কমলগঞ্জ ভানুগাছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চড়ুই ভাতি’র আয়োজন
প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ : চড়ুইভাতি শব্দটা শুনলেই বুকের ভেতর খামচে ধরে ছোটবেলার স্মৃতি। শৈশবের স্মৃতিতে ফিরে যেতে কার না ভাল লাগে। ছোট বেলার সেই গোল্লা ছুট, দাড়িয়া বান্দা, রাজা-রানী চা বিস্কুট, ফুলটোকা, চড়ুই ভাতিসহ আর কত মজার মজার স্মৃতি। পুরো বছরজুড়ে থাকে বিভিন্ন পরীক্ষার সঙ্গে এসাইনম্যান্ট। চাইলেই তো আর সেই শৈশবে ফিরে যাওয়া যায় না। তবে চেষ্টা করে দেখতে সমস্যা কোথায়?
রোববার ৫জানুয়ারী সকাল ৯টায় কমলগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকায় অবস্থিত ভানুগাছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায় আনন্দ, হই, উল্লুর ও দৌড়া দৌড়ি।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আয়োজন করল এক ভিন্ন আয়োজন। শিক্ষা জীবনের একবারে শেষ প্রান্তে এসে হাজির তারা। দিনগুলোকে স্মৃতির প্রেমে বন্দী করে রাখার জন্য যত আয়োজন। সবার একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করা উঠে না। খুব অল্পসময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো ‘স্কুল মাঠে’ এ চড়ুই ভাতির আয়োজন।
রান্না-বান্নার জন্য সকাল থেকেই কাজ করে যাচ্ছে নাবিয়া মুসলিম রোকসানা মীম এবং তাকে সহায়তা করছেন তাসনীম জামাত, রাহী, সৌমিক, মাছুম, আকাশ, আসলাম, ফরিদ ও শিক্ষক সহ আরও অনেকে।
শৈশবের রীতি অনুযায়ী কেউ পানি আনা, কেউ আবার কাটাকাটি, কেউ চুলা জ্বালানো, কেউ আবার হাঁড়ি-পাতিল পরিষ্কারের কাজে নেমে গেল। সূর্যটা যখন মাথার ওপরে তখন রান্না-বান্নার কাজ সমাপ্ত।
বিকেল দুইটায় সবাই এক সঙ্গে হয়ে খাবার গ্রহণ করল সবাই। খাবার পরে শুরু হলো বিভিন্ন খেলাধুলা সহ হাঁড়িভাঙ্গা খেলা। তবে সবাই কে সবচেয়ে বেশি মজা এবং স্মৃতিকাতর করেছে ছোটবেলার সেই ফুলটোকা খেলা কোথাও কোথাও এটি বউরানী খেলা নামেও পরিচিত।
কথা হয় ভানুগাছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল প্রধান শিক্ষক ছন্দা বেগম। তিনি জানান, ‘ সিলেটি ভাষায় বলে (টুফাটুফি), তুফাতি বা চড়ুইভাতি খেলার দিন কুয়াশা আচ্ছাদিত সুন্দর সকাল ছিল। নীল আকাশে মেঘের ওড়াউড়ি ও ঝিলমিলে রোদ চারপাশে সোনা ছড়িয়ে ছিল। গ্রামের সঙ্গে তুফাতি বা চড়ুইভাতির একটি আত্মিক যোগ ছিল। বাঙালিয়ানায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে হাজারো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। চড়ুইভাতি তারই একটি অংশ।’
তিনি বলেন, আমাদের এই অনুষ্টানে অনেক সংবাদকর্মী, অভিভাবক, শিক্ষকরা উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত করে তোলেন।
মন্তব্য করুন