কমলগঞ্জে হাতবোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণ আহত মাদ্রাসা ছাত্র পুলিশের পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ॥ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক আরও- ১
প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ॥ ঘরের ভিতর হাত বোমা বানাতে গিয়ে কমলগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি চা বাগানে রজব মিয়া (১৬) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রের হাতের আঙ্গুল উড়ে যায়। আহত মাদ্রাসা ছাত্র সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতা সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কালা মিয়া নামে আহত মাদ্রাসা ছাত্রের চাচাকে আটক করা হয়েছে। ১৫ জুলাই শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর এ ঘটনাটি ঘটলেও অতি গোপনীয়তার সাথে দ্রুত নাম পরিবর্তন করে মাদ্রাসা ছাত্রকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ঘটনাটি কমলগঞ্জ থানা পুলিশ রহস্যজনকভাবে নিরবতা পালন করায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে সিলেটে তদন্ত করে আহত মাদ্রাসা ছাত্রকে গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার ১৭ জুলাই থেকে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বিলম্বে প্রাপ্ত তথ্যে প্রথম দফা ও মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ২য় দফা সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর ফুলবাড়ি চা বাগানের ১নং শ্রমিক বস্তির চাঁন মিয়া ওরফে চান্দু মিয়ার ঘরে তার ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র রজব মিয়া (১৬) হাত বোমা বানাচ্ছিল। আকস্মিকভাবে একটি বোমা বিস্ফোরিত হলে তার বাম হাতের দুটি আঙ্গুল উড়ে যায়। আহত রজব মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার দৌলতবাড়ির একটি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে। ঘটনায় ফুলবাড়ি চা বাগান শ্রমিক বস্তিতে আতঙ্ক সৃষ্টি হলেও তার বাবা চাঁন মিয়া ও স্বজনরা অতিগোপনে আহত ছেলেকে নিয়ে চিকিৎিসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ফুলবাড়ি চা বাগানের ১নং শ্রমিক বস্তির খলিল মিয়া ও সুফিয়া বেগম জানান, বিকট শব্দে বিষ্ফোরণ ঘটে। তারা এসে দেখেন চাঁন মিয়ার ঘরে এ ঘটনাটি ঘটে। মাটির দেয়ালের টিন শ্যাডের ঘরে ঘটনার আলামত বিনষ্ট করতে স্থানটি নতুন করে মাটি দিয়ে লেপে দেওয়া হয়েছে বলে মনে হয়। পারিবারীকভাবে বিষয়টি গোপনীয়তা রক্ষা করা হয় বলে তাৎক্ষনিকভাবে বিশেষ কিছু জানা যায়নি। ফুলবাড়ি চা বাগানের ব্যবস্থাপক লুৎফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বাগান পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা জানতে সময় লেগে গেছে দুইদিন। এরই মাঝে রোববার মৌলভীবাজারের সনিয়ির সহকারী পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন সরেজমিন তদন্তে আসলে আসল তথ্য বেরিয়ে আসে।
মৌলভীবাজারের সনিয়ির সহকারী পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে গোপনে তদন্ত করে সিলেটে খোঁজে বের করে রোববার রাতে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। আটক অবস্থায় মাদ্রাসা ছাত্র প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদে স্বীকার করেছে, সে ককটেল বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে সে আহত হয়েছে। সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সে ছদ্ধ নামে ভর্তি হয়। এমনকি একবার ওযার্ডও পরিবর্তন করে। সে কারণে হাসপাতালে প্রশাসনিক কিছু জটিলতার কারণে আহত মাদ্রাসা ছাত্র রজবকে পুরোপুরি সুস্থ্যতা পর্যন্ত পুলিশি পাহারায় চিকিৎসাধীন রাখা হয়। তবে মাদ্রাসা ছাত্রের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার চাচা কালা মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৮ জুলাই সোমবার রাতে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূণ্য তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলেও সহকারী পুলিশ সুপার জানান।
তবে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায় আটক কালা মিয়ার সাথে কমলগঞ্জ থানার সাথে সখ্যতা থাকায় শুক্রবারের ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে কমলগঞ্জ থানা রহস্য জনক কারণে নিরবতা পালন করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল একটি পুলিশি সূত্র জানায়, সুষ্ঠু তদন্তক্রমে বের হবে কেনউ বাবা ককটলে বানাচ্ছিল। কারা কার এর সাথে জড়িত ও কারার তথ্য গোপনের সাথে জড়িত।
মন্তব্য করুন