কমলগঞ্জে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আমার স্কুল, আমার দায়িত্ব শীর্ষক সমাবেশ ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি, উদ্বুদ্ধকরণ, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের আনুষ্ঠানিক যাত্রা উপলক্ষে “আমার স্কুল, আমার দায়িত্ব” শীর্ষক ব্যতিক্রমধর্মী এক বিরাট সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম।
মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এসএমসি’র সভাপতি ও পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার তওফিক আহমদ বাবুর সভাপতিত্বে ও প্যানেল চেয়ারম্যান নারায়ন মল্লিক সাগরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. সিদ্দেক আলী, উপজেলা শিক্ষা অফিসার গকুল চন্দ্র দেবনাথ, মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এলাকা পরিচালক প্রভাষক মো. আব্দুল আহাদ, জেলার শ্রেষ্ঠ সমাজকর্মী ডা: আব্দুল হান্নান চিনু, পতনঊষার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফয়েজ আহমদ, আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিছবাউর রহমান চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, সমাজসেবক ও প্রাক্তন ছাত্র তোয়াবুর রহমান, প্রাক্তন ছাত্রী রোকসানা আক্তার লাকী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, শিক্ষার গুণগত মানবৃদ্ধির ক্ষেত্রে “আমার স্কুল, আমার দায়িত্ব” প্রকল্পটি নি:সন্দেহে অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ। বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের পাশাপশি সমাজের সচেতন মহলকে নিজ নিজ এলাকার শিক্ষার মানোন্নয়নে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, সময়টা পাল্টেছে। শিক্ষার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে এখন গুণগত মানকেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বাস্তবিকভাবেই গুণগত ও মানসম্মত শিক্ষা এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
জাতীয় উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন ও গতিশীল সমাজ গঠনে গুণগত শিক্ষা চালকের ভূমিকা নিতে পারে। গুণগত ধারার এ শিক্ষার শুরু হতে হবে প্রাথমিক অবস্থা থেকেই। শিশুদের কচি মনে প্রকৃত শিক্ষার বীজটা বপন করে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষার প্রারম্ভিক পর্যায়। সন্দেহ নেই, প্রাথমিক শিক্ষাই হচ্ছে সব শিক্ষার মূল ভিত্তি। সমৃদ্ধ ও উন্নত আগামীর বিনির্মাণে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন ও আধুনিকায়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। রূপকল্প ২০২১ বা জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য জনসম্পদ উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। সুনাগরিক সৃষ্টিতে এবং প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মাণে সব শিশুর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা এবং একই সঙ্গে তাদের উচ্চতর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন নিশ্চত করা একান্ত জরুরী। শিশুর সার্বিক বিকাশের বড় অংশ নির্ভর করে বিদ্যালয়ের আনন্দঘন পরিবেশ, শিক্ষকের দক্ষতা ও শিখন শেখানো কার্যক্রমের ওপর।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় “আমার স্কুল, আমার দায়িত্ব” প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে যাত্রা শুরু হলো। পর্যায়ক্রমে কমলগঞ্জ উপজেলার ১৫১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যেমে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ, শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি ও কাংখিত ফলাফল অর্জন, পিছিয়ে পড়া ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের চিহ্নিতকরণ এবং শিক্ষা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে শিক্ষকদের দক্ষতাবৃদ্ধিকল্পে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ, দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা এবং উচ্চশিক্ষায় অব্যাহত সহায়তা প্রদান, শিক্ষক, অভিভাবক, সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের শিক্ষা কার্য়ক্রমে সম্পৃক্তকরণ, বাল্যবিবাহ রোধ, শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে রাখা প্রভৃতি। আলাপকালে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, কারো উপর দায়িত্ব চাপিয়ে নয়, উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে একটি মহৎ কাজে সকলকে সম্পৃক্ত করাই আমাদের লক্ষ্য।
মন্তব্য করুন