কুলাউড়ায় ভূমি বিষয়ক সংলাপে আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন দাবী
এমাদ উদ্দিন লিমন : সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন দাবী করেছেন আদিবাসী নেতারা। সমতল আদিবাসীদের ”ভূমির বিষয়ক সংলাপ” (বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের প্রেক্ষাপটে) শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলা কারিতাস সক্ষমতা প্রকল্প, কুলাউড়া অফিস কর্তৃক আয়োজিত ভূমি বিষয়ক মত বিনিময় সভাটি ১৮মে বুধবার অনুষ্টিত হয়। কারিতাস সিলেট অঞ্চলে প্রোগ্রাম অফিসার ধৃতু স্নালে’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কুলাউড়া উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন এডভোকেট সুবিমল লিন্ডকিরি। কুলাউড়া সক্ষমতা প্রকল্প সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় চয়ন চক্রবতী, জুনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার (সক্ষমতা প্রকল্প), আইপিডিএস এর মানব সম্পদ কর্মকর্তা জয়ন্ত রাকসাম, সক্ষমতা প্রকল্প এর প্রজেক্ট অফিসার শেখর আজিমসহ আদিবাসী নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুবরাজ আন্ত:পুঞ্জি উন্নয়ন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক ফ্লোরা বাবলী তালাং বলেন, ‘দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় আমাদের মনে হয়েছে প্রশাসনিক লোকজন আদিবাসীদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি অনুধাবন করতে পারেন না। আদিবাসীদের বন, সম্পদ, ঐতিহ্যগত প্রথা সংরক্ষণ করতে ভূমির অধিকার নিশ্চিত করা দরকার। যে বৈষম্য আছে তা দূর করা দরকার। কিন্তু সমস্যাগুলোর জট খোলার সম্ভাবনার অনেকটা সমাধান হবে যখন সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করা হয়। তিনি জানান, এই সমস্যা সমাধান স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত দরকার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুলাউড়া উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, ভূমি সংক্রান্ত ধারণা কম থাকার কারণে অনেক ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন এটি সিদ্ধান্তের বিষয়।
আদিবাসী নেতৃবৃন্দ দাবী করেন, আদিবাসীদের ভোগ দখলীয় ভূমির চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদান করা। দায়েরকৃত সকল স্বত্ব মামলা দ্রুত নিস্পত্তির মাধ্যমে দখলীয় ভূমির যৌথ মালিকানা প্রদান করা। আদিবাসীদের অধিকারের বিষয়টি বিবেচনা করে প্রজ্ঞাপন বা গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আদিবাসীদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা। ১৯২৭ সালের বন আইন সংশোধন করা। প্রাকৃতিক বন এবং বনভুমির উপর আদিবাসীদের পূর্ন অধিকার নিশ্চিত করন। সমতল আদিবাসীদের জন্য বিশেষ ভূমি কমিশন গঠন করে সেখানে আদিবাসী প্রতিনিধিদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা।২০০১ সনে প্রস্তাবিত মুরইছড়া-মাধবকুন্ড ইকো-পার্ক প্রকল্প বাতিল করা ।
বনবিভাগ কতৃর্ক আদিবাসীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা বন মামলাসমূহ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে নিস্পত্তির ব্যবস্থা করা।সামাজিক বনায়নের নামে বনবিভাগ কর্তৃক অহেতুক হয়রানি বন্ধ করা।
সামাজিক বনায়ন বা ইকো-পার্ক এর মত কোন প্রকল্প গ্রহনের পূর্বে পুঞ্জিবাসীদের মতামত ও অংশগ্রহন নিশ্চিতকরন। আইএলও কনভেনশন ১০৭ বাস্তবায়ন করা। আইএলও কনভেনশন ১৬৯ এবং জাতিসংঘ ঘোষিত আদিবাসী অধিকার ঘোষনাপত্র ২০০৭ অনুস্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন করা।
মন্তব্য করুন