কমলগঞ্জে মধু চাষে সফল লিমন ও রিপন

November 21, 2024,

স্টাফ রিপোর্টার :  অনেকটা শখের বশে মাত্র ১টি মধুর বাক্স মৌমাছিসহ ৭হাজার টাকা দিয়ে কিনে বাড়িতে রাখেন লিমন ও রিপন। কিছুদিন পর থেকে তিনি মধু সংগ্রহ শুরু করেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেন মৌ চাষ। এখন তার খামারে ৫০টার ও বেশি’ মৌমাছির বাক্স। গড়ে তুলেছেন ‘মিষ্টি মৌ-খামার’। বলছিলাম মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার আলেপুর গ্রামের দুই ভাই লিমন ও রিপন এর কথা। মৌমাছি চাষ করে তারা এখন বেশ ভালো আছেন। এলাকায় তারা এখন চৌধুরী বাড়ির ‘মধু লিমন ও রিপন’ নামে পরিচিত।

বৃপস্পতিবার ২১ নভেম্বর দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের চৌধুরী বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে রয়েছে আম, ঝাম, কাঠাল, লেচু, লেবু সহ বিভিন্ন ফলের গাছ রয়েছে। এসব জায়গার ভেতরে ফাঁকা একটু জায়গা মাঝে মধ্যে রয়েছে কিছু কাঠের বাক্স। সেখানে দেখা যায় মৌমাছিঁর আনাগোনা। চলছে মধু আহরণ। আগুনের ধুয়া ব্যবহার করে সেসব বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, চৌধুরী বাড়ির রিপন পড়াশোনা মোটামোটি শেষ করে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করেন। ছোট ভাই লিমন পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়িতে মধু চাষ করছেন। দুই ভাই শখের বসে প্রথমে ১টা বাক্স কিনে মধুর চাষ শুরু করেন। পরে এক এক করে ৫০টা বক্স বাড়ি উঠানের বিভিন্ন স্থানে মাচা তৈরী করে রাখেন। ৪মাস পর পর মধু সংগ্রহ করেন তারা। প্রতিটা বক্সে ৪-৮ কেজি মধু পাওয়া যায়। প্রতি কেজি মধুর দাম ১৫০০-১৮০০টাকা করে বিক্রি করেন। এখন মধুর বাণিজ্যিক চাষের দিকেই মনোযোগী হন তারা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে তারা মধু দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনলাইনে পাঠান। বছরে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা আয় করেন রিপন ও লিমন।

রিপন ও লিমন বলেন, ‘২০১৭ সালে শখের বসে ৭ হাজার টাকা দিয়ে মাত্র ১টি মধুর বাক্স কিনে বিভিন্ন ফুলের মধু সংগ্রহ শুরু করি। দুই ভাই পড়াশোনার পাশাপাশি এখন মধু চাষে এখন ব্যস্ত সময় পার করছি। এখন আমরা মধুর বাণিজ্যিক চাষ শুরু করি।’

তারা আরও বলেন, ‘বিভিন্ন ফুল থেকে মধু আহরণ করছি। মধুর চাষ করতে চাইলে আমরা সহযোগীতা করবো। কেউ খাটি মধু আমাদের কাছ থেকে নিতে চাইলে দিতে পারবো। আমরা বছরে ৪বার মধু সংগ্রহ করি। বর্তমান বাজার মূল্য প্রতি কেজি মধুর দাম ১৫০০-১৮০০ টাকা। বছরে খরচ বাধেঁ আমাদের ৩ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা আয় হয়।

মধু সংগ্রহকারী মনু মিয়া নামের এক শ্রমিক জানান, আমার বাড়ি কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কানাইদেশী গ্রামে। এই উপজেলার বিভিন্ন খামারে কাজ করেই তার সংসার চলে। ১০ বছর থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনি মধু সংগ্রহ করে। মধু চাষ করে অনেক মানুষ স্বাবলম্বী হয়েছেন। প্রতি মাসে বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে ৫০-৭০টা বক্স থেকে মধু সংগ্রহ করি। আমাকে মানুষ যে মধু দেয় সে মধু বিক্রি করে আমার সংসার চলে।

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়েন্ত কুমার রায় বলেন, ‘কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় মধুর চাষ করা হয়েছেন। অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কেউ মধু চাষের বিষয়ে জানতে চাইলে আমরা সহযোগীতা করে থাকি।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com