কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় যুবতীর উপর মধ্যযুগীয় বর্বরতা, শালা-দুলা ভাই কারাগারে
হারিস মোহাম্মদ॥ কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার বেলাগাও গ্রামের সুমি আক্তার (২৪) নামে এক যুবতীকে কুপিয়ে জখম করেছে মোঃ সায়েল আহমদ ওরফে শাকিল (২২) নামের এক যুবক। শাকিল উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর কুচাইরতল গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে।
শুক্রবার ২৬ আগস্ট থানায় মামলা হলে (মামলা নং-১২,তারিখ-২৬ আগস্ট) পুলিশ ভোরে অভিযুক্ত আসামী শাকিল ও এ ঘটনার সাথে জড়িত তার বোনের জামাই লুৎফুর রহমান (৩৫) কে গ্রেফতার করে।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও নির্যাতিতার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হামলার শিকার সুমি আক্তারের স্বামী মারা গেলে সে একমাত্র সন্তান কে নিয়ে বাবার বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। তার বাবা দিনমজুর হওয়ায় সে ভবানীগঞ্জ বাজারের একটি পার্লারে কাজ নেয়। পার্লারে আসা যাওয়ার পথে মোঃ সায়েল আহমদ উরফে শাকিলের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে সুমির উপর। সে প্রায় সময় তাকে রাস্তায় পেয়ে কু-প্রস্তাব দিত। এতে কোন ভাবেই সুমি সাড়া না দেওয়ায় তাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দমকি দিতে থাকে। সুযোগ খোঁজতে থাকে সায়েল। সে তার ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য গত ৮ আগস্ট একা পেয়ে সুমির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে মোবাইলটি ফেরত দেওয়ার কথা বলে সুমিকে সায়েলের বাসার সামনে (জুড়ী রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন) আসতে বলে। সুমি সেখানে গেলে আগে থেকে উৎ পেতে থাকা সায়েল ও তার বোনের জামাই টেনে হেঁচড়ে তাকে বাসার ভিতরে নিয়ে যায়। বাসার ভিতর নিয়ে দরজা আটকিয়ে তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে সায়েল ছুরি দিয়ে সুমির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এসময় সুমি চিৎকার করলে তাকে উদ্ধারে ভয়ে আশপাশের কেউ এগিয়ে আসে নি। এতে সুমি মারাত্মক আহত হলে সায়েলের বোন রিনা বেগম (২৮) তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মুমূর্ষ অবস্থায় সেখানে ফেলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে সুমির দিনমজুর বাবা হাসপাতালে ছুটে যান। সুমির অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ সে পিত্রালয়ে ফিরে আসে। সুমির উপর নির্যাতন মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। গতরাতে থানায় হাজির হয়ে ওসির কাছে সুমি তার উপর পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দেন এবং নিজে বাদী হয়ে তিন জনের বির”দ্ধে মামলা দায়ের করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সিরাজুল ইসলাম বলেন, আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ঘটনার বর্ণনা মেয়েটির কাছে থেকে শুনে তাৎক্ষণিক ভাবে মামলা র”জু করে আসামীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেই। শুক্রবার ২৬ আগস্ট ভোরে এ মামলায় দুজনকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন