(ভিডিও সহ) কমলগঞ্জে ইয়াবা ব্যবসায়ী পুত্রের জন্য পিতার মৃত্যু : ডিবি পুলিশের এসআই প্রত্যাহার
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা গ্রামে ইয়াবা ব্যবসায়ী রিপন মিয়াকে ধরতে পুলিশি অভিযান চালায়। অভিযানের সময় মহিলা সহ আহত হয়েছেন তিন জন। এ সময় রিপনের বাবা ছাতির মিয়া (৫৫) পুলিশের নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে পালিয়ে যাওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের এক এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানাযায়, নিহত ছাতির মিয়ার ছেলে শিপন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ও এলাকার একজন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের মাইজদিহি এলাকায় সংঘটিত ডাকাতি ঘটনার সাথেও যুক্ত ছিল। শিপনকে ধরতে মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোল্লা শাহীনের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল বৃহস্পতিবার ১১ আগষ্ট ভোর রাতে কালেঙ্গা বাজারের পাশে তাদের শয়ন ঘরে প্রবেশ করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ী শিপন পালিয়ে যায়। পুলিশ রিপনের ভাই আব্দুল্লাহ ও তার বাবা ছাতির মিয়া সহ পরিবারের অন্যান্যকে হাতকড়া লাগায়। হাতকড়া লাগানো অবস্থায় পুলিশ ও এলাকার আরো কয়েকজন সন্ত্রাসী মিলে নারী-পুরুষ সবাইকে বেদরক পেটায়। এক পর্যায়ে পুলিশের নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে হাতকড়া সহ পালিয়ে যাওয়ার সময় পাহাড় থেকে নীচে পরে ছাতির মিয়ার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রুবিনা বেগম (৫০), শান্তা বেগম (২৫) ও আব্দুল্লাহ (২৮) আহত হয়। এলাকাবাসী আহদের উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
ছাতির মিয়ার মৃত্যুর খবর শুনার পর স্থানীয়ভাবে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে কালেঙ্গা গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়।
নিহত ছাতির মিয়ার স্ত্রী রুবিনা বেগম জানান, পুলিশ তাদের ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের সকলকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তাকে সহ তার স্বামী, ছেলে ও ছেলের স্ত্রীকে হ্যান্ডকাপ লাগায়। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার, মৌলভীবাজার (সদর সার্কেল) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন, জেলা ডিবি পুলিশের এসআই ইন্সপেক্টর নজরুল ইসলাম সহ একদল পুলিশ ঘুম থেকে ডেকে তোলে ঘড়ের ভেতর প্রবেশ করে। এ সময় একই এলাকার সন্ত্রাসী জুবেদ ও মঞ্জু সহ আরো কয়েক জন পুলিশের সাথে তাদেরকে মারধর করার কথা জানান। পরে তার স্বামী মারা গেলে পুলিশ সবার হ্যান্ডকাপ খুলে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সকাল ১১টার দিকে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ছাতির মিয়া লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপতালের মর্গে পাঠায়।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বৃদ্ধ ছাতির মিয়া মারা যাবার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসলে তাকে হাতকড়া পরানো হয়নি। তিনি পুলিশি ভয়ে নিজ থেকেই দৌড়াতে গিয়ে পাহাড়ি টিলা থেকে পড়ে মারা গেছেন। তার ছেলে শিপন একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তাছাড়া ইয়াবা ব্যবসার সাতে যুক্ত। তার উপর গ্রেফতারী পরওয়ানাও ছিল। তার ছোট ভাই রিপন মিয়াও মাদক ব্যবসার সাতে যুক্ত।
পুলিশ সুপার, মোহাম্মদ শাহজালাল জানান খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। নিহত ছাতির মিয়ার ছেলে রিপন একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী। তাকে ধরতে গেলে পুলিশ দেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় পাহাড় থেকে পরে মারা যান ছাতির মিয়া। আসামী ধরার সময় নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা এ বিয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জেলা পুলিশ ডিবি পুলিশের এসআই নজরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করেছে।
মন্তব্য করুন