কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষনের পর হত্যার অভিযোগ : ৪ জন গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজারের কলেজছাত্রী শাম্মি আক্তার সুমীকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। শুক্রবার বিকেলে বাড়ির পার্শ্ববর্তী জঙ্গল থেকে সুমীর লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ধর্ষনের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষনের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। তবে মেডিকেল টিমের প্রাথমিক রিপোর্টে ধর্ষনের আলামত রয়েছে বলে জানানো হয়। সুষ্টু বিচারের দাবীতে সহপাঠিরা মাববন্ধন করেছে।
কলেজ ছাত্রী শাম্মি আক্তার সুমী দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। বাবা হারুন মিয়া দিনমজুরের কাজ করেন ও মা নাছিমা বেগম একজন গৃহীনী হিসেবে নিজের সংসার দুঃখ কষ্টে চালাতেন। সপ্ন ছিল সুমী লেখাপড়া করে চাকুরি করবে। কিন্তু সে সপ্ন আর পুরণ হলনা। গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়েছে বলে ঘর থেকে বের হয় তারাপাশা স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সুমী।
পরদিন শুক্রবার সকালে বাড়ির অদূরে জঙ্গলে তার লাশ পাওয়া যায়। পরে রাজনগর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেছে। নিহত শাম্মি’র বাবা-মায়ের দাবী, শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে তারা বুঝতে পারছেন ধর্ষণের পর তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার নিহত শাম্মী’র বাবা হারুন মিয়া বাদী হয়ে রাজনগর থানায় হত্যা মামলা দায়েরের পর পুলিশ রাতে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আলকুম মিয়া, বরকত হোসেন সুমন, মাজহারুল ইসলাম ও দিপু মিয়া নামের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার সাথে তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তবে সুরতহাল রিপোর্র্টে ধর্ষনের আলামত পাওয়া যায়নি, তবে নিহত শাম্মীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানান রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ পলাশ রায় জানান,
তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি কওে মেডিকেল টিম গঠন করে চলছে লাশের ময়নাতদন্ত। প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানান মেডিকেল টিমের প্রধান। দু’এক দিনের মধ্যে পূর্ণঙ্গ রিপোর্ট দেয়া যাবে।
শনিবার ২০ মে দুপুরে তারাপাশা স্কুল এন্ড কলেজের সামনে শাম্মি আক্তার সুমীকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠিরা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম খান, ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ মো. বশারত আলী, শিক্ষক মোবারক হোসেন, শিক্ষক শওকতুজ্জামান, আকবর আলী, টেংরা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান রিপন মিয়া, শিক্ষক রইছ আলী প্রমুখ।
মানবন্ধনে বক্তারা প্রকৃতঘটনা উদঘাটন সহ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
মন্তব্য করুন