কমলগঞ্জে সংখ্যালঘু ভূমিহীনের খাস জমি প্রভাবশালীর দখলে নেয়ার অভিযোগ
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য্য মৌজার বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ও দখলকৃত ভূমিহীনদের খাস জমি স্থানীয় প্রভাবশালী কর্তৃক দখলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিত্তবান ব্যক্তি নিজে ভূমিহীন সেজে ভূয়া দলিলে দাবিদার সেজে জোরপূর্বক সংখ্যালঘু সনজিত কুমার দে ও সুতীন কুমার দে এর বাইশ শতক জমি একই এলাকার রুস্তুম আলী জবর দখল করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে ভূমিহীন সনজিত কুমার দে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, শ্রীসূর্য্য মৌজার বেশ কিছু খাসজমি এলাকার প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। তারা ভূমিহীনদের ভয়ভীতি দেখিয়ে, ভূয়া দলিল করে এবং বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে ভূমিহীন সনদ সংগ্রহ করে এসব জমি দখল করে নিচ্ছেন। একইভাবে শ্রীসূর্য্য টিকরপাড়া এলাকার প্রভাবশালী রুস্তুম আলী কেওলার হাওর এলাকায় বিপুল পরিমাণ জমি নিজ দখলে নিয়েছেন। রুস্তুম আলী বিশাল সম্পদের মালিক থাকা সত্ত্বেও ভূমিহীনদের জমি জবর দখল করে নিচ্ছেন। ১৪ অক্টোবর শুক্রবার ভূমিহীন রমজান আলীর বন্দোবস্তকৃত জমি থেকে রুস্তুম আলী নিজের জমি দাবি করে ৯ শতক জমি বের করে নেন। একই দিনে রুস্তুম আলী এলাকার ভূমিহীন সনজিত কুমার দে ও সুতীন কুমার দে’র দখলকৃত জমি থেকে ২২ শতক ভূমি জবরদখল করে নিয়েছেন। সনজিত কুমার ও রনজিৎ কুমার অভিযোগ করে বলেন, আমরা ভূমিহীন লোক। পূর্বে বন্দোবস্তকৃত এই ভূমি দখলকার হিসাবে চাষাবাদ করে কোন মতে জীবিকা নির্বাহ করে চলেছি। বর্তমানে নবায়নের জন্যও আবেদন করেছি। এ অবস্থায় গত ১৪ অক্টোবর আমাদের দখলকৃত ভূমিহীনের এক একর পঞ্চাশ শতক জায়গা থেকে রুস্তুম আলী ২২ শতক জমি তার দলবল নিয়ে দখল করে নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার দু’জন ব্যক্তি জানান, রুস্তুম আলীর বিরুদ্ধে এভাবে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। নিজের ভাই মারা যাওয়ার পর ভাইয়ের বন্দোবস্তুকৃত ভূমিও নিজে কৌশলে নিয়েছেন। প্রশাসন তদন্তু করলে রুস্তুম আলীর ভূয়া কাগজপত্রাধি বেরিয়ে আসবে। এছাড়াও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কাছে লিখিত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও রুস্তুম আলী রমজান আলীর ৯ শতক ভূমি প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে আদায় করে নিয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে রুস্তুম আলী বলেন, তিনি বৈধকাগজপত্রাদির মাধ্যমেই দাবিদার হিসাবে গ্রাম্য মায়মুরব্বী গণের উপস্থিতিতে আমার প্রাপ্য ভূমি বুঝিয়ে নিয়েছি। এখানে কোন জোর জবরদস্তি হয়নি।
মুন্সীবাজার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার ইবং হাল বলেন, ভূমিহীন সনাক্ত করে হয়তো চেয়ারম্যান সনদ দিয়েছেন বলেই রুস্তুম আলী ভূমিহীন হিসাবে দাবি করছেন। তবে এটি খতিয়ে দেখার বিষয়।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন