কমলগঞ্জে হাওর থেকে ফিরে গবাদি পশু সংক্রামিত হচ্ছে ॥ একমাসে ৩১টি গবাদি পশুর মৃত্যু

March 25, 2017,

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ও মুন্সিবাজার ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে গবাদি পশুর মধ্যে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। দুইটি ইউনিয়নে এক মাসে ৩১টি গবাদি পশু মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর প্রাণি সম্পদ বিভাগে তোড়জোড় শুরু হয়। প্রাণি সম্পদ বিভাগ গবাদি পশুর তড়কা রোগ নয় দাবি করে বলেন, হাওর থেকে ফিরে শ্বাসকষ্ট, গলাফোলাসহ বিভিন্ন রোগে সংক্রমিত হয়ে এসব গবাদি পশু মারা গেছে।
২৪ মাচ শুক্রবারর্ সকালে পতনঊষার ইউনিয়নের দুইটি গ্রাম সরেজমিনে পরিদর্শনকালে কৃষকদের অভিযোগে এসব চিত্র পাওয়া যায়।
শুক্রবার পতনঊষার ইউনিয়নের মনসুরপুর গ্রামের দেওয়ান মিয়ার একটি গরু মারা যায়। ক্ষতিগ্রস্ত গৃহস্থরা জানান, জ্বর, কাঁপুনি, স্লেষা, পাতলা পায়খানা সহ বিভিন্ন উপসর্গে গরু মহিষের আক্রান্তের পর উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের টনক নড়ে। শুরু হয়েছে প্রতিষেধমূলক টিকাদান কার্য্যক্রম। পতনউষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য্য, শ্রীমতপুর, মনসুরপুর, মিনারাই ও মুন্সীবাজার ইউনিয়নের রূপষপুর গ্রামে গরু, মহিষ ও ছাগলসহ ২০টি গবাদি পশু মারা যায়। খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, গত একমাসে পতনঊষার ইউনিয়নের বৃন্দাবনপুরের নোয়াগাঁও গ্রামের উমরা মিয়া, খিজির আহমদ, মসুদ আহমদ ও আব্দুল খালিকের একটি করে মহিষ আর আব্দুল মানিকের ২টি মহিষ, দুরুদ মিয়ার একটি গরু, মাঝগাঁও গ্রামের হারিস মিয়ার একটি মহিষ, বৈরাগিছক গ্রামের লেবু মিয়ার একটি মহিষ, গোপিনগর গ্রামের আশিক মিয়ার একটি মহিষ রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
পতনঊষারের বিশিষ্ট সমাজসেবক আব্দুল হান্নান চিনু বলেন, আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শনের পর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যোগাযোগ করার পর কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ প্রতিষেধক টিকা প্রদান করেছে। তিনি বলেন, যাদের গরু, মহিষ মারা গেছে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এমনকি কেউ কেউ কান্নায়ও ভেঙ্গে পড়ছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের ভিএফএ (মাঠ উপ-সহকারী) ইন্দুভূষণ দেব বলেন, হাওর এলাকায় মহিষ নিয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে সংক্রমিত হয়ে গৃহস্তের বাড়ি ফিরে ছড়িয়ে পড়ায় কয়েকটি গবাদি পশু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তবে এ রোগটি তড়কা রোগ নয়। তাছাড়া আক্রান্ত এলাকায় নিয়মিত ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে প্রতিষেধক টিকা প্রদান করা হচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের ভ্যাটেরিনারী সার্জন হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গবাদি পশু তড়কা রোগে নয় মূলত শ্বাস কষ্ট, গলাফোলাসহ অন্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আক্রান্ত এলাকায় ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে এ পর্যন্ত ২ সহ¯্রাধিক গবাদি পশুর মধ্যে প্রতিষেধক প্রদান করা হয়েছে। ভ্যাটেনারী সার্জন আরও বলেন, শুক্রবার বিকালে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা সরেজমন আক্রান্ত পতনউষার ইউনিয়ন এর আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, তড়কা হোক আর শ্বাস কষ্ট রোগ হোক বেশ কিছু গবাদি পশু মারা গেছে। তাই তিনি সরেজমিন আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন। এ রোগের আর যাতে সংক্রমন না হয় সে জন্য প্রয়োজনে অন্যান্য এলাকায়ও প্রতিষেদক টিকা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com