কমলগঞ্জে যুদ্ধাহত মরহুম মুক্তিাযোদ্ধার বাড়িতে হামলা-ভাংচুর-লুটপাটের অভিযোগ

February 7, 2017,

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা গ্রামে যুদ্ধাহত মরহুম মুক্তিযোদ্ধা সফিক মিয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙ্গচুর লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে চাইলে থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গ্রহন না করায় নির্যাতিত পরিবারের মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রোববার ৫ ফেব্রুয়ারি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
শুক্রবার ৩ ফেব্রুয়ারী সকালে প্রকাশ্যে কালেঙ্গা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, সরকার কর্তৃক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়া পরিবারকে দেওড়াছড়া টি এষ্টেট এর ২নং জেএলস্থিত ১নং খতিয়ানভূক্ত ২৯৪নং দাগের ৫৬ শতক ভূমি স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছিল। একটি প্রভাবশালী মহল মুক্তিযোদ্ধার বন্দোবস্তি এ ভূমি জবর দখল করে নিতে ৩ ফেব্রুয়ারি হামলা চালিয়ে মারপিট,ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করা হয়। জেলা পুলিশ সুপারের কাছে করা অভিযোগকারীনি মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আজিরুন বিবি জানান, প্রদত্ত ৫৬ শতক ভূমি জবরদখল করে মৌলভীবাজারের বর্ষীজোড়া গ্রামের মো: শামসুল হক (সামা)-এর অনুকুলে দেয়ার জন্য মুজিব মেম্বার ও তার সহযোগীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে । স্থায়ী বন্দোবস্ত পাওয়া এ ভূমি ভূমিখোকো শামসুল হক (সামা) এ ভূমি জবরদখলের জন্য মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটির উপর মামলা-হামলা-নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এতে সুবিধা করতে না পেরে অভিযুক্ত শামসুল হক (সামা) রহিমপুর ইউপি’র স্থানীয় মেম্বার মুজিব ও তার ভাই মুকিতকে ব্যবহার করে এ ভূমি জবরদখলের চেষ্টা করে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে দেশীয় অস্ত্রসজ্জিত হয়ে মুজিব মেম্বার, তার ভাই মুকিত, শামসুল হক (সামা), বাতির মিয়া, ইয়াছ মিয়া, হারিছ মিয়া, ফয়জুল, আব্দুল মিয়াসহ ৩০-৪০ জন অতর্কিতভাবে পরিবারের বসতগৃহে সন্ত্রাসী হামলা-ভাংচুর-লটপাট চালায়।
হামলাকারীরা গৃহে রক্ষিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতার নগদ ৬০ হাজার টাকা ও ২টি মোবাইল ফোন সেট লুটে নেয়। এ সন্ত্রাসী হামলায় মৃত: মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়ার স্ত্রী আজিরুন বিবি (৫৫), মেয়ে সাকি বেগম (১৭) ও পুত্রবধু রিপনা বেগম আহত হয়। ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা-ভাংচুর-লুটপাটের সময় ঘটনাস্থলের অদূরে উপস্থিত এক ব্যক্তি মাও: আব্দুল বাছিত খান তার মুঠোফোনে ঘটনার দৃশ্য ভিডিওধারণের চেষ্টা করলে মুজিব মেম্বারের ভাই মুকিত অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে করতে ছুটে এসে তার হাত থেকে মুঠোফোনটি ছিনিয়ে নেয়। তবে, হামলার ঘটনার ধারণকৃত চিত্র মুছে ফেলে মুঠোফোনটি ফিরিয়ে দে হামলাকারীরা। এ ঘটনার পর কমলগঞ্জ থানায় গিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিলেও অভিযোগটি থানা কর্তৃপক্ষ আমলে নেয়নি। এমনকি ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোন তদন্ত হয়নি। পরে ৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তিনি (মৃত: মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়ার স্ত্রী আজিরুন বিবি) জেলা সদরে গিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে সুবিচার প্রার্থনা করে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
ঘটনার দৃশ্য ভিডিওধারনকারী মাও: আব্দুল বাছিত খান জানান- তিনি একটি সংবাদপত্রের সাথে যুক্ত বলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলা-ভাংচুর-লুটপাটের দৃশ্য ভিডিওধারন শুরু করলে মুজিব মেম্বার ও তার ভাই মুকিত অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে করতে ছুটে এসে আমার হাত থেকে মুঠোফোনটি ছিনিয়ে নেয়। পরে ধারনকৃত ভিডিও মুছে ফেলে ফোনটি ফেরৎ দেয়। ১নং রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমদ বদরুল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি দীর্ঘদিন যাবৎ নির্যাতিত। কমলগঞ্জ উপজেলা মুকিতযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মুনিম তরফদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনেও তিনি কমলগঞ্জ থানার ওসিকে অনুরোধ করেছিলেন।
কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মো: নজরুর ইসলাম বরেণ ঘটনার দিনি তিনি সিলেটে ছিলেন। তবে অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্তক্রম ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
তবে হামলা, মারপিট, ভাঙ্গচুর ও লুটপাট সঠিক নয় দাবি করে অভিযুক্ত মো: শামছুল হক (সামা) এ প্রতিনিধিকে বলেন, আসলে অভিযোগকারীনি নিজেই নানা অপরাধের সাথে যুক্ত। তিনি বা তার লোকজন কোন জমি দখলও করেনি বা জমি দখলে হামলাও চালায়নি। অহেতুক তার উপর মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com