কমলগঞ্জে পৃথক ঘটনায় ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই ও হাত পা বেঁধে অপর ব্যক্তিকে নদীতে ফেলার চেষ্টা
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মাগুরছড়া পাহাড়ি এলাকায় দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল আটকিয়ে এক ব্যবসায়ীকে খুর দিয়ে জখম করে টাকা ছিনিতাই করে নেয়। দুর্বৃত্তদের হামলায় ব্যবসায়ীর সহযোগী আরোহীও আহত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ব্যবসায়ীকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর ঘটনায় কমলগঞ্জ পৌরসভার দক্ষিণ কুমড়াকাপন গ্রাম এলাকায় এক যুবকের হাত পা বেঁধে ধলাই নদীতে ফেলতে গেলে গ্রামবাসীর চিৎকারে যুবককে ফেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
২৭ নভেম্বর রোববার বিকাল পাঁচটায় মাগুরছড়া পাহাড়ি এলাকায় খর দিয়ে জখম করে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনাই ঘটনা ও সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় দক্ষিণ কুমড়াকাপন গ্রামের ধলাই প্রতিরক্ষঅ বাঁধে যুবককে হাত পা বেঁধে নদীতে ফেলার চেষ্টার ঘটনাটি ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার বিকালে কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর বাজারের মোদী ব্যবসায়ী কাওছার আহমদ (৩০) সহযোগী ব্যবসায়ী আব্দুল মোহিতকে সাথে নিয়ে শ্রীমঙ্গল থেকে মোটরসাইকেল যোগে ফিরছিলেন। বিকাল পাঁচটায় মোটরসাইকেলটি মাগুরছড়া পাহাড়ি এলাকায় পৌছলে দুর্বৃত্তের একটি দল মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে ব্যবসায়ী কাওছারের সাথে থাকা টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিতে গিয়ে ধারালো খুর দিয়ে গলায় ও পিটে মারাত্বক জখম করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় দুর্বৃত্তদের হামলায় সাথের আরোহী ব্যবসাীয় আব্দুল মোহিতও গুরুতরভাবে আহত হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ব্যবসায়ীর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ও সাথের ব্যবসায়ী মোহিতকে রোববার সন্ধ্যার পর সিলেট এ এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। শমশেরনগর বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল মালিক ও ব্যবসায়ী কাওছারের গ্রামের বাড়ির এলাকার ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য তাজুদ আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। ব্যবসায়ী কাওছারের স্বজন (স্ত্রীর বড় ভাই) শামীম আহমদ বলেন, তার গলায় ও পিটের জখম মারাত্বক বলে সে এখনও আশঙ্কা মুক্ত নয়। তাছাড়া সে কোন কথা বলতেও পারছে না।
রোববার সন্ধ্যা রাত সাড়ে ছয়টায় কতিপয় দুর্বৃত্ত কমলগঞ্জ পৌরসভার আলেপুর গ্রামের আকল মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়াকে (২০) ধরে হাত পা বেধে দক্ষিণ কুমড়াকাপন গ্রামের ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধ এলাকায় ধলাই নদীতে ফেলে দিয়ে যাচ্ছিল। এসময় ঘটনা টের পেয়ে চিৎকার করে এগিয়ে আসলে হাত পা বাঁধা অবস্থায় রুবেলকে ফেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে রুবেলকে উদ্ধার করে রাতে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কমলগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (সিনিয়র) আল মামুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে রুবেলকে দেখে তার বক্তব্যও গ্রহন করেছেন।
কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় রাতেই কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আরও বলেন রুবেলকে হাত পা বেঁধে নদীতে ফেলার স্থানটি কমলগঞ্জ থানার এক হাজার ফুটের মধ্যে। এ ঘটনায় সাধারন মানুষজন এখন আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। রুবেল মিয়া এ প্রতিনিধিকে বলেন, ঘটনার সাথে ৬ থেকে ৭ জন জড়িত ছিল। এর মাঝে তিনি ৪ জনকে চিনতে পেরেছেন। তাদের নামে অভিযোগ দিয়েছেন। তারা সবাই আশপাশ এলাকার বাসিন্দা
কমলগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক মহসিন আলী বলেন, মাগুরছড়ায় ব্যবসায়ীকে জখম করার একটি ঘটনা তারা শুনলেও এখনও থানায় কোন অভিযোগ আসেনি। কমলগঞ্জ থানার সিনিয়র উপ পরিদর্শক আল মামুন পৌর এলাকার ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধে এক ব্যক্তিকে হাত পা বেধে নদীতে ফেলার বিষয় ও অভিযোগ গ্রহনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে এখনও মামলা হয়নি। তবে পুলিশি তদন্ত চলছে।
মন্তব্য করুন