কুলাউড়া বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন, ২৮ অক্টোবর থেকে সরকার পতনের লাগাতার আন্দোলন-এম নাসের রহমান
স্টাফ রিপোর্টার॥ আগামী ২৮ অক্টোবর থেকে সরকার পতনের চুড়ান্ত লাগাতার আন্দোলন শুরু হবে বলে মন্তব্য করেছেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র সাবেক এমপি এম নাসের রহমান।
রবিবার ২২ অক্টোবর বিকেলে স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল-২০২৩ অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নাসের রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন-‘এদেশে অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। দল নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবী আদায়ের লক্ষ্যে বিএনপি আন্দোলন করছে। লাগাতার আন্দোলনে আমাদের জেলায় শেরপুর পয়েন্টে কর্মসূচী হবে। আর এটি হবে লাগাতার। মৌলভীবাজার সদরেও না। কুলাউড়াতেও না। অন্য কোন উপজেলায়ও না। একটা জায়গায়। শেরপুর পয়েন্টে। নাসের বলেন-কেন্দ্র থেকে সেখানে জড়ো হওয়ার জন্য যখন নোটিশ আসবে তখন মেক্সিমাম সময় দেওয়া হবে মাত্র আগের দিন রাত পর্যন্ত। অতএব মাত্র ১২ ঘন্টা নোটিশের মধ্যে প্রস্তুত হয়ে শেরপুরে উপস্থিত থাকতে হবে। এবং চুড়ান্ত দফার এ আন্দোলনটা শুধু একবার না তা হবে মুর্হুর্মুহুর। আজ ডাকলে একদিন পর পরও ডাকা হতে পারে। এভাবে সকলকে প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে হবে। এই শেরপুর পয়েন্টেই হচ্ছে মৌলভীবাজার জেলার জন্য চুড়ান্ত আন্দোলনের স্থান। নাসের রহমান উপস্থিত কাউন্সিলরদের উদ্দেশে জানতে চান-‘ভাই সব আমরা একটা আন্দোলন করতেছিনা এখন,আন্দোলনটা কিসের জন্য। নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের জন্য। তাই না। কারণ এই হাসিনা ডাইনীর আন্ডারে নির্বাচন করে কোন লাভ হবে না। তাই না। কারণ আমরা তো দেখছি ২০১৪ ও ২০১৮ তে নির্বাচন কি করেছে। দিনের ভোট রাতে করেছে’।
জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আশিক মোসাররফের সভাপতিত্বে ও জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক বকসী মিসবাহ উর রহমানের পরিচালনায় কাউন্সিল অধিবেশনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- জেলা বিএনপির সিনিয়র সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র ফয়জুল করিম ময়ুন,সহ সভাপতি মো.হেলু মিয়া,প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম,কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ সভাপতি ও জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বল,জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান,কুলাউড়া উপজেলা বিএনপি নেতা শওকতুল ইসলাম শকু,কুলাউড়া পৌর সভার সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন আহমেদ জুনেদ, ডা:সাইফুল ইসলাম চৌধুরী,এম এ মজিদ,শামীম আহমেদ চৌধুরী,ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনিরসহ আরও অনেকে।
এতে উপস্থিত ছিলেন- মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী,মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমেদসহ জেলা বিএনপি ও স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
শুধু শাহীন না’ শাহীনের সাথে যারা বিএনপি করতো কুলাউড়াতে তাদের প্রত্যেকটাকে বের করে দিবা’
কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল অধিবেশনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন,‘কুলাউড়ায় যারা ভুয়া একটা বানিয়ে বলে থাকে কুলাউড়া বিএনপিতে দল না কি বিভক্ত; তারা হল এম এম শাহীনের গ্রুপের লোক। ‘আমি এতো দিন বলি নাই-আমি যখন জেল থেকে বের হয়ে আসছিলাম এর চার পাঁচদিন পর ২০০৯ সালের ৫ই এপ্রিল ম্যাডামের (বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া) সাথে একান্ত বৈঠক হয় ৫০ মিনিটের। জেলার রাজনীতি নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। ম্যাডাম আমাকে ষ্পষ্ট বলছেন যে এম এম শাহীন কে আর কোন অবস্থায় দলের কাছে ধারে রাখা যাবে না। আমি তখন ম্যাডামকে বলছিলাম-ম্যাডাম আমি তো তাকে তখন সাইজ করে দিছিলাম। আপনিই তো শেষেরদিকে তারে নিয়ে আসলেন। আমি তো জানি সে কি ধরণের লোক। তখন তিনি আমাকে বললেন, শুধু শাহীনকে না’ শাহীনের সাথে যারা বিএনপি করতো কুলাউড়াতে তাদের প্রত্যেকটাকে বের করে দিবা। এ ভেজাল রক্তেগড়া লোকদের দিয়ে আর বিএনপি করা যাবে না। এবং এদের কাছের ধারেও কেউ থাকবে না।
ভোটাভুটিতে সভাপতি শকু আর সাধারণ সম্পাদক পদে শামীম নির্বাচিত
পরে জেলা সভাপতি বর্তমান আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে কাউন্সিল অধিবেশনে ব্যালটের মাধ্যমে গোপন ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন হয়। উক্ত কাউন্সিলে ৪৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
এতে ১৭ ভোট পেয়ে শওকতুল ইসলাম শকু সভাপতি নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী ড.সাইফুল ইসলাম চৌধুরী পান ১৬ ভোট এবং কামাল উদ্দিন জুনেদ পান ১১ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে আজিজুর রহমান মনির ও শামীম আহমেদ চৌধুরী সমান ২৩ ভোট পান এবং এম এ মজিদ পান ১ ভোট। পরে লটারীতে শামীম আহমেদ চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন।
মন্তব্য করুন