কার্ডিফের শহীদ মিনার নির্মানের জন্যে ৬৬ হাজার পাউন্ড দান করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বদরুল মনসুর॥ বৃটেনের ওয়েলসের রাজধানী কার্ডিফ শহরের বে এলাকার ঐতিহ্যবাহী গ্রেইঞ্জমোর পাকে এখানকার বেড়ে উটা নব প্রজন্মের সন্তানদের সামনে আমাদের ভাষা. কৃষ্টি. সংস্কৃতি. ঐতিহ্য.সাফল্য সম্ভাবনা ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপনে বৃটেনের কাডিফে ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাংগুয়েজ মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার যে উদ্দোগ নেওয়া হয়েছিলো তাহা আজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
ফাউন্ডার ট্রাষ্টি. লাইফ ও সাধারন মেম্বার এবং ফ্রেন্ডস অব মনুমেন্ট এর মাধ্যমে সংগ্রহকৃত কালেকশন সহ বাংলাদেশ সরকার ও কার্ডিফ কাউন্টি কাউন্সিল এর সাবিক সহযোগীতায় আজ শহীদ মিনার পুরাপুরি দৃশ্যমান.। ওয়েলসের মাটিতে প্রথম এই শহীদ মিনার প্রজেক্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে ওয়েলসবাসী এক নব ইতিহাসের সূচনা করেছে। ওয়েলসের এই মহতি কাজে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় ৬৬ হাজার পাউন্ড অনুদান প্রদান করে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে.। বৃটেন কমিউনিটির জন্য এটি একটি আনন্দের সংবাদ। বৃটেনের কার্ডিফের ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাংগুয়েজ মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনার এর জন্য মানণীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষ থেকে ৬৫ হাজার ৯ শত একাশি পাউন্ড ছিয়াত্তর প্রেন্সের একটি চেক গত ২১ মে বেলা ৩ ঘটিকায় সেন্ট্রাল লন্ডনের তাজ হোটেলের কনফারেন্স রুমে আনুষ্ঠানিকভাবে বৃটেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হ্যার এক্সেলেন্সি সাইদা তাসনিম মুনার মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে।
কার্ডিফ ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাংগুয়েজ মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনার কমিটির জেনারেল সেক্রেটারী ও মনুমেন্টের ফাউন্ডার ট্রাষ্টি মোহাম্মদ মকিস মনসুর এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি মনুমেন্টের লাইফ মেম্বার সুলতান মাহমুদ শরীফ. যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি নইম উদ্দিন রিয়াজ. যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও মনুমেন্ট ফাউন্ডার ট্রাষ্টি আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী. বৃটেনের ডেপুটি হাইকমিশনার জুলকার নাহেন. প্রেস মিনিষ্টার আসেকুন্নবী চৌধুরী. কার্ডিফ কাউন্টি কাউন্সিলার দিলওয়ার আলী. মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনার কমিটির ডেপুটি চেয়ার ও মনুমেন্ট ফাউন্ডার ট্রাষ্টি মোহাম্মদ সেরুল ইসলাম. শহীদ মিনার কমিটির ট্রেজারার ও মনুমেন্ট ফাউন্ডার ট্রাষ্টি আনহার মিয়া. মনুমেন্টের ফাউন্ডার ট্রাষ্টি শেখ মোহাম্মদ তাহির উল্লাহ.মনুমেন্টের ফাউন্ডার ট্রাষ্টি মোহাম্মদ মুজিব. মনুমেন্টের ফাউন্ডার ট্রাষ্টি আব্দুল লতিফ কয়সর. মনুমেন্টের ফাউন্ডার ট্রাষ্টি আলহাজ্ব আসাদ মিয়া. মনুমেন্টের ফাউন্ডার ট্রাষ্টি আব্দুস সালাম বুলবুল. মনুমেন্টের ফাউন্ডার ট্রাষ্টি শামীম আহমদ.ও মনুমেন্টের ফাউন্ডার ট্রাষ্টি শফিক মিয়া সহ হাইকমিশনের অনান্য কমকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বৃটেনের হাইকমিশনার হ্যার এক্সেলেন্সি সাইদা মুনা তাসনিম বলেন- ওয়েলসের মাটিতে বাংলাদেশের কৃষ্টি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরার মানসে আপনারা যে কাজ করেছেন আমি অভিভূত. দেশের বাহিরের এধরনের প্রজেক্টের জন্য এত বড় এমাউন্ট এর আগে বাংলাদেশের কোন প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই ; মাল্টি কালচারাল ও মাল্টিন্যাশন্যালের বৃটেনের ওয়েলসের মাটিতে জাতি বন” নিবিশেষে সকল ভাষার মানুষের সামনে বাংলাদেশের কৃষ্টি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম গঠনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এই অনুদান প্রদান করেছেন বলে উল্লেখ করে হ্যার এক্সেলেন্সি বলেন হাইকমিশন সব সময় আপনাদের এই প্রজেক্টের সাথে ছিলো এবং আগামীতে ও হাইকমিশনার থেকে সব ধরনের সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ ওয়েলস কমিউনিটির এই মহতি উদ্দ্যোগে আমি শরীক হতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি আজ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে অনুদান প্রদান করায় সরকারকে ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন- এটা একটি ঐতিহাসিক কাজ সম্পাদন করেছে ওয়েলসবাসী. মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাপোর্টের জন্য আমি ও এই কাজে পাচ হাজার পাউন্ড দিয়ে একজন ফাউন্ডার ট্রাষ্টি হতে পেরেছি এটা অবশ্যই আনন্দের ও গৌরবের। বৃটেনের কার্ডিফ কাউন্টি কাউন্সিলার দিলওয়ার আলী বলেন আজ ১৩ বছরের অক্লান্ত পরিস্রমে আমাদের সবার প্রানের সপ্নের বাস্তবায়ন হয়েছে। মনুমেন্ট কমিটির ডেপুটি চেয়ার মোহাম্মদ সেরুল ইসলাম ও ফাউন্ডার ট্রাষ্টি শেখ তাহির উল্লাহ ওয়েলসবাসীর সপ্নের শহীদ মিনার দৃশ্যমানে বাংলাদেশ সরকার সহ যারা সহযোগীতা করেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
শহীদ মিনার কমিটির জেনারেল সেক্রেটারী মোহাম্মদ মকিস মনসুর ফাউন্ডার ট্রাষ্ট কমিটির পক্ষ থেকে বৃটেনের ওয়েলসের কার্ডিফের ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাংগুয়েজ মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনারের জন্য প্রায় বায়াত্তর লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকার এই অনুদান প্রদান করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহেনা. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বৃটেনের হাইকমিশন এবং কাডিফ কাউন্টি কাউন্সিল সহ সকল দাতা সদস্যদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন বৃটেনের ওয়েলসের মাটিতে নিমিত প্রথম এই শহীদ মিনার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে উদ্ভোধন করার জন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমন্ত্রণ জানিয়েছি। ওয়েলসবাসী অতি আগ্রহে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছেন বলে তিনি অভিমত ব্যাক্ত করেছেন।
চেক গ্রহণের পর বৃটেনের কার্ডিফের ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাংগুয়েজ মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনার কমিটির নেতৃবৃন্দ তাজ হোটেলে অবস্থানরত বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ মহোদয় এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎে মিলিত হয়ে শহীদ মিনার প্রতিষ্টার বিভিন্ন পটভূমি তুলে ধরেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে এই মহতি প্রজেক্ট বাস্তবায়নে সহযোগীতা করার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে আবার ও কৃতজ্ঞতা অভিনন্দন জানানো হয়েছে। কার্ডিফের ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাংগুয়েজ মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনার কমিটির জেনারেল সেক্রেটারী মোহাম্মদ মকিস মনসুর ফাউন্ডার ট্রাষ্ট কমিটির ওয়েলস থেকে আগত প্রতিনিধিদলকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে নেতৃবৃন্দ মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও শহীদ মিনার ছবি সম্মলিত স্মারক এবং ওয়েলস যুবলীগের প্রকাশনা ওয়েলসের ইতিহাসের প্রথম স্মারক গ্রন্থ হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু ম্যাগাজিন প্রদান করেছেন। বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ মহোদয় বৃটেনের কার্ডিফে বাঙালীরা এরকম একটি চমৎকার প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করায় আনন্দ ও সন্তোষ প্রকাশ সহ প্রজেক্টের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এখানে উল্লেখ্য যে দীর্ঘ ১৩ বছরের অক্লান্ত পরিস্রমে ও কমিউনিটির প্রচেষ্টায় বৃটেনের ওয়েলসের ইতিহাসে কার্ডিফ শহরের এই প্রথম শহীদ মিনারটি আজ দৃশ্যমান. গত ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে ওয়েলসবাসী নব ইতিহাসের সূচনা করেছে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তারিখের উপর আগামীতে ওয়েলসের এই প্রথম শহীদ মিনার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ভোধন করার হবে বলে মনুমেন্ট ফাউন্ডার ট্রাষ্ট কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ।
মন্তব্য করুন