বড়লেখায় কাজ না করেই অর্থ ছাড়ের হিড়িক!
বড়লেখা প্রতিনিধি॥ মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন না করেই অর্থ ছাড়ের হিড়িক পড়েছে। বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজসে কয়েকদিনে ভূয়া বিল ভাউচারে প্রজেক্ট কমিটির সদস্যরা সোনালী ব্যাংক থেকে কয়েক কোটি টাকা উত্তোলন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩০ জুনের মধ্যে কোন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে প্রকল্পের অর্থ ফেরৎ যাওয়ার নিয়ম রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে লুটপাটের জন্যই বাস্তবায়িত কোন প্রকল্পকে ভূয়া প্রকল্প দেখানো হয়। সূত্র জানায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিশেষ বরাদ্দের অধিকাংশ প্রকল্প অদৃশ্য হলেও প্রজেক্ট কমিটি জমা দিয়ে যথারীতি উত্তোলন করা হয় প্রকল্পের অর্থ। নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের নিজবাহাদুরপুর ঈদগাহ হতে নিজবাহাদুরপুর দক্ষিণ মসজিদ পর্যন্ত রাস্তার ইট সলিংয়ের জন্য ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা বিশেষ বরাদ্দ পাওয়া যায়। কিন্তু এ রাস্তা গত বছর জেলা পরিষদের অর্থায়নে ইট সলিং করা হয়। জেলা পরিষদের বাস্তবায়িত রাস্তায় প্রকল্প তৈরী করে ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম নুনুকে প্রজেক্ট কমিটির সভাপতি করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে কমিটি দাখিল করা হয়। ২৯ জুন ওই প্রজেক্ট কমিটিকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজাদুর রহমান। জেলা পরিষদের কাজের উপর প্রকল্প তৈরী করে অর্থ উত্তোলনের খবরে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই জন ইউপি চেয়ারম্যান জানান, উপজেলার ১০ ইউনিয়নে পূর্বের ভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়িত অনেক রাস্তাকে নতুন প্রকল্প দেখিয়ে পিআইও (উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা) ও শাসক দলের কতিপয় নেতা যোগসাজস করে সংসদ সদস্যের বিশেষ বরাদ্দের লাখ টাকা লুটপাট করছেন। এদিকে ¯ি¬প কার্যক্রমের আওতায় উপজেলার ১৪৮ প্রাইমারী স্কুলের উন্নয়নে প্রতিটিতে ৪০ হাজার টাকা করে অর্থ বরাদ্দ হয়। সিংহভাগ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করলেও প্রকল্পের নূন্যতম কাজ বাস্তবায়ন করেননি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজাদুর রহমান জানান, জেলা পরিষদের কাজ যেখানে শেষ সেখান থেকেই এ প্রকল্পের ইট সলিংয়ের কাজ শুরু হবে। প্রজেক্ট কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করায় বরাদ্দের ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা তিনি ছাড় দিয়েছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ৩০ জুনের মধ্যে কোন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে প্রকল্পের অর্থ ফেরৎ যাওয়ার নিয়ম রয়েছে। এভাবে অর্থ ছাড় দেয়া আইন সিদ্ধ নয়। ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ার জন্যই এধরণের প্রকল্পের অর্থ ছাড় দেয়া হয়।
মন্তব্য করুন