(ভিডিওসহ) কুদালী ছড়া খননের সফলতা : বৃষ্টির পর স্বস্তির নিঃশ্বাস : পৌর মেয়রের প্রশংসনীয় উদ্যোগ
বিশেষ প্রতিনিধি॥ তিনদিন ধরে দিনে ও রাতে বৃষ্টি হচ্ছে। কোদালীছড়া দিয়ে দ্রুত বুষ্টির পানি নেমে যাওয়ায় যে সব এলাকায় জলাবদ্ধতা হতো এসব এলাকাগুলোতেও পানি নাই। ছড়াটি পরিষ্কার, স্থানে স্থানে সম্প্রসারিত, পরিচ্ছন্ন করার কারণে দ্রুত পানি নেমে যাচ্ছে খনন কৃত কোদালী ছড়া হয়ে হাইল হাওরে। বৃষ্টির শুরু অর্থাৎ এই মৌসুমে মৌলভীবাজারবাসীর দুঃখ কোদালীছড়াটি সুখের মুখ দেখাছে।
কারো বাসাবাড়িতে পানি নেই, রাস্তাঘাটে পানি নেই। শহরের ফাটাবিল, সার্কিট হাউস এলাকা, টিবি হাসপাতাল সড়ক, আরামবাগ, সৈয়ারপুরসহ যে সব এলাকাগুলোতে বৃষ্টি দিলেই পানি ওঠতো সেসব এলাকাগুলোতে এখন কোন পানিই নেই। শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, অফিসগামী লোকজন এখন যার যার কাজে স্বাচ্ছন্দে বের হচ্ছেন।
অপরদিকে পশ্চিম ধরকাপন, শেখের গাঁও, বড়কাপন, দ্বারক ও বড়হাট এলাকায় বিগত মেয়রের আমলে অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মান করে যে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল তা নিরসনে সফলতার দাবীদার মেয়র। এ সব এলাকায় শুষ্ক মৌসুমে দেড় থেকে ২ ফুট পানি লেগে থাকতো। তলিয়ে যেত রাস্তা সহ বাসা-বাড়ি। পূর্বের ড্রেন অপসারণ করে শুধু পরিকল্পিত ড্রেন নির্মানেই সুফল পেল এলাকাবাসি।
এই প্রশংসনীয় উদ্যোগের দাবীদার মৌলভীবাজারের পৌর মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান। তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগে আজ অন্তত তিনটি ওয়ার্ডের নাগরিক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।
গত তিন মাসে মেয়রের নির্দেশে কোদালীছড়ায় দফায় দফায় কয়েক সহ¯্রাধিক শ্রমিক ও কয়েকটি এক্সেবেটর দিয়ে কোদালীছড়াটি খনন করে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। কয়েক যুগের জঞ্জাল পরিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর সুফল আজ সকলেই ভোগ করছেন। একটি সিদ্ধান্ত যে হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি বদলে দিয়ে স্বস্তি ফিরে আনতে পারে তাঁর জ্বলন্ত প্রমাণ এই কোদালীছড়া। আমরা মেয়রের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কোদালীছড়ার অসমাপ্ত কাজগুলোকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শহরের প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাজগুলো ও তিনি একটি সুন্দর পরিকল্পনায় এনে কাজ করবেন এই আশাবাদ রাখছি।
চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারী কোদালীছড়া খননে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে স্বেচ্ছাশ্রমে সারাদিন কর্মসূচী পালন করেন, প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, রাজনৈতিককর্মী, স্বেচ্ছাসেবক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহ¯্রাধিক মানুষ।
মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসীন, জেলা প্রশাসক মোঃ তোফায়েল ইসলাম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যন আলহাজ¦ আজিজুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নেছার আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান, পৌর মেয়র আলহাজ্ব মোঃ ফজলুর রহমান, চেম্বার সভাপতি মোঃ কামাল হোসেন সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি বে-সরকারি ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাক্তি বাঁশ, টুকরি, কোদাল নিয়ে মাটি কেটেছেন। পরিষ্কার করেছেন ছড়ায় ভরা ঝোপ-জঙ্গল সহ নানা জঞ্জাল। মেয়রের এই উদ্যোগ ও আন্তরিকতায় সফলতার মুখ দেখে।
এরপর থেকে কোদালীছড়ার আশেপাশের বাসাবাড়ির মালিক ও পৌর নাগরিকরা এই কাজে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে কাজ দ্রুত এগিয়ে চলে। মার্চের শেষের দিকেই কাজ টার্গেট অনুযায়ী কাজ সমাপ্ত হয়। আর এই কাজে মেয়রের আন্তরিকতার পাশাপাশি পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর ও কয়েকজন পৌর কর্মকর্তা ও কর্মচারীর আন্তরিকতার উপস্থিতি ছিল প্রকট।
অপরদিকে প্রেসক্লাবের সম্মুখের অংশে ব্রিজের পাশ থেকে কিছু মাটি ভরাট করে একটি গাইড ওয়াল নির্মাণ করে এখানে পৌর নাগরিকের বিনোদনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তাঁর সুফল এই এলাকার মানুষ পাবে। এছাড়া কোদালীছড়ার নিম্নঅঞ্চলের যে অংশ দিয়ে পানি নিষ্কাষণ হয় সেসব অংশে যাতে কৃত্রিম বাঁধ নির্মাণ করে পানি প্রবাহ বাঁধাগ্রস্থ কেউ করতে পারেনা সেদিকে সার্বক্ষণিক নজর দিতে হবে।
স্থানীয় নাগরীকের পৌর মেয়রের কাছে দাবী, খাল খনন করে তিনি থেমে থাকলে হবে না। কিছু সংখ্যক মানুষ খনেরপরও বাসা-বাড়ির ময়লা, পলিথিন, প্লাষ্টিক বোতল, বস্তাভরা ময়লা কুদালী ছড়ার ফেলছেন, এ বিষয়ে জরুরীভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।এ ছাড়া কুদালী খালের পাড়ে যদি ফলদ ও বনজ বৃক্ষ রোপন করে হাঁটার রাস্তা তৈরী করে দিলে কোদালীছড়া স্থায়ী পানি নিষ্কাষণে থাকবে কোদালীছড়ার প্রান। এতে করে মৌলভীবাজার শহর পিংক সিটির রুপ পাবে।
মন্তব্য করুন