফনগর-রাতগাঁও-সমশেরগঞ্জ এর মানব শিশু রহিম-শহীদ-মহান আল্লাহর অপার রহমত-বরকত-পিতা-মাতার দোয়ায় নিজ প্রচেষ্টায়-কঠোর পরিশ্রম-সততা- আন্তরিকতা ও নিয়মানুবর্তিতায় মৌলভীবাজার-সিলেট-ঢাকা- হয়ে লন্ডন গেলেন জয় করেন নেতৃত্ব দিলেন, অর্থবিত্ত, মান সম্মান পেলেন এতসব সকল প্রাপ্তিতে সহধর্মিনী নাসিমা রহিম এর ভূমিকা ও অবদান অনেক। যোগ্য জীবন সঙ্গিনী হিসাবে বেগম নাসিমা রহিম স্বামীর সকল সৃজনশীল কর্মকান্ডে অফুরান প্রেরনা দিয়েছেন-দিচ্ছেন।
রহিম-নাসিমা-দম্পত্তি-সু সন্তানের জনক-জননী যারা ভদ্র, ন¤্র, বিনয়ী ও মেধাবী। এই দম্পতি পারিবারিক জীবনেও সুখী-সফল।
শিক্ষা ও মানব দরদি এম.এ.রহিম সি.আই.পি-র সঙ্গেঁ আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সু-সম্পর্ক বিদ্যমান। তিনিও তাঁর কনিষ্ট ভ্রাতা আরেক শিক্ষা অন্তপ্রান মুজিবুর রহমান মুজিব আমাকে ভাই সাহেব ডাকেন- বড় ভাইর মত ভক্তি শ্রদ্ধা করেন। মকলিছুর রহমান ডিগ্রী কলেজের আজীবন দাতা সদস্য অনুজ প্রতিম মুজিবুর রহমান মুজিব আমার বাসায় এসে আমাকে স্বপরিবারে বিবাহ বার্ষিকীর পারিবারিক নৈশভোজে সবিনয়ে দাওয়াত দিলেন। ভাই-ভাবির জন্য দোয়া চাইলেন। হৃষ্ট চিত্তে দাওয়াত কবুল করলাম। তাৎক্ষনিক দোয়া দিলাম। প্রীতিভোজের আন্তরিক দাওয়াতে প্রীত হলাম। বিমুদ্ধ হলাম। বিমোহিত হলাম।
আমার প্রিয় পত্রিকা মানব জমিনের ষ্টাফ রিপোর্টার, বিশিষ্ট সাংবাদিক মু.ইমাদ উদ্দিন ¯েœহ ভাজনেষু জানালেন বার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মারকপত্র বেরুবে। আমাকে আমাদের কালের কথা নিয়ে মুরব্বিয়ানা লেখা দিতে হবে। ইমাদের দাবীতে, আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হল মিডিয়া। এই অঙ্গঁনে আছি প্রায় পাঁচ দশক। এই শুভানুষ্ঠানটিকে তাই-ফ্রেম-বন্দির সঙ্গেঁ সঙ্গেঁ-মলাট বন্দী- ও করা উচিত। আমি স্থির নিশ্চিত সাংবাদিক মু.ইমাদ উদ্দিন মুন্সিয়ানার সাথেই সে দায়িত্ব পালন করবে।
অনুজ প্রতিম এম.এ রহিম সি.আই.পি ও বোন নাসিমা রহিমের সুখময় দাম্পত্য জীবন, সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ূ, পারিবারিক কল্যান এই আয়োজনের সাফল্য কামনা করি। মাই ডিয়ার রহিম এন্ড নাসিমা হ্যেপী ম্যেরিজ ডে, ম্যেনি ম্যেনি হ্যেপি রিটার্নর্স অফ দি ডে।
(মুক্তিযোদ্ধা। সাংবাদিক। কলামিষ্ট। উপদেষ্টা, আলহাজ্ব মকলিছুর রহমান ডিগ্রী কলেজ। সাবেক সভাপতি মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব।)
মন্তব্য করুন