কুলাউড়ায় রাজাকারের নামে প্রতিষ্ঠিত দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম বদল হচ্ছে

December 10, 2016,

কুলাউড়া অফিস॥ কুলাউড়া উপজেলায় স্বীকৃত রাজাকারের নামে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। একটি কলেজ ও একটি উচ্চ বিদ্যালয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম পরিবর্তনের তালিকাতে কুলাউড়ার ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিজয়ের মাসে আসা এমন ঘোষণায় উৎফুল্ল কুলাউড়ার মুক্তিযোদ্ধারা।
জানা যায়, দেশের যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় স্বাধীনতা বিরোধীদের নামফলক রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা থেকে তাদের নাম অপসারণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ আদেশ কার্যকর করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে শিক্ষাসচিব ও স্থানীয় সরকার সচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে স্বাধীনতাবিরোধী ২০ জনের নাম তুলে ধরা হয়েছে। এরমধ্যে ৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই ৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩টি কুলাউড়া উপজেলায়।

kulaura-mahtab-chayera-high শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো কেন্দ্রিয় রাজাকারের তালিকায় ৭ম রাজাকার ও শান্তি কমিটির স্থানীয় চেয়ারম্যান এ এন এম ইউসুফ আলীর নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত ইউছুফ গনি আদর্শ কলেজ এবং কুলাউড়ার রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্য মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত মাহতাব-ছায়েরা উচ্চ বিদ্যালয়। আরেকটি প্রতিষ্ঠানের নাম ভুলক্রমে সংযুক্ত হয়েছে। সেটি হলো লংলা ইউছুফ কলেজ। প্রকৃত পক্ষে লংলা ইউছুফ কলেজ নামে কোন কলেজ নেই। রাজাকার এ এন এম ইউছুফ প্রতিষ্ঠিত কলেজটির নাম লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ।
৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার হাইকোর্টের এই আদেশের পর কুলাউড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৮৪ সালে রাজাকার মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর নিজ এলাকা উপজেলা জয়চন্ডী ইউনিয়নে নিজের ও স্ত্রীর নাম সংযুক্ত করে প্রতিষ্ঠা করেন মাহতাব-ছায়েরা উচ্চ বিদ্যালয়। মহাজোট সরকার ২০১২-১৩ অর্থবছরে অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করে দেয়। এদিকে ১৯৯৫ সালে রাজাকার ও শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান এ এন এম ইউছুফ নিজের এবং তার বাবার নাম যুক্ত করে প্রতিষ্ঠা করেন ইউছুফ গণি আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজ। প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হয় ১৯৯৮ সালে। তৎকালীন এমপি ও কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোঃ মনসুর আহমদের বদৌলতে। কুলাউড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার সুশীল দেব ও সাবেক উপজেলা কামান্ডার ও বর্তমান ডেপুটি কামান্ডার আতাউর রহমান আতা হাইকোর্টের এই রায়কে যুগান্তকারী হিসেবে আখ্যায়িত করে জানান, একটি স্বাধীন দেশে দেশদ্রোহীদের কোন স্মৃতিচিহ্ন না রাখাটাই উত্তম। আমরা ঐতিহাসিক এই রায়ে খুশি। এখন এর বাস্তবায়ন চাই।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com