কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে নেওয়ায় কমে যাচ্ছে ফসলের উৎপাদন
হারিস মোহাম্মদ॥ জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমির মাটির উপরের উর্বর অংশ বিক্রির ধুম পড়েছে। আর্থিকভাবে সাময়িক লাভবান হওয়ার আশায় অনেক কৃষক তাদের জমির মাটি উপরের অংশ কেটে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে জমির উর্বরতা হারানোর সঙ্গে হারাচ্ছে উৎপাদন ক্ষমতা, কমে যাচ্ছে ফলনের পরিমাণ।
মঙ্গলবার ২৮ফেব্রুয়ারি সরেজমিন উপজেলার জায়ফরনগর, পশ্চিমজুর পূর্বজুড়ী ও সাগরনাল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে ট্রাকে করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ট্রাক যোগে মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সড়কে কিছুক্ষণ পর পর চোখে পড়ে মাটি বোঝাই ট্রাকের আসা যাওয়া। উপজেলার বিভিন্ন সড়ক দিয়ে মাটিবাহী যাবাহন চলাচলের কারণে সড়কে মাটি পড়ে অল্প বৃষ্টিতে কাদার সৃষ্টি হয়ে নানা ধরণের দূর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।
অনেকেই বাড়তি টাকার লোভে পড়ে মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে মাটি বিক্রি করছেন। আবার অনেকে নিজের ভিটা ভরাটের জন্য ফসলি জমি থেকে মাটি নিচ্ছেন। মাটি ব্যবসায়ীরা এসব মাটি বিভিন্ন ইটভাটায়, ভিটা ও নিচু জমি ভরাটের জন্য চুক্তি করে চড়া দামে বিক্রি করছেন। কৃষি জমির মাটি কাটার ফলে জমি উর্বরতা হারাচ্ছে। পাশাপাশি জমি নিচু হয়ে যাচ্ছে। এতে ফসল কমে যাচ্ছে।
কৃষকরা জানান, দুই তিন বছর জমির ফসল হবে না সেটা জেনেও মাটি বিক্রি করছেন। কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের জমির পাশ থেকে অন্য জমির মালিকরা মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছন।এতে জমির পানি সম্পূর্ণ নেমে যায় নিচের জমিতে। আমরা মাটি খননে তাদেরকে বাঁধা দিলে কোন প্রকার কর্নপাত করছেননা।
জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, জমির টপ সয়েল বা জমির উর্বর অংশ কেটে নিলে সেই জমিতে তুলনামূল ফসল কম হয়। কৃষকদের ‘টপ সয়েল’ বিক্রিতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে কিন্তু অধিক লাভের আশায় তারা পরামর্শ শুনছেন ।
জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, টপ সয়েল হলো জমির প্রাণ। টপ সয়েল বিক্রি করলে জমির উর্বরতা কমে যায়। এটা বিক্রি আইনে নিষিদ্ধ। কৃষকরা টপ সয়েল বিক্রি করে নিজেদের ক্ষতি করছে। এরকম কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন