কুলাউড়ায় কৃষিকাজে কৃষি প্রনোদনায়ও আগ্রহ নেই মানুষের
বিশেষ প্রতিনিধি॥ কুলাউড়ায় কৃষিকাজে আগ্রহ হারাচ্ছে মানুষ। কৃষিক্ষেত্রে সরকারি প্রনোদনায় কাজ হচ্ছে না। কৃষি জমিতে তাই গড়ে উঠছে পাকা দালান কিংবা লাগানো হচ্ছে গাছের বাগান।
কুলাউড়া উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, কুলাউড়ায় মোট কৃষি জমির পরিমান ৫৪ হাজার ৫শ হেক্টর। এরমধ্যে আবাদী জমির পরিমান ২৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর এবং আবাদ যোগ্য ২৮ হাজার ১শ হেক্টর। মোট ফসলী জমি ৩৬ হাজার ৬৪৪ হেক্টর। এরমধ্যে ১ ফসলী ১৬ হাজার ২৫ হেক্টর. ২ ফসলী ৭ হাজার ১৬০ হেক্টর ও ৩ ফসলী ১হাজার ৭৬৫ হেক্টর। মোট কৃষি জমির মধ্যে পতিত ১ হাজার ৫৭০ হেক্টর ও আবাদ যোগ্য পতিত ১ হাজার ৫৮০ হেক্টর।
কৃষি অফিস জানায়, চলতি আউশ মৌসুমে কুলাউড়া উপজেলায় চাষের টার্গেট নির্ধারণ করা হয় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর। ১২ জুন পর্যন্ত তাদের অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৬ হাজার ৮৫০ হেক্টর। এবার ১হাজার ১৬০ জন কৃষককে কৃষি প্রনোদনা প্রদান করা হয়। এরমধ্যে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতে ১ হাজার ১শ জনকে এবং নেরিকা (আফ্রিকা) জাতে ৬০ জন কৃষককে এই প্রনাদনা দেয়া হয়। উফশী জাতের জন্য প্রতি কৃষক পান ২০ কেজি করে ইউরিয়া, এমওপি ১০ কেজি, ডিএপি ১০ কেজি, বীজ ৫ কেজি ও নগদ ৪শ টাকা প্রদান করা হয়। আর নেরিকা (আফ্রিকা) জাতের জন্য প্রনোদনা হিসেবে প্রদান করা হয় সারের সাথে বাড়তি হিসেবে দেয়া হয়েছে বীজ ১০ কেজি ও নগদ ৮শ টাকা।
সরকারের প্রনোদনার পরও কৃষকদের মধ্যে তেমন আগ্রহ বাড়ছে না। দিন দিন যেন কৃষি বিমুখ হয়ে পড়ছে মানুষ। কুলাউড়ার ১৩টি ইউনিয়নের সবক’টি ইউনিয়নেই আউশ চাষ হয়ে থাকে। বিশেষ করে যেসব ইউনিয়ননে আউশ চাষ হয়ে থাকে সরেজমিন সেসব ্ইউনিয়ন যেমন পৃথিমপাশা, কর্মধা, টিলাগাও ও রাউৎগাও ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ পতিত পড়ে আছে। সেইসব এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখন প্রতি হেক্টর জমিতে যে পরিমান খরচ হয় তার তুলনায় ধান পাওয়া যায় কম।
এছাড়াও অনুসন্ধানে উঠে এসেছে অন্য চিত্র। কোন পরিবারের একজন সদস্য যদি প্রবাসে চলে যায়, তাহলে থেমে যায় ওই পরিবারে কৃষিকাজ। তাছাড়া যেসব পরিবার মোটামুটি শিক্ষিত তারাও কৃষিকাজে বিমুখ।
কৃষি অফিস অবশ্য তাদের টার্গেট ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েই তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন। কিন্তু বাস্তবে কৃষিক্ষেত্রে দিনদিন জমির শ্রেণি পরিবর্তন হচ্ছে। সে ব্যাপারে তাদের কোন নজর নেই। কৃষি জমিতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পাকা দালান গড়ে উঠছে। আবার অনেকেই কৃষি জমিতে গাছ লাগিয়ে অধিক লাভের আশা করছেন। জমির শ্রেণি পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি হচ্ছে পৌরসভা ও শহরের আশপাশের জয়চন্ডী, কাদিপুর, রাউৎগাও, পৃথিমপাশা ও ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে। এসব ইউনিয়নে পাকা দালান বেশি গড়ে উঠছে। আর গাছ লাগানোর তালিকা এগিয়ে কর্মধা ইউনিয়ন।
কুলাউড়া উপজেলা কৃষি অফিসার এমএম শাহনেওয়াজ জানান, কৃষি বিভাগ সবসময় মাঠেঘাঠে কাজ করছে। কিন্তু কৃষকের আগ্রহটা কম। কৃষি অফিসের সাথে যেধরনের যোগাযোগ থাকার কথা সেরকম নয়। এতে তিনি হতাশ।
মন্তব্য করুন