করোনাজয়ী প্রবল আত্মবিশ্বাসী একজন জনপ্রিয় জননেতা
সায়েক আহমদ॥
আমরা করব জয়, আমরা করব জয়, আমরা করব জয় নিশ্চয়।
আহা বুকের গভীরে, আছে প্রত্যয়।
আমাদের নেই ভয়, আমাদের নেই ভয়, আমাদের নেই ভয় আজ আর,
আহা বুকের গভীরে, আছে প্রত্যয়।
আমরা করব জয় নিশ্চয়।
আমরা নই একা, আমরা নই একা, আমরা নই একা আজ আর,
আহা বুকের গভীরে, আছে প্রত্যয়।
শত যে সাথী, শত যে সাথী, শত যে সাথী মোদের,
আছে মুক্তি নুতন বক্ষ পাতি, শত যে মোদের সাথী।
আমরা করব জয়, আমরা করব জয়, আমরা করব জয় নিশ্চয়।
করোনা জয় করেছেন অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো.আব্দুস শহীদ এমপি। প্রবল আত্মবিশ্বাস আর দৃঢ় মনোবল নিয়ে তিনি অদৃশ্য শত্রু করোনা ভাইরাসের মুখোমুখি হয়েছেন। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সাহসের সাথে মোকাবেলা করেছেন। অদৃশ্য শত্রুর সাথে প্রবল যুদ্ধ করেছেন। হয়েছেন সুস্থ। তাঁর এই সুস্থতা প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস এবং অনুপ্রেরণা যোগাবে হাজার হাজার কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত রোগীদেরকে।
অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো.আব্দুস শহীদ এমপি’র করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এমপি’র একান্ত সচিব আহাদ মো. সাঈদ হায়দার এবং ব্যক্তিগত সহকারী ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইমাম হোসেন সোহেল এমপি মহোদয়ের করোনা ভাইরাসের প্রথম ফলোআপ রিপোর্ট নেগেটিভ আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় এমপি মহোদয় মহান আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাস্তবমুখী ও সাহসী বিভিন্ন পদক্ষেপে বাংলাদেশের জনগণ চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দেশের উন্নয়নের গতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবেন। এমপি মহোদয় তাঁর নির্বাচনী এলাকা শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব সার্বক্ষণিক চিকিৎসার খোঁজ নিয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এজন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং চীফ হুইপের প্রতিও পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, এমপি মহোদয় গত ১৪ জুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে উনাকে হস্তান্তর করা হয়েছিল। গতকাল ২৪ জুন প্রথম ফলোআপ টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। আজ ২৫ জুন বৃহস্পতিবার সকালে আইডিসিআর থেকে তার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তিনি এখন সুস্থ আছেন। এর আগে এমপি মহোদয়ের ব্যক্তিগত সহকারীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে তিনিও এখন করোনা নেগেটিভ।
মৌলভীবাজার থেকে রেকর্ড টানা ছয়বার এমপি নির্বাচিত হন উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ। তিনি বর্তমান সংসদের অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। ১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ তৎকালীন সিলেট জেলার মৌলভীবাজার মহকুমার কমলগঞ্জ থানার রহিমপুর ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাওলানা আব্দুল বারী এবং মাতা সাজেদা খানম। তিনি বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও ২৩৮ নং (মৌলভীবাজার-৪) আসন থেকে পরপর ছয়বার নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য। তিনি সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একজন সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ হচ্ছেন বাংলাদেশের প্রথম সংসদ সদস্য, যিনি এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ওপর গবেষণায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। তিনি নিজ জেলা মৌলভীবাজারে বসবাসকারী বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর ওপর গবেষণায় পিএইচডি অর্জন করেছিলেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যদের উপস্থিতিতে তাঁর হাতে পিএইচডি ডিগ্রির সনদ আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দিয়েছিলেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান খান। উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান খানের তত্ত্বাবধানে ও অধ্যাপক ড. অসিত বরণ পালের যুগ্ম তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত ‘মৌলভীবাজার অঞ্চলের বিভিন্ন-নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ এবং তাদের ঐতিহ্যবাহী নিদর্শনের পর্যলোচনা’ শীর্ষক গবেষণার জন্য উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ এমপিকে এই ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছিল।
ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপির প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের একটি বড় পাওনা। কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল তথা বাংলাদেশের মাটি ও মানুষকে গভীরভাবে ভালবেসে তিনি একজন জনপ্রিয় জননেতার আসনে আসীন হয়েছেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ, গনপূর্ত, স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি পরলোকগমন করায় তিনি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছিলেন। বিগত ১৩ জুন তাঁর ফেসবুক পেজে তিনি নিম্নের স্ট্যাটাসটি দিয়েছিলেন।
‘বিনম্র শ্রদ্ধা
না ফেরার দেশে প্রিয় নাসিম ভাই,
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এম মনসুর আলীর সন্তান, সাবেক মন্ত্রী (ডাক, টেলিযোগাযোগ, গনপূর্ত, স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক,খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিম এমপি, আজ সকালে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন। আমি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করি যেন উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।’
এর ঠিক একদিন পরই তিনি নিজেও ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিলেন। তাঁর করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের দুঃখজনক সংবাদ শ্রবণ করে এলাকায় নেমে এসেছিল প্রবল আশংকা। ঘরে ঘরে এবং মসজিদে-মন্দিরে প্রিয় নেতার জন্য সবাই আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করেছেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জনগণের প্রার্থনায় সাড়া দিয়েছেন। এ কারণেই তিনি অল্পদিনেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি মহোদয়ের সাথে এবং তাঁর পরিবারের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। আমার পিতার ছাত্র হওয়ার সুবাদে তিনি আমাকে প্রচণ্ড স্নেহ করতেন। এর একটি প্রমাণ পেয়েছিলাম আমি ১৯৯৯ সালে। শমশেরনগর উপজেলা বাস্তবায়ন আন্দোলনের একজন সক্রিয় সৈনিক হিসেবে আমি ব্যক্তিগতভাবে একটি ফাইল নিয়ে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে উপবন ট্রেনযোগে শমশেরনগর হতে রওনা হয়েছিলাম। ট্রেনেই শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থতা অনুভব করছিলাম। ঢাকায় নেমে সংসদ ভবনে গিয়ে তাঁর সাথে দেখা করেছিলাম। কিন্তু আমার শারীরিক অবস্থা দেখে তিনি চমকে উঠেছিলেন। সাথে সাথে তিনি সংসদ ভবনের ডাক্তারের (সম্ভবত ডা. সাদিক) চেম্বারে নিয়ে গিয়েছিলেন। ডাক্তার সাহেবও আমার পালস দেখে চমকে উঠেছিলেন। পালস অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সাথে সাথে আমাকে ঔষধ দিয়ে রেস্ট নেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমার সে অবস্থা দেখে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে গিয়েছিলেন এমপি মহোদয়। এখনো চোখের সামনে সে দৃশ্য ভাসলে তাঁর প্রতি প্রচণ্ড শ্রদ্ধা জাগ্রত হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলায় তখনো কম্পিউটার ব্যবহার শুরু হয়নি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটি কম্পিউটার কিনেছিলাম। এলাকার যুবসমাজকে প্রশিক্ষণ দেয়ার ইচ্ছে জাগ্রত হলে ক্ষুদ্র পরিসরে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালুর চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলাম। এমপি মহোদয়ের বাড়িতে গিয়ে আমার সে ইচ্ছে ব্যক্ত করার সাথে সাথে তিনি আমাকে প্রচণ্ড উৎসাহিত করেছিলেন। আমাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য সে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি তিনি নিজে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ডিসেম্বর মাসেই সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানেও তিনি আবার উপস্থিত হয়ে এলাকাবাসীকে ডিজিটাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
২০১০ সালে আমি যখন বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি, সে সংবাদ পেয়ে তিনি খুবই খুশি হয়েছিলেন। বিটিআরআই গেস্ট হাউসে তাঁর সাথে দেখা করার সাথে সাথেই তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাকে বলেছিলেন, ‘আগামীকালই তোমার স্কুলটা দেখতে যাব।’ পরদিনই তিনি স্কুলে এসেছিলেন। আমি যখন বললাম, ‘স্কুলে একটি শহীদ মিনার খুবই প্রয়োজন’ সাথে সাথেই তিনি শহীদ মিনার নির্মাণে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করেছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি সুদৃশ্য শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছিল। এছাড়া তিনি বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথমবারের মত সরস্বতী পূজা আয়োজনে যেভাবে সহযোগিতা করেছিলেন, বার্ষিক মিলাদ আয়োজনেও তেমনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
২০১০ সালে আমি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে গিয়েছিলাম। তৎকালীন ডিজি মাহফুজুর রহমানের অফিসকক্ষে প্রবেশ করে আমি তাঁকে বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা বুঝাতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু তিনি সব শুনে বললেন, ‘এখন তো সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। নতুন করে আর কোন কম্পিউটার ল্যাব স্যাংশন করা সম্ভব নয়। আমিও নাছোড়বান্দার মত বসে থাকায় তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি যেভাবে জোঁকের মত বসে আছেন, কী করব বলুন? আপনি কি আপনার এলাকার এমপি বর্তমান সরকারি দলের চীফ হুইপের সুপারিশ আনতে পারবেন?’ আমি প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসের সাথে চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করেছিলাম। সাথে সাথে আগারগাঁও থেকে সংসদ ভবনে ছুটে গিয়েছিলাম। যখন চীফ হুইপের কার্যালয়ে প্রবেশ করি, তখন তিনি মৃদুহেসে সাথে সাথে সুপারিশ করে দিয়েছিলেন। আমিও সাথে সাথে আবার আগারগাঁও গিয়ে আবেদনপত্রটি দাখিল করেছিলাম। ডিজি মাহফুজুর রহমান সাথে সাথে সবিস্ময়ে বলেছিলেন, ‘আপনার সৌভাগ্যবান, আব্দুস শহীদের মত একজন জনদরদী নেতা পেয়েছেন।’ এখনও মাহফুজ সাহেবের সেই কথাটি আমার কানে বাজে। মাত্র সাতদিনের মাথায় আমি কম্পিউটার ল্যাবটি পেয়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম।
এমপি আব্দুস শহীদের সরলতা সবাইকে মুগ্ধ করে। তিনি শিক্ষক সমাজের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। শুধু শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জেই নয় বরং সারাদেশের শিক্ষক সমাজের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাবোধ দেখে শিক্ষক সমাজ সর্বদা তাঁর পাশেই অবস্থান করেন। হয়ত নিজেও একসময় শিক্ষক ছিলেন, এ উপলব্ধিই তাঁর মহত্ত্ব আরো বৃদ্ধি করেছে। শিক্ষার্থীদের প্রতি রয়েছে তাঁর গভীর মমত্ববোধ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তিনি সর্বদা অনুপ্রাণিত। তাইতো তাঁকে সর্বদা মানুষের কাছাকাছি অবস্থান করতে দেখা যায়। শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে এমন কোন জায়গা বোধহয় নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ঘটেনি। মানুষের দুঃসময়ে সর্বদা ছুটে চলা যেন তাঁর রক্তের সাথে মিশে গেছে। গ্রাম-গঞ্জের কৃষকদের পাশে যেমনি তাঁকে একাত্ব হয়ে যেতে দেখা যায়, চা-শ্রমিকদের মাঝেও তিনি যেন একাকার হয়ে যান। সেই তিনিই আবার সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে অদ্ভুতভাবে মিশে যান। কোন অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্যে হালকা কিংবা চটুল কথাবার্তা বলতে দেখিনি। আগে সময় পেলেই আমি তাঁর অজান্তেই তাঁর বক্তব্য শুনতে যেতাম। দেখলেই হয়ত কাছে ডাকবেন, এই ভয়ে আড়ালে থাকতেই পছন্দ করতাম। তাঁর বক্তব্য আমার পছন্দ হওয়ার কারণ ছিল একটাই। সেটি হচ্ছে অত্যন্ত জ্ঞানগর্ভ কথাবার্তা তিনি খুব সহজ-সরলভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। এমনকি হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতেও তিনি কঠিন বিষয়কেও উপস্থাপন করতে পারদর্শী। এ কারণে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের টকশো অনুষ্ঠানগুলোতে তিনিই থাকতেন প্রধান আকর্ষণ। তাঁর যুক্তিভিত্তিক ও প্রাঞ্জল উপস্থাপনার ঢংই যেন আলাদা।
এমপি ড. মো. আব্দুস শহীদের জনপ্রিয়তার একটি রহস্য হচ্ছে তিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণের সাথে মুহূর্তের মধ্যেই একাত্ম হয়ে যান। এ অদ্ভুত গুণই তাঁকে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়। প্রত্যেককে আলাদাভাবে সম্বোধন করারও এক অবাক ক্ষমতা তাঁর রয়েছে। অনেক সময় স্টেজে অবস্থান করেও হঠাৎ করে বক্তব্যের মধ্যেও তিনি গুণী ব্যক্তিকে সম্মান প্রদর্শন করে হতবাক করে দিতেন।
এমপি ড. মো. আব্দুস শহীদের বয়স কত? অবাক ব্যাপার, সত্তরোর্ধ এ মানুষটিকে দেখে বুঝাই যায় না তিনি বয়সের ভারে নূব্জ হয়ে গেছেন। চিরতরুণ আব্দুস শহীদ নবীন-প্রবীণের কাছে যেন সমভাবেই আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব।
উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ করোনার সাথে সাহসিকতার সাথে লড়াই করে এ বিষয়টিই বুঝিয়ে দিয়েছেন, লড়াকু ব্যক্তিরাই সর্বদা জয়লাভ করে। সে মুক্তিযুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধাই হোক, কিংবা দূর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা সৈনিকই হোক, কিংবা জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করা সাহসী যোদ্ধাই হোক,- আত্মবিশ্বাসই সবকিছুর উর্ধ্বে। করোণা সংক্রমণের সংকটকালীন সময়ে সরকারের নির্দেশনায় করোনা ভাইরাসকে প্রতিরোধ করাই উত্তম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ কেউ যদি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের শিকারই হয়ে যান, তারপরও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। যদি সত্তরোর্ধ জনপ্রিয় জননেতা করোনা জয়ী হতে পারেন, তবে কভিড-১৯ রোগীদের তো আত্মবিশ্বাস আরো বৃদ্ধি পাবারই কথা।
আসুন সবাই মিলে, এ জনদরদী এবং জনপ্রিয় জননেতার দীর্ঘায়ু কামনা করি। সিলেট বিভাগ তথা বাংলাদেশের গর্ব এমপি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি শতায়ু হোন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে এ প্রার্থনাই করি।
[সায়েক আহমদ, প্রাবন্ধিক, কলাম লেখক, শিশু সাহিত্যিক, ০১৭১২৯৬২৩৯৩]
মন্তব্য করুন