“কালের খেয়ায় গাঙচিল, একজন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনঃ অনুসন্ধানী সাংবাদিক-সম্পাদক মুশতাক চৌধুরীর একটি সময়োপযোগি-প্রাসঙ্গিক নান্দনিক প্রকাশনা- শুভ কামনা।
মুজিবুর রহমান মুজিব॥ সর্ব শক্তিমান-আমাদের মহান সৃষ্টাও প্রতিপালক আমাদের মহাপ্রভূ- মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের মায়াময় অপরূপ সৃষ্টি এই রং এর দুনিয়া। মায়াময় এই মাটির পৃথিবীর বাসিন্দা মানবজাতি-আশরাফুল মখলুকাত-নররূপী নারায়ন। মহান মালিকের অফুরান দয়া মায়া, মানুষের মেধাও মনন, প্রজ্ঞাত পান্ডিত্য, শিক্ষা ও জ্ঞান আশরাফুল মখলুকাতকে শ্রেষ্টত্বের মর্য্যাদা দিয়েছে। মানবজাতির অগ্রযাত্রা অগ্রাভিযানের ইতিহাসে আইনের আবিষ্কার, প্রয়োগ আইনের শাসন-আইনী সমাজ প্রতিষ্টা গৌরব্বোজ্জল ও ঐতিহাসিক অধ্যায়। গ্রাম সরকার থেকৈ বিশ্ব সমাজের সংস্থা সম্মিলিত জাতিসংঘ- ইউএনও-একটি আইনগত কাঠামোর উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে। দুটি বিশ্বযুদ্ধ মানব সভ্যতা ও মানব জাতির ভিতকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। জাপানের হিরোশিমা ও নাগা সাকিতে ভয়াবহ আনবিক বোমার বেদনা ও ক্ষত চিহ্ন এখন ও বিদ্যমান। লীগ অফ নেশনস এবং সম্মিলিত জাতি সংঘ-বিশ্বব্যাপী শান্তিও আইনের শাসন কায়েমের জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মানবিক উদ্যোগ ও আয়োজন ছিল। বিবাদমান আধুনিক বিশ্বে জাতি সংঘের সদস্য রাষ্ট্র সমূহ সংঘের আনুন কানুন বিধি বিধান মেনে চলতে বাধ্য। এই জন্য জাতি সংঘের রয়েছে নিজস্ব বাহিনী। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতি সংঘের শান্তি সেনা-পিসকোর-ঐতিহাসিক অবদান রাখছেন। জাতি সংঘ পিসকোরে যোগ দেয়া বাংলাদেশী শান্তি সেনাগণ চমৎকার পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ইমেজ ও সুনাম বৃদ্ধি করেছেন-করছেন। দেশে-বিদেশে আইনের শাসনের বিকল্প নাই। দেশে-বিদেশে আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী হলেন পুলিশ। অনলি পুলিশ ইজদিল, এনফোর্সিং এজেন্সি। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম- এ দেশের জন্মের সময় নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে প্রশিক্ষিত ও পোষাকি বাহিনী হিসাবে পুলিশ মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। আধুনিক কালে পুলিশ বাহিনীতে যুগ উপযোগি ব্যাপক ও প্রয়োজনীয় সংস্কার না হলেও প্রশিক্ষন, আধুনিকায়ন, লোকবল, অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আইন শৃংঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রন ও উন্নয়ন, জঙ্গীঁ দমন, সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী অভিযানে পুলিশ বাহিনীর জান বাজি ভূমিকা মিডিয়া ভূবন জনগণ কর্তৃক প্রশংসিত। ওসি প্রদীপ, ডি.আই.জি মিজান সাহেব-বাবু দেব অর্থ লিপ্সা, লালসা ও নীতিহীন দূর্নীতি দেশবাসী কর্তৃক নিন্দিত। পুলিশ প্রশাসন ও দূর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের দায় নেয়নি, বরং বিভাগীয় আইনী ব্যবস্থার সম্মুখীন করেছেন। পেশাগত ভাবেও পুলিশ বিভাগের চাকরি বিরামহীন-রাউন্ড দিক্লক, বিরক্তিকর, কঠিন, জটিল ও বিব্রতকর। পুলিশ বিভাগে জেলা পর্য্যায়ে পুলিশ সুপার পদটি জেলার মধ্যে সম্মান, মর্য্যাদা ও ক্ষমতাধর। জেলা পুলিশের প্রধানও অভিবাভক। ইচ্ছা করলেই মর্য্যাদা, ক্ষমতা ও আইন প্রয়োগ করে অনেক ভালো কাজ করা যায়। সাম্প্রতিক কালে রাজনৈতিক প্রভাব, বিত্তবানদের বাহাদুরি, গড ফাদার, কেডার-মাস্তানদের দৌরাত্ব ও উপদ্রব্য পুলিশ বাহিনীকে নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালনে হিমসিম খেতে, বেগ পেতে হয়। এমন বিব্রতকর অবস্থার মাঝে ও কিছু পুলিশ কর্মকর্তা সততা, নিরপেক্ষতা বজায় রেখে জনস্বার্থে মানবিক ভাবে দায়িত্ব পালন করেন, এমন একজন মানবতাবাদি পুলিশ কর্মকর্তা, পুন্যভূমি সিলেট জেলার সুদক্ষ পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ। ত্রয়োদশ শতাব্দীর খ্যাতিমান ওলি আল্লাহ পিরানে পীম ইয়েমেনী বীর হযরত শাহ জালাল ইয়েমেনীর স্মৃতি ধন্য পূন্যভূমি সিলেট তিনশথ ষাট আউলিয়ার মুল্লুক হিসাবে খ্যাত ও পরিচিত। পূন্যভূমি সিলেটের সামাজিক সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সম্প্রিতি ও সৌহার্দের খ্যাতি দেশজুড়ে। তুলনামূলক ভাবে আইন শৃংঙ্খলা পরিস্থিতি ও উন্নত।
সাম্প্রতিক কালে ভয়াবহ বৈশ্বিকব্যাধি কোভিড নাইনটিনে বিশ্বব্যাপী হতাশা ও ভীতি, ঘাতক ব্যাধি করনা ছোয়াছে বিধায় সেলফ কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন, সশিয়্যাল ডিসট্যেন্স এবং অনেকের মাঝে ইয়ানফসি-ইয়ানফসি-অবস্থা তখন আর্ত মানবতার সেবায় প্রশাসন, সেনাবাহিনী পুলিশ, সংবাদ কর্মি, এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী জনগণ এগিয়ে আসেন। জীবনের যুকি নিয়ে করনা আক্রান্ত রুগীদের সেবা দান করেন। দেশ ও জাতির এই ক্রান্তি ও মহাসংকট কালে সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন সমগ্র সিলেট জেলা ব্যাপী মানবিক সেবা কার্য্যক্রম দিয়ে সিলেট বাসিও মিডিয়া ভূবন কর্তৃক প্রশংসিত হন।
আধুনকি বিশ্বে মিডিয়া রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসাবে খ্যাত ও স্বীকৃত। ষাটের দশকের শুরুতে বাঙ্গাঁলি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের একজন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংঘটক হিসাবে সাংবাদিকতায় সম্পৃক্ত হই। তখন মিডিয়া ভূবনে দৈন্যতা ছিল রাজনৈতিক নিপিড়ন ছিল এখন মিডিয়া ভূবনে পূর্নতা এসেছে, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার আর্বিভাব ও ব্যবহারে মিডিয়া ভূবনে, শান শওকত মান মর্য্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে, সৌকর্য-সৌন্দর্য্য-পূর্ণতা এসেছে।
মনু কলের কাগজের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক অনুজ প্রতিম মুশতাক চৌধুরী ইতিমধ্যে একজন পরিশ্রমী ও অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসাবে খ্যাতি ও স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। ইতিহাস ও ঐতিহ্য সচেতন সাংবাদিক মুশতাক চৌধুরী মনুকলের কাগজ প্রকাশনা ও সম্পাদনের সাথে সাথে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ব্যক্তিত্ব বর্গের কর্ম ও জীবন দর্শনের উপর স্মারক গ্রহ্ণ প্রকাশ করে সর্ব মহল কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছেন। সাংবাদিক মুশতাক চৌধুরীর সম্পাদনায় ইতিপূর্বে একজন শ্যামল বনিক, মরহুম সমাজ কল্যানমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসীন আলীর কর্ম ও জীবন নিয়ে স্মারক গ্রহ্ণ অকোত ভয়, শিক্ষানুরাগি ও শিল্পপতি এম.এ.রহিম সি.আই.পিকে নিয়ে নক্ষত্র জ্যোতি, বৃটিশ ভারতের বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগি আফতাব উদ্দিন হাইস্কুলের প্রতিষ্টাতা একজন শিক্ষানুরাগি আফতাব উদ্দিন মিরাশদার পাঠক মহলের প্রশংসা প্রাপ্ত হয়েছে। পরিশ্রমী সাংবাদিক-বিশেষজ্ঞ সম্পাদক মুশতাক চৌধুরী সিলেটের মানবতাবাদি পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনের মানবিক কার্য্যক্রম সম্বলিত গ্রহ্ণ কালের খেয়ায় গাঙচিল একজন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। মনুকুলের কাগজ প্রকাশনীর পক্ষ থেকে গেলে অক্টোবরে প্রকাশিত উক্ত গ্রহ্ণের মোড়ক উন্মোচিত হয় গত মধ্য জানুয়ারীতে। সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত মোড়ক উন্মোচনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় অতিরিক্ত সচিব, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক আনোয়ার চৌধুরী, মোড়ক উন্মোচন করেন সিলেটের রেঞ্জ ডি, আই, জি, বিশিষ্ট লেখক মফিজ উদ্দিন আহমদ সাহেব। সম্পাদক মুশতাক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শুভানুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের এস.পি. মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। ব্যতিক্রমী এই গ্রহ্ণের মোড়ক উন্মোচনী অনুষ্ঠানের মূখ্য আলোচক ছিলেন বৃহত্তর সিলেটের বর্ষীয়ান সাংবাদিক-প্রবীন আইনজীবী মুজিবুর রহমান মুজিব। কাজি মৌলানা মোফাজ্জল হোসেন মহিলা কলেজের প্রিন্সিপাল কবি মোহাম্মদ ইকবাল বিশিষ্ট সাংবাদিক এডভোকেট নুরুল ইসলাম শেফুল প্রমুখ আলোচকগণ গ্রহ্ণের গুরুত্ব আরোপ করতঃ সম্পাদক মুশতাক চৌধুরীর মেধা ও মননের ভূয়শী প্রশংসা করেন। দুইশত আটচল্লিশ পৃষ্টার আকর্ষনীয় এই গ্রহ্ণে সিলেটের জনবান্ধব পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনের মানবিক কার্যক্রম এবং তাঁর জীবন দর্শন নিয়ে ছাব্বিশটি প্রাসঙ্গিঁক প্রবন্ধ, পনেরোটি কবিতা, একটি ছড়া, একটি গীতি কবিতা এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক সমূহের পেপার কাটিং ও অসংখ্য আকর্ষনীয়-দৃষ্টি নন্দন আলোক চিত্র স্থান পেয়েছে। গ্রহ্ণের রচনা গুলির মধ্যে বিটাকের চেয়ারম্যান মাননীয় অতিরিক্ত সচিব, ঢাকাস্থ জালালাবাদ এসোসিয়েশন এর সহ-সম্পাদক আনোয়ার চৌধুরী তাঁর মূল্যবান রচনা “মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন একজন
অনুস্মরনীয় পুলিশ কর্মকর্তা” তে ব্যাপক বিস্তৃত আলোচনা করেছেন। প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসাবে সচিব আনোয়ার চৌধুরী তাঁর অভিজ্ঞতার আলোকে প্রশঅসন ও জনগণ প্রসঙ্গেঁ আলোকপাত করেছেন। সিলেটের বিশিষ্ট গীতি কবি উস্তার উদ্দীনের গীতি কবিতাটি যথার্যই উপভোগ্য। গাংচিলের বর্ণ বিন্যাস, সাত রং পৃন্টার্স, মৌলভীবাজার। মুদ্রনে, আসলাম পৃন্টার্স, ফকিরাপুল, ঢাকা। গ্রহ্ণে ছাপা খানার ভূতের কিঞ্চিত দৌরাত্ব আছে। এস.পি.ফরিদ উদ্দিনের ছবি সমতে ঢাকাই পচ্ছদ শিল্পী মুস্তাফিজ কারিগর, শিল্প সম্মত শৈল্পিক কারু কার্য্যই উপহার দিয়েছেন। বহুরঙ্গাঁ প্রচ্ছদ আকর্ষনীয় রুচিশীল। মেজাজি। আকর্ষনীয় বোর্ড বাঁধাই মনলোভা। গ্রহ্ণের সর্বাধিক আকর্ষনীয় ও দৃষ্টি নন্দন দিক ভিতরের আকর্ষনীয় গ্লসিসিল্কি কাগজ। দামী কাগজ ও আকর্ষনীয় বোর্ড বাঁধাই গ্রহ্ণ খানাকে দৃষ্টিনন্দন, আকর্ষনীয়, মেজাজি, মনোহর করেছে। এমন ঝকঝকে গ্রহ্ণের মূল্য মাত্র পাঁচশত টাকা খুব বেশি নয়।
বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্প মূলত একুশের বই মেলাকেন্দ্রীক মেলায় প্রকাশিত হাজার কতেক গ্রহ্ণের মধ্যে মান সম্মত গ্রহ্ণ হাজার খানেক ও নয়। ধর্ম, বিজ্ঞান, মুক্তিযুদ্ধ, কম্পিউটার ও গবেষনা সংক্রান্ত গ্রহ্ণের সংখ্যা কতেক শত মাত্র। পঠন, পাঠন প্রকাশনা শিল্প ও পাঠাগার আন্দোলনকে বেগবান, মেধাও মননের অধিকতর চর্চা, একটি জ্ঞান ভিত্তিক ডিজিটাল সমাজ বিনির্মানের জন্য প্রকাশনা শিল্পকে শিল্পের মর্য্যাদা, অমর একুশের বই মেলাকে বই মেলার চেতনাকে বাংলা একাডেমী থেকে সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিলে পঠন পাঠন পাঠাগার পাঠাভ্যাস ও প্রকাশনা শিল্পান্দোলন অধিকতর বেগবান হবে।
প্রকাশনা শিল্প জাতীয় পর্য্যায়েই সংকট কালে থাকলেও পীরানে পীর ইয়েমেনী বীর হযরত শাহ জালালের স্মৃতি ধন্য পূন্য ভূমি-সিলেট আধুনিক কালে শিল্প সংস্কৃতি-প্রকাশনা শিল্পেও অনেকাংশেই এগিয়ে।
একটি উপজেলা নয়, একটি পল্লী গ্রামে বসবাস করেও পরিশ্রমী সাংবাদিক মুশতাক চৌধুরী কালের খেয়ায়, গাংচিল একজন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন- ব্যতিক্রমী স্মারক গ্রহ্ণ প্রকাশ করলেন-দেখালেন তিনি ও পারেন।
এমন এক খানি পরিচ্ছন্ন মানসম্মত ব্যতিক্রমী ও মেজাজি গ্রহ্ণ প্রকাশ ও সম্পাদনার জন্য স্নেহ ভাজন সম্পাদক মুশতাক চৌধুরীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। এই গ্রহ্ণের বহুল প্রচার কামনা করি।
[ষাটের দশকের সাংবাদিক। মুক্তিযোদ্ধা। মৌলভীবাজার জেলাবার ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি। সিনিয়র এডভোকেট হাইকোট]
মন্তব্য করুন