করোনাকালের শিক্ষাসেবায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার বৈপ্লবিক উত্থান
সায়েক আহমদ॥ করোনা ভাইরাসের বিষাক্ত থাবায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সারাবিশ্ব। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাও। ৬ আগষ্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ২৯ মার্চ থেকে ৬ষ্ঠ হতে ১০ম শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম সংসদ টিভিতে প্রচার করছে। পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরও ৭ এপ্রিল থেকে প্রাথমিক স্তরের সব বিষয়ে ক্লাস রেকর্ড করে সংসদ টিভিতে প্রচার করছে। এখনও তা অব্যাহত আছে। প্রাথমিকের ক্লাস সকাল ৯টা থেকে ১০:২০ মিনিট পর্যন্ত প্রচার করা হয়। এরপর থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত চলে মাধ্যমিকের ক্লাস। শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অনেকেই এই ক্লাসগুলোকে দেখছেন মন্দের ভালো হিসেবে। অনেকেরই টিভি নেই। কারো বা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে, মেরামত করারও কোন সুযোগ নেই। আবার ক্লাসগুলো নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট অতৃপ্তি। এমনিতেই সিলেবাস শেষ করা কঠিন। পরীক্ষাও থমকে আছে। তারপরও আপদকালীন সময়ে শিক্ষাব্যবস্থা সচল রাখার এটাই সবচেয়ে বড় উপায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে পরীক্ষাগ্রহণ, ক্লাস প্রমোশন, এইচএসসি, জেএসসি পরীক্ষাসহ পাবলিক পরীক্ষাসমূহ। শিক্ষাবিভাগ থেকে এখনও দীর্ঘমেয়াদি কোন পরিকল্পনা প্রকাশ না করায় শিক্ষক-অভিভাবকগণ কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় আছেন। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে দেশে এখন প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় পৌনে দুই কোটি এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ১ কোটি ৩৪ লাখের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে।
বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে যে, এখন দীর্ঘমেয়াদি অনলাইন শিক্ষার দিকে ঝোঁক তৈরি করা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই। কাজেই সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। সারাদেশে ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি যেসব শিক্ষার্থীরা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল, তাঁদেরকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। পাশাপাশি শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের জন্য ল্যাপটপ অথবা স্মার্ট ফোনের ব্যবস্থা করাও জরুরী। সবচেয়ে বড় বিষয় হল সরকারকে কঠোর হতে হবে মোবাইল কোম্পানিগুলোর দিকে। তারা সারা বছরই রক্তচোষার মত জনগণের টাকা শোষণ করে নিচ্ছে। টাকার বিনিময়ে ন্যূনতম নেটওয়ার্ক সুবিধা ছাড়াই তারা হাজার হাজার কোটি টাকা মুনাফা তুলে নিয়েছে এবং এখনও অবিরত নিয়েই যাচ্ছে। সরকারকে অবশ্যই মোবাইল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলাপ করে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে মোবাইল ডেটা ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে হবে। এটা অত্যন্ত জরুরী। কারণ বর্তমান ক্রান্তিকালে এ কার্যক্রম ছাড়া অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত কঠিন।
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীসংখ্যা অনেক বেশি। মজার ব্যাপার হল পৃথিবীর ২০০টি দেশের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি আমাদের শিক্ষার্থীসংখ্যা। কাজেই সরকার এবং জনগণকে দেশের বর্তমান শিক্ষা পরিস্থিতি নিয়ে অবশ্যই দূরদর্শী চিন্তা অব্যাহত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হয়। কারণ দেশের প্রতিকুল পরিবেশেও সরকার দেশের প্রায় শতভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল সুবিধাদি পৌঁছে দিয়েছেন। যদিও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তারপরও তো মোটামুটিভাবেও তথ্যপ্রযুক্তি আমাদের হাতের মুঠোয়ই চলে এসেছে। মনে রাখতে হবে করোনার মতো মহামারি সমস্যায় যখন স্কুল-কলেজে উপস্থিত হওয়া নিরাপদ নয়, তখন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেই শিক্ষার এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে। অবশ্যই এর কোন বিকল্প রাস্তা নেই।
অনলাইনে ক্লাস করার নানা মাধ্যম রয়েছে। তবে তা আমাদের দেশের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যই নতুন অভিজ্ঞতা। তারপরও দেখা যায় ব্যক্তিগতভাবে হলেও ফেসবুক গ্রুপ থেকে শুরু করে গুগল ক্লাসরুম, জুম, ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপসহ নানা মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন শিক্ষকেরা। বর্তমান সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য এবং এর সাথে মানিয়ে নেয়ার জন্য এখন থেকেই আমাদের যুবক-তরুণ এবং শিশু-কিশোরদেরকে বুঝাতে হবে। তাদেরকে সঠিকভাবে দিক নির্দেশনা প্রদান করে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য কোয়ারান্টাইনে বন্দী থাকা দিনগুলোকে কাজে লাগানোর শিক্ষা দিতে হবে। যে বিষয়গুলো শ্রেণিকক্ষে রপ্ত করা সম্ভব হয়নি, এখন তা শিখে নেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
দেশের বেশিরভাগ এলাকাতেই ইন্টারনেটের ধীরগতি কিংবা উচ্চমূল্যের কারণে ক্লাসের সঙ্গে তাল মেলাতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। গোঁদের উপর বিষফোঁড়ার মত রয়েছে অব্যাহত লোড শেডিং এর ভয়াবহ নির্যাতন। অনেক কষ্টে যখন নেটওয়ার্ক পাওয়া গেল, দেখা গেল হঠাৎ করেই সংযোগটা কেটে গেছে, কিংবা কারেন্টই চলে গেছে। এরপরও এসব পরিস্থিতির সাথে মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
সংসদ টিভির পাঠদান কার্যক্রম যথেষ্ট কার্যকর হলেও এ কার্যক্রমের একটি ক্ষুদ্র সমস্যা থাকায় শিক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়েছে। সমস্যাটি হল শিক্ষার্থীরা পাঠদান কার্যক্রমে প্রদান করা হোমওয়ার্কগুলো যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে সম্পন্ন করছে। কিন্তু হোমওয়ার্কগুলোর ভুলত্রুটি তারা নির্ধারণ করতে পারছে না। হোমওয়ার্কগুলো স্কুল খোলার আগে বিষয়শিক্ষকগণকেও দেখানো সম্ভব নয়। আর এত দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীরা তাদের ভুলত্রুটির সমস্যাগুলোই ভুলে যাবে। এরপর রয়েছে আরেকটি বড় সমস্যা। এত বিশাল হোমওয়ার্কের পাহাড় বিষয়শিক্ষকগণ কতদিনে মূল্যায়ন করবেন? এসব বিষয় পর্যালোচনাপূর্বক স্থানীয় পর্যায়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করার গুরুত্ব উপলব্ধি করে শ্রীমঙ্গল উপজেলার চৌকষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বিগত ২৫ জুন স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের সাথে একটি মত বিনিময় সভার আয়োজন করেছিলেন। শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ সেমিনার কক্ষে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দিলীপ কুমার বর্ধন এর সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মত বিনিময় সভায় প্রত্যক্ষভাবে হোমওয়ার্ক মূল্যায়ন এবং অনলাইনে পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় একটি অনলাইন স্কুল কার্যক্রম চালু করার প্রয়োজনীয়তা সবাই উপলব্ধি করেছিলেন। পাশাপাশি স্থানীয় ক্যাবল টিভি মৌলভীবাজার ক্যাবল সিস্টেম/শ্রীমঙ্গল ক্যাবল সিস্টেম (এমসিএস/এসসিএস) এ প্রচার করার গুরুত্বও দেখা দেয়। কারণ আমাদের দেশে অনলাইনে দীর্ঘসময় ধরে ক্লাসসমূহ দেখা কিংবা ডাউনলোড করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তবে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এবং চা শ্রমিক অধ্যূষিত এলাকাসমূহেও ডিশ লাইনের সংযোগ থাকায় ক্যাবল টিভিতে প্রচুর শিক্ষার্থী ক্লাসসমূহ দেখার সুযোগ পাবে। তবে বিভিন্ন কারণে যারা ক্যাবল টিভিতে ক্লাসসমূহ দেখার সুযোগ পাবে না, তারাও যে কোন সময় অনলাইন থেকে ক্লাসসমূহ সংগ্রহ করে নিতে পারবে।
সভাটিতে বিভিন্ন বিষয় খোলাখুলিভাবে আলোচনা করার পর সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ১লা জুলাই অনলাইন স্কুল, শ্রীমঙ্গল এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। মাননীয় জেলা প্রশাসক মিসেস নাজিয়া শিরিণকে উদ্বোধক হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। শ্রীমঙ্গলের ২৬টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ৫টি দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য একই সিলেবাসের আওতায় এবং উপজেলার ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাণে পারদর্শী শিক্ষকমণ্ডলীর উপস্থাপনায় প্রথমে শ্রীমঙ্গল ক্যাবল টিভিতে ক্লাসসমূহ প্রচার করার পরই অনলাইনে সেগুলো প্রচার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। প্রস্তাব উঠেছিল তিনমাস পর অনলাইনে একটি পরীক্ষামূলক মূল্যায়ন পরীক্ষা গ্রহণ করার পরই বার্ষিক পরীক্ষার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দিলীপ কুমার বর্ধনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সঞ্জিত কুমার দাসকে সদস্য সচিব এবং উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানপ্রধানকে সদস্য করে অনলাইন স্কুল, শ্রীমঙ্গল বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
১ জুলাই বুধবার বেলা ১টায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা করোনাকালীন শিক্ষাসেবার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক সাফল্য অর্জন করে। শ্রীমঙ্গল উপজেলার সকল আইসিটি এবং আইসিটিতে দক্ষ শিক্ষকমন্ডলীকে নিয়ে গঠন করা হয়েছিল অনলাইন স্কুল বাস্তবায়ন বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটি। তারা স্বল্পসময়ের মধ্যেই এক সপ্তাহের জন্য একটি রুটিন তৈরি করে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে দক্ষ শিক্ষকগণদেরকে নিয়ে ক্লাস রেকর্ড করতে সক্ষম হন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধানগণ করোনাকালীন বন্ধের মধ্যেও মোবাইল ফোনে এবং মাইকিং করে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকগণের সাথে তড়িৎগতিতে যোগাযোগ করে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করতে সক্ষম হন। কাজেই পুরো উপজেলাজুড়ে অভিভাবকগণ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন এবং শিক্ষার্থীরাও আবার স্কুলের পরিবেশে ফিরে যাবার আনন্দ উপভোগ করে।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমানকে প্রধান অতিথি, জেলা প্রশাসক মিসেস নাজিয়া শিরিন, শিক্ষা বিভাগের সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর কবির আহমদ এবং মৌলভীবাজার জেলা শিক্ষা অফিসার এএসএম আব্দুল ওয়াদুদকে বিশেষ অতিথি করে ঐতিহাসিক সেই ভার্চুয়াল উদ্বোধনী কার্যক্রম শুরু হয়। শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম স্বয়ং সঞ্চালকের ভূমিকা গ্রহণ করেন। জুম মিটিংয়ে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দিলীপ কুমার বর্ধন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও কাকিয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নোমান আহমদ সিদ্দিকী, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী, এমসিএস এর স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম এবং ইমা নামের একজন শিক্ষার্থী।
আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ জুম মিটিংয়ে মাননীয় বিভাগীয় কমিশনার শ্রীমঙ্গল উপজেলাকে একটি অগ্রসর উপজেলা এবং করোনাকালে এ শিক্ষাসেবার উদ্যোগকে বৈপ্লবিক পদক্ষেপ হিসেবে মূল্যায়ন করেন। তিনি জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নিয়মিত মনিটরিং করে এ প্রশংসনীয় উদ্যোগকে সর্বদা কার্যকর রাখার জন্য আহ্বান জানান।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রীমঙ্গল উপজেলা পর্যায়ে গৃহীত এ ধরণের একটি পদক্ষেপকে অবশ্যই একটি বৈপ্লবিক উত্থান বলে অভিহিত করা যায়। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বেশ কয়েকজন আইসিটিতে দক্ষ এবং শ্রেষ্ঠ ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাতা শিক্ষক রয়েছেন। এদের পাশাপাশি আইসিটিতে দক্ষ শিক্ষকরাও উপজেলার সকল দক্ষ শিক্ষকদেরকে তাদের সেরা ক্লাস রেকর্ডিংএ সহযোগিতা করবেন। কাজেই শুধু শ্রীমঙ্গল উপজেলাই নয়, বরং পুরো মৌলভীবাজার জেলার প্রায় চার লক্ষ শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকবৃন্দ এর সুফল উপভোগ করবেন। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীরাসহ সমাজের সর্বস্তরের ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ভাল ভাল শিক্ষকমন্ডলীর ক্লাসগুলোও পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পাবেন। শিক্ষকমণ্ডলীর মধ্যেও একটা প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টি হবে। ক্যাবল টিভিতে ক্লাসসমূহ নিয়মিত প্রচারের সুবিধা থাকায় অনলাইন শিক্ষাদান কার্যক্রমও আরো বেশি জনপ্রিয় হবে। যে শিক্ষক ভাল পড়াবেন, তার ক্লাস অবশ্যই শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দেখবে। এতে করে পুরো শিক্ষাব্যবস্থাই সমৃদ্ধ হবে। আশা করা যায় শিক্ষাবিভাগ এবং নীতিনির্ধারকগণ কর্তৃক বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। যদি এ পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমটি পরিচালনা করা সম্ভব হয় তাহলে অবশ্যই জাতীয়ভাবে অনেক কিছুই পরিকল্পনা করা সম্ভব হবে। করোনা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটলেও কিংবা দেশ করোনামুক্ত হলেও এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এতে করে অভিভাবকগণও আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। যারা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল, তারা ঘরে বসেই দক্ষ শিক্ষকের ক্লাস করার সুযোগ পাবে। এতে করে কোচিং বানিজ্যের হাত থেকে দেশ ও সমাজ রক্ষা পাবে। কাজেই জাতীয় পর্যায়ে নয়, বরং স্থানীয় পর্যায়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করা অত্যাবশ্যক।
[সায়েক আহমদ, প্রাবন্ধিক, কলাম লেখক, শিশু সাহিত্যিক, ০১৭১২৯৬২৩৯৩]
মন্তব্য করুন