কমলগঞ্জ থানার ওসির রহস্যজনক ভূমিকা : ওসির সোর্স আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর বাদী হয়ে ৮ ব্যবসায়ীর উপর মামলা
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ কমলগঞ্জ উপজেলায় ওসির সোর্স আন্তজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের সদস্যকে হাতেনাতে ধরে ব্যবসায়ীরা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছিল। পরদিন থানার ওসির রহস্যজনক ভূমিকায় ধৃত মোটরসাইকেল চোর বাদী হয়ে শমশেরনগরের ৮ ব্যবসায়ীর উপর উল্টো মামলা দায়ের করে। ওসির রহস্যজনক ভূমিকায় ক্ষোব্দ ব্যবসায়ীরা। ৮ জুলাই শুক্রবার রাত সাড়ে সাতটায় মোটরসাইকেল চোর মৌলভীবাজারের তানজির মিয়াকে ধরে ব্যবসায়রা পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করলে পরদিন ধৃত চোর বাদী হয়ে শমশেরনগরের আটজনকে বিবাদী করে কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
শমশেরনগর বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল মালিক বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক এম, এ, আউয়াল উজ্জ্বল অভিযোগ করে বলেন, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বর্ষিজোড়া গ্রামের তানভির মিয়া আন্ত:জেলা মোটর সাইকেল চোরচক্রের একজন চিিহ্নত সক্রিয় সদস্য। সে বিভিন্ন জায়গা থেকে মোটর সাইকেল চুরি করে শমশেরনগরসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে। চোরাই মোটরসাইকেল সম্পর্কিত তথ্য সোর্স হিসেবে কমলগঞ্জ থানার ওসিকে অবহিত করে। পরবর্তীতে থানার ওসি কমদামে কেনা চোরাই মোটর সাইকেল জব্দ করে থানায় নিয়ে ক্রেতাদের নানাভাবে হয়রানী করে। এ ব্যাপারে শমশেরনগর বাজারের লোকজন মোটর সাইকেল চোর তানভিরের উপর ক্ষুদ্ধ। ৮ জুলাই রাত ৮টায় মোটর সাইকেল চোর তানভির শমশেরনগর আসার পর এলাকাবাসী তাকে ধরে ফেলে বণিক কল্যাণ সমিতির অফিসে সোপর্দ করে। বণিক কল্যাণ সমিতি আবার এ রাতেই ধৃত চুর তানভিরকে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানার ওসি বদরুল হাসান রাত ১টায় শমশেরনগর এসে উল্টো ব্যবসায়ীদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করে তানভিরকে থানায় নিয়ে যান।
পরদিন ৯ জুলাই রাতে আবার ধৃত মোটর সাইকেল চুর তানভির বাদীর হয়ে শমশেরনগর বাজারের ৮ জন ব্যবসায়ীর উপর হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় শমশেরনগর বাজারের ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করলে ১৩ জুলাই বুধবার দুপুরে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়িতে সরেজমিনে তদন্ত করেন মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোল্লা শাহীন। তদন্তে উপস্থিত ব্যবসায়ীদের সামনেই মোটর সাইকেল চোর তানভির জানায়, মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল আহাদ ফানু ও থানার ওসি বদরুল হাসানের সহযোগিতায় মামলা দায়ের করি। তিনি কোন আসামীকেই চিনেন না বলে জানান। তদন্ত শেষে তানভিরকে কমলগঞ্জ থানায় নিয়ে গেলেও ওসি বদরুল হাসান থানা থেকে তাকে ছেড়ে দেন।
মিথ্যে মামলায় অভিযুক্ত আসামী শমশেরনগর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এনামুল হক শামীম জানান, এলাকাবাসীর ডাকে সাড়া দিয়ে একজন মোটর সাইকেল চোরকে ধরে দেয়ায় এখন মিথ্যে মামলার আসামী হয়েছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ পারভীন আক্তার লিলি বলেন, কমলগঞ্জ থানার ওসি বদরুল হাসান মিথ্যে মামলায় তার ছোট ভাই ব্যবসায়ী এনামুল হক শামীম ও তার ছেলেকে আসামী করে ক্ষান্ত হয়নি, তার মরহুম পিতা মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব:) মোজাফ্ফর আহমদকে নিয়ে প্রকাশ্যে অশালীন গালিগালাজ ও মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে কটাক্ত করেন। পারভীন আক্তার লিলি আরো জানান, থানার ওসি বদরুল হাসান এখন আবার কমলগঞ্জের সিনিয়র সাংবাদিক প্রথম আলো প্রতিনিধি অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান রঞ্জুকে মুঠোফোনে অশালীনভাবে গালিগালাজ করে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। সাংবাদিককে ওসি কর্তৃক হুমকির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কমলগঞ্জ উপজেলা বিআরডিবি চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল বলেন, বিষয়টা দু:খ ও লজ্জাজনক, সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? নিন্দার ভাষা নেই, তারপরও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, বিধান থাকলে শাস্তি পাওয়া উচিৎ, নইলে ভ্দ্রজনেরা সমাজে এক সময় সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। আসলে আমরা যাচ্ছি কোথায়?
মন্তব্য করুন