কমলগঞ্জের মাটি ভুট্টা চাষে উপযোগী হওয়ায় বাড়ছে আবাদ

স্টাফ রিপোর্টার : কমলগঞ্জ উপজেলায় ক্রমেই বাড়ছে ভুট্টা চাষের পরিমাণ। অন্যান্য ফসলের তুলনায় রোগবালাই কম, পরিশ্রমও তুলনামূলক কম—আর ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বিশেষ করে অনাবাদি জমিতে ভুট্টা চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এখানকার অনেক কৃষক। ভুট্রা লাভজনক ও পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসল ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন। ভুট্টা উপজেলার কৃষিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ভুট্টার দানা মানুষের খাদ্য হিসেবে এবং ভুট্টার গাছ ও সবুজ পাতা উন্নতমানের গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। গরু, হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য হিসেবেও এর যথেষ্ট চাহিদা আছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ বছর উপজেলায় ৩২ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে, যা বিগত বছরের তুলনায় বেশি। সরকারিভাবে বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে।
রহিমপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক খাজা মিয়া জানান, ডিসেম্বরের দিকে বীজ বপনের পর ৭১০ দিনের মধ্যেই অঙ্কুরোদ্গম হয়। এরপর নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার, সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। সাধারণত সাড়ে চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়।
বর্তমানে তার জমির গাছে মোচা আসতে শুরু করেছে, আর এপ্রিলের শেষ দিকে ফলন আসবে বলে আশা করছেন তিনি। সিদ্বশ্বরপুর গ্রামের কৃষক দেবাশীষ পাল জানান,ফলন বাম্পার হয়েছে যদি খড়া না হতো আরো বেশী ফলন হতো। রামচন্দ্রপুর গ্রামের মশাহিদ মিয়া ও ছনু মিয়া জানান, ভুট্রা চাষ আমাদের এদিকে আগে এরকম দেখা যায়নি ৩/৪ বছর যাবত ফলন ভাল হচ্ছে দেখতেও সুন্দর লাগছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আপন পাল জানান, বীজ বপনের ১৫–২০ দিন পর থেকে প্রায় ৯০ দিন পর্যন্ত চার দফা সেচ দেওয়া প্রয়োজন হয়। মাঝে মাঝে পাতার দাগ, মোচা বা দানা পঁচা, কাণ্ড পঁচা ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে পারে, যা ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক প্রয়োগে দমনযোগ্য। সঠিক পরিচর্যায় কম পরিশ্রমে দ্বিগুণ লাভের সম্ভাবনা রয়েছে ভুট্টা চাষে। রহিমপুর ইউনিয়নে ৬ হেক্টর জমিতে ভুট্রা চাষ হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, প্রথমদিকে কৃষকরা আগ্রহ দেখাননি। পরে কৃষি অফিসের উদ্যোগে প্রদর্শনী ও প্রণোদনার মাধ্যমে তাদের ভুট্টা চাষে উৎসাহিত করা হয়। এখন কৃষকরা নিজেরা আগ্রহ নিয়ে চাষ করছেন এবং কৃষি অফিস তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দিচ্ছে। দিনে দিনে চাষীর সংখ্যা বাড়ছে। এবছর উপজেলায় ৩২ হেক্টর জমিতে ভুট্রার ভাল ফলন হয়েছে।
মন্তব্য করুন