কমলগঞ্জের চা বাগান গুলোতে ফাগুয়ার হোলি উৎসব উদযাপন শুরু
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদিবাসী চা- শ্রমিক জনগোষ্টী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা আর আনন্দ উল¬াসের মধ্য দিয়ে ১২ মার্চ রোববার থেকে “ফাগুয়ার হোলি খেলা উৎসব” শুরু করেছে। সারা বছর হাঁড় ভাঙা পরিশ্রমের পর এই আনন্দ উৎসবে রং খেলায় মাতোয়ার হয়ে উঠে উপজেলার ফাঁড়ি সহ প্রায় ২২টি চা বাগানের অর্ধ লক্ষাধিক চা-শ্রমিকরা।
প্রতিবছর বসন্ত ঋতুর দোল পূর্নিমা তিথিতে চা-বাগানের আদিবাসী জনগোষ্টী এই বসন্ত উৎসবে মিলিত হয়। তাদের ভাষায় এই উৎসবের নাম “ফাগুয়ার হোলি খেলা” উৎসব। উৎসব আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে তারা ভূলে যেতে চায় অতীতের দুঃখ ভারাক্রান্ত মুহুর্তগুলোকে। হোলি উপলক্ষ্যে এক সপ্তাহ পূর্ব থেকে প্রতিটি চা-বাগানে এই উৎসবের প্রস্তুুতি চলেছিল। রোববার সন্ধ্যার পর ঘর ভাঙ্গার মাধ্যমে অনুষ্টানের সুচনা হয়।
১৩ মার্চ সোমবার অনুষ্ঠিত হয় কাঁদা ছোড়া-ছোড়ি ও মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে রং (আবির) দিয়ে এক অপরকে রাঙ্গানো হবে।
সনাতন ধর্মীয় পুরাকথা অনুযায়ী, রাক্ষস হিরণ্য কশিপু তার ইশ্বর ভক্ত ছেলে প্রহল্লাদকে বসন্ত পূর্নিমার এই দিনে (তিথিতে) বধ করারর জন্য বেশ কবার প্রচেষ্টা চালানোর পর ব্যর্থ হন বরং তাকেই উল্টো প্রাণ দিতে হয়েছিল। সেই দিনের সেই ধার্মিকের বিজয় আর অধার্মিকের পরাজয়ের ঘটনা থেকে প্রতিবছর যে বিজয় উৎসব পালিত হয়ে আসছে তাহাই হোলি উৎসব। তবে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী অন্যান্যরা দোল পূর্নিমা হিসাবেই এই রং খেলার উৎসব পালন করেন। মুল উৎসব যদিও একদিন, তবু গোটা সপ্তাহ জুড়েই এই উৎসব চলবে চা-বাগান গুলোতে। আর উৎসব আমেজও চা-বাগান এলাকায়ই বেশী আনন্দঘন। পুরো চা-বাগানের ঘন সবুজ যেন এই দিনের জন্য আনা রঙে রঙিন হয়ে উঠেবে। সাথে থাকবে প্রতিটি শ্রমিক বস্তিতে রাতভর হোলিগানের জমজমাট আসর আর তাদের ঐতিহ্যবাহী কাঠি নাচের প্রদর্শনী। আনন্দ ভোগের পর তারা আবার ফিরে যাবে তাদের সেই চিরাচরিত নিয়মের হাড়ঁভাঙ্গা পরিশ্রমে।
মন্তব্য করুন