কমলগঞ্জে সাংবাদিককে ওসির ফোন : মাদারচুত, বাঞ্চুত এএসপি সার্কেল কি তোর বাপ!
প্রণীত রঞ্জন দেবনাথ॥ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলগঞ্জের একজন সিনিয়র সাংবাদিককে মুঠোফোনে গালিগালাজ ও হুমকি প্রদান করেন। আকস্মিকভাবে কোন কারণ ছাড়াই সাংবাদিককে এভাবে গালিগালাজ করে হুমকি দেয়ায় কমলগঞ্জসহ গোটা মৌলভীবাজার জেলায় সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ১৪ জুলাই বিকাল ৪টা ১৮মিনিটে প্রথম আলো পত্রিকার কমলগঞ্জ প্রতিনিধি মুজিবুর রহমানকে ব্যক্তিগত মুঠোফান (০১৭১৬-৩৩৪১১৭) নাম্বার থেকে কমলগঞ্জ থানার ওসি বলেন, কোনকিছুই হলেই এএসপি (সার্কেল) এর বক্তব্য নেয়া, তাকে বলে দেয়া কেন? এএসপি (সার্কেল) কি তোর বাপ! মাদারচুত, বাঞ্চুত, ফাজলামির জায়গা পাছ না বলে গালিগালাজ করে ফোন রেখে দেন।
সাংবাদিক মুজিবুর রহমান জানান গত ১২ জুলাই মঙ্গলবার বিকেলে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করেছিল বখাটেরা। এ ঘটনায় ছাত্রীর ভাই প্রতিবাদ করলে বখাটেরা তাকে (ছাত্রীর ভাইকে) মারধর করে। এ ঘটনায় ছাত্রীর ভাই বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ সরেজমিন কোন তদন্ত করেনি। এ বিষয়ে বৃহষ্পতিবার (১৪ জুলাই) দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। পত্রিকার সংবাদ পরে মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোল্লা মোঃ শাহীন বৃহষ্পতিবার দুপুরে সরেজমিন মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করে প্রধান শিক্ষক, ইউপি চেয়ারম্যান ও নির্যাতিতা ছাত্রীর বক্তব্য গ্রহণ করেন।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা যায়, ছাত্রীর ভাই থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও থানা থেকে কোন প্রকার তদন্ত না হওয়ায় পরবর্তীতে নিজে এসে তদন্ত করায় সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোল্লা মো: শাহীন কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
এ প্রেক্ষিতেই ক্ষিপ্ত হয়ে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুল হাসান তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে গালিগালাজ করে হুমকি দেন। থানার ওসির এ ধরণের আচরণে এ প্রতিবেদক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোল্লা মোঃ শাহীন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালালকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে জানান। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোল্লা মো: শাহীন আরও জানান, কমলগঞ্জ থানার ওসি বদরুল হাসান দুই দিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি গেছেন। এ ঘটনার বক্তব্য জানতে জেলা ও উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা কমলগঞ্জ থানার ওসি বদরুল হাসানের সাথে বারবার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ঘটনার পর থেকে কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজার জেলা সদরের সাংবাদিকরা নিন্দা জ্ঞাপন করে দায়ী ওসির অপসারণ দাবী করেন। মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সিনিওর সহ-সভাপতি রাধাপদ দেব সজল, সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ মাহবুব, সাধারণ সম্পাদক এস এম উমেদ আলী, মৌলভীবাজার জেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি বকশী ইকবাল আহমদ, সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমদ, মৌলভীবাজার পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সৈয়দ মহসীন পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোহাইমীন মিল্টন, কমলগঞ্জ প্রেসক্লাব, কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতি, কমলগঞ্জ রিপোটার্স ইউনিটিসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার সাংবাদিকরা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে কমলগঞ্জ থানার ওসিকে প্রত্যাহারের জোর দাবী জানান।
মন্তব্য করুন