খেলাপী ঋণ ব্যাংকিং সেক্টর এর দুরারোগ্য ব্যাধি
মোহাম্মদ আবু তাহের॥ খেলাপী ঋণ নিয়ে এখন মানুষের উৎকন্ঠার শেষ নেই। ব্যাংকের পাওনা টাকা আদায় নিয়ে খেলাপী ঋণ সমস্যা একটি দূরারোগ্য ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। খেলাপী ঋণের টাকা কোনো ভাবেই উদ্ধার করা যাচ্ছে না। একটি মজার গল্প দিয়ে লেখাটি শুরু করছি। এক ব্যক্তিকে গ্রামের বাজারে কয়েকজন লোক বেধরক পেটাচ্ছে। পিটুনি খেতে খেতে লোকটি রাস্তায় পড়ে যায়। এ অবস্থা দেখে একজন জিজ্ঞেস করল ওকে মারছেন কেন? যারা পেটাচ্ছে তারা বলল ব্যাটার কাছে টাকা পাই, দেই দিচ্ছি করে দিনের পর দিন ঘোরাচ্ছে। লোকটি তখন আহতজনকে জিজ্ঞেস করল কথাটি কি ঠিক? উত্তরে সে বলল, ঠিক। তবে আজ যেভাবে টাকা ফেরৎ চাইছে, এভাবে আর কোনোদিন চায়নি। এভাবে চাইলে আমি টাকা ফেরৎ দিয়ে দিতাম। পাওনাদারের নিরবতা দেখে আমি ভেবেছি টাকা ফেরত দেওয়া লাগবে না। উদাহরণটা এজন্য দেওয়া হলো খেলাপী ঋণ আদায়ে আইনী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এর সুযোগ কম এবং অনেক সময়েরও প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তাদের তাদের খেলাপী ঋণ আদায়ের তৎপরতা এবং কৌশল অবলম্বনেও দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়। খেলাপী ঋণকে ব্যাংকিং খাতের অবস্থা বিবেচনার জন্য একটি প্রধান সূচক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অনিয়মিত ঋণ আদায়ে কোন সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই। প্রকৃতপক্ষে ঋণ দেয়ার চেয়ে ঋণ আদায় করা অনেক বেশী কঠিন। এজন্য ব্যাংক কর্মকর্তাদের ঋণ আদায়ের ব্যাপারে অনেক বেশী কৌশলী হতে হয়। অপেক্ষাকৃত চৌকস কর্মকর্তাদের খেলাপী ঋণ আদায়ে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া উচিত।
ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপীদের বিরূদ্ধে মামলা দায়ের হলে বিচার প্রাপ্তিতে বিলম্বও ঋণ খেলাপীদের বেপরোয়া করে তোলে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম গ্লেডষ্টোন যথার্থই বলেছেন- “ঔঁংঃরপব ফবষধুবফ লঁংঃরপব ফবহরবফ” অর্থাৎ বিচার প্রার্থীতে বিলম্ব বিচার না পাওয়ারই নামান্তর। প্রবাদসম এ উক্তিটির উৎপত্তি বৃটেনে হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই এটি বেশী প্রযোজ্য। অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করে রায়ের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে। এতে বিচার প্রার্থীদের মারাতœক ক্ষতির সম্মূখীন হতে হয়। মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রীতা খেলাপী ঋণ আদায়ের পথে অন্যতম অন্তরায়।
তাছাড়া আইনের কঠোর প্রয়োগ না হওয়া একটি বড় বাঁধা। কৃষকদের বিরুদ্ধে ছোট ছোট ঋণ আদায়ের জন্য পাবলিক ডিমান্ড রিকোভারী এক্টের অধীনে মামলা করা হয়। কৃষকদের কাছ থেকে বিশ – ত্রিশ হাজার টাকা আদায়ের জন্য গ্রেফতারের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ছোট খাটো ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা গেলেও কোটি কোটি বা শত সহস্র কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ আদায়ে ত্বরিত কার্যকর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ নেই। দেশে বিদ্যমান অর্থ ঋণ আদালত আইন মৌলিক অধিকারের দৃষ্টিতে প্রণীত একটি আইন। এ আইনে মামালা করে ব্যাংক ঋণের খেলাপী টাকা আদায় করা খুবই কঠিন। উচ্চ আদালতে রিট করলেই মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে যায়। কোন ব্যাংক যখন কাউকে খেলাপী ঘোষণা করে তখন কোন কোন গ্রাহক কোর্টে গিয়ে রিট পিটিশন দায়ের করেন। তখন ঋণটি আদায়ের সুযোগ আর থাকে না। রিট দায়ের এর সুযোগ না থাকলে অনেক বড় অংকের ঋণের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকবে না। খেলাপী ঋণ দেশের অর্থনীতির জন্য এক অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় দেশের ব্যাংকিং সেক্টরকে দেউলিয়া করার জন্য যেন ঋণ খেলাপীরা উঠে পড়ে লেগেছে।
ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা কঠিন আইনের অভাবে আটকা পড়ে আছে। অথচ ব্যাংকের নিজস্ব কোন টাকা নেই আমানতকারীদের টাকা থেকেই ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করে থাকে। আইনী জটিলতায়ই ব্যাংকের খেলাপী ঋণ আদায় করা যাচ্ছে না। আইনের প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। রায় প্রকাশের পর তা বাস্তাবায়নে জটিলতা, বন্ধকি সম্পত্তি নিলামের ক্ষেত্রে দরদাতার অনুপস্থিতি ইত্যাদি। সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় খেলাপী ঋণের পরিমান সোয়া লাখ কোটি টাকার মতো। খেলাপী ঋণ আদায়ে কঠোরতর আইন দরকার যাতে ইচ্ছাকৃত খেলাপীদের বিচার হয়, টাকাও উদ্ধার হয়। ব্যাংক বিশ্লেষকদের মতে প্রকৃত পক্ষে খেলাপী ঋণের পরিমান দেড় লাখ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। তারা বলছেন বিশাল এ ব্ল্যাকহোল পুরো অর্থনীতিকে গ্রাস করে ফেলছে। দেশের অর্থনীতির চাকা থামিয়ে দিচ্ছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক রিপোর্ট থেকে জানা যায় সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন- প্রতি বছর খেলাপী ঋণ বৃদ্ধি এক অশনি সংকেত। এটি ব্যাংকের মুলধন ও আয়ে প্রভাব ফেলবে। তখন ঋণের সুদও বেড়ে যাবে। সার্বিকভাবে এক ধরণের সংকট সৃষ্টি হবে। এতে ভালো ব্যবসায়ীরা ঋণ পাবে না। সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে আরো জানা যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে খেলাপী ঋণ বেড়ে যাওয়ার জন্য আইনগত জটিলতার কথা বলা হয়েছে। শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ে আইনি জটিলতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। খেলাপী গ্রাহকরা ঋণ পরিশোধ না করার জন্য বিভিন্ন আইনি ফাকফোকর বের করছেন। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে খেলাপী গ্রাহকরা শ্রেণীকরণ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে শ্রেণীকরণের ওপর স্থগিতাদেশ নিচ্ছেন। এ সুবাদে তারা অন্য ব্যাংক থেকে নতুন নতুন ঋণ সুবিধা নিচ্ছেন। (দৈনিক যুগান্তর – ১৬ মার্চ ২০১৮) বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে ব্যাপক অরাজকতা চলছে। অর্থাৎ আইন অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে না। যাকে বলা যায় সুশাসনের অভাব। তিনি বলেছেন ব্যাংকিং কমিশন না করে ব্যাংকিং অপরাধ তদন্ত কমিশন গঠন করা উচিত। তারা দেখবে কোন ব্যাংকে কী কী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং কারা করছে। এখন বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বে দেখা হচ্ছে একবিংশ শতাব্দির উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে। খেলাপী ঋণের ভারে ব্যাংকগুলো যে ভাবে সংকটে পড়ছে তা সহনীয় পর্যায়ে না আনতে পারলে বাংলাদেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হবে। অর্থঋণ আদালতে অনেক মামলা রয়েছে। যার সময়মতো নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। সময়োপযোগী আইন প্রয়োগ করাটা এখন জরুরী। বিশেষ বেঞ্চ গঠনের মাধ্যমেও ব্যাংকের খেলাপী ঋণ সংক্রান্ত মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করাটাও সময়ের দাবি বলে মনে করি। ব্যাংককে খেলাপী ঋণ থেকে বাঁচাতে হলে সরকারী-বেসরকারি ব্যাংক ব্যবস্থাপকদের অসম প্রতিযোগিতা থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে। ঝুঁকি বিশ্লেষণে স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ করে ঋণ প্রদান করতে হবে। সহজামানত অতিমূল্যায়ন, বন্ধকি সম্পত্তির দলিলপত্র সংগ্রহে সকল প্রকার শিথিলতা পরিহার করতে হবে।
ঋণ খেলাপীদের মধ্যে দৃশ্যমান দুটি শ্রেণী আছে। একটি শ্রেণী হলো ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নানা প্রতিকূলতার কারণে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারে না। এরাই হচ্ছে প্রকৃত ঋণ খেলাপী। এদের ঋণ পরিশোধে সামর্থ্যবান করে তোলার জন্য এ ঋণ পুন: তফশীলের সুযোগ দেয়া সহ নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করা যেতে পারে। আর এক শ্রেণী আছে যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে চায় না। এরাই হলো ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপী। এদের কোনো ধরনের ছাড় দেয়া উচিত নয়। সময় ক্ষেপণ না করে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপীদের কঠোর আইনী পদক্ষেপ নেয়া দরকার। আমাদের দেশে এখনও খেলাপীদের আলাদা কোন সংজ্ঞা নেই। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া স্বেচ্ছা খেলাপীদের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছে। বাংলাদেশের খেলাপী গ্রাহকদের জন্য যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বিদ্যমান তা সবধরনের খেলাপীদের জন্য অভিন্ন। অথচ স্বেচ্ছা খেলাপীদের অপরাধ ঘৃণ্য প্রকৃতির। কলা চুরি ও ডাকাতির বিচার যেন এক ও অভিন্ন উদাহরণ এভাবেই দেওয়া যেতে পারে। কিছু কিছু উদ্যোক্তা বা ঋণগ্রহীতা আছেন যারা ব্যাংক ঋণ আত্মসাত করার উদ্দেশ্যেই ঋণ গ্রহণ করে থাকেন। এদের কাছে ঋণের সুদেরহারও কোনো ফ্যাক্টর নয়। ব্যাংক ব্যবস্থা সঠিকভাবে পরিচালিত না হলে একটি দেশের অর্থনীতি ভালভাবে পরিচালিত হতে পারে না। তাই ব্যাংক ব্যবস্থাকে সঠিক ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে হবে। খেলাপী ঋণ আদায়ে আরো কঠোর আইন প্রনয়ণ ও বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
১৯৯৮ সালে তদানীন্তন মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ তাঁর এক বক্তৃতায় প্রতিটি ব্যাংকের শীর্ষ ১০ খেলাপীকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জন্য ঋণ খেলাপী ট্রাইবুনাল গঠনের আহবান জানিয়ে ছিলেন। ১৯৯৯ সালে আবার একই প্রস্তাব করেছিলেন সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। খেলাপী ঋণ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকলে ব্যাংক ব্যবস্থা নেতিবাচক হবে। ব্যাংক ব্যবস্থা নেতিবাচক হলে দেশের অর্থনীতি নেতিবাচক হবে। অর্থনীতি নেতিবাচক হলে দেশের উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্থ হবে। আর উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্থ হলে দেশ সামনের দিকে কাঙ্খিত মাত্রায় এগিয়ে যাবে না। ব্যাংকগুলো প্রতি জেলাতেই একাধিক আইন উপদেষ্টা মনোনয়ন দিয়ে থাকেন। সাধারণত অভিজ্ঞ আইনজীবীদের এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এমনিতেই সিনিয়র এবং খ্যাতিমান আইনজীবীরা বিভিন্ন ধরনের মামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন যে কারণে অনেক সময় ব্যাংকের মামলাগুলোর প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেন না বলে প্রতীয়মান হয়। অনেক সময় প্রয়োজনীয় মনোযোগ এর অভাবে ব্যাংক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এ ধরনের ক্ষতির কারণে আইন উপদেষ্টার দায়িত্ব কিংবা জবাবদিহীতার মাত্রা নিরূপনের জন্য কার্যকর কোনো ব্যবস্থা আছে বলেও প্রতীয়মান হয়না। খেলাপী গ্রাহকের বিরুদ্ধে দায়ের করা ব্যাংকের মামলা বছরের পর বছর চলতে থাকা এবং নিষ্পত্তি না হওয়ার অন্যতম কারণ ব্যাংকের আইন উপদেষ্টার যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়া। এটা খুবই স্বাভাবিক একজন আইনজীবীর একই দিনে কয়েকটি আদালতে যদি একাধিক শুনানী থাকে তখন তিনি নিজের সুবিধামতো অগ্রধিকার নিয়ে করবেন। সে কারনেই ব্যাংকের মামলাটি কম গুরুত্ব পাবে, তখনই সময়ের প্রার্থনা করা হবে। এজন্য দেখা যায় ব্যাংকের মামলা গুলো নিষ্পত্তি হতে কয়েক গুণ বেশী সময় লাগে। এ অবস্থায় ব্যাংক ম্যানেজারদেরও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আইন উপদেষ্টার উপরে নির্ভরশীল থাকতে হয়। স্বত্বের মালিকানার সঠিকতা যাচাইয়ে আইন উপদেষ্টার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হওয়া যাবেনা। কারণ আইন উপদেষ্টার কোনো কাজে ভূল ধরা পড়লে দায় দায়িত্ব ব্যাংক ব্যবস্থাপক বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরই ঝামেলায় পড়তে হয়। নিয়মনীতির আলোকে ঋণ প্রদান না করলে কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব ও নষ্ট হয়ে যায়। ব্যাংক কর্মকর্তাদের মনে রাখতে হবে, নজরদারী যত বেশী থাকবে খেলাপী তৈরী হওয়ার সুযোগও তত কম থাকবে। আমি একটি ব্যাংকের আঞ্চলিক আইন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের বিষয়টি মনিটরিং করতে গিয়ে আমি নিজেও বিপুল পরিমাণ খেলাপী ঋণ এবং অবলোপনকৃত ঋণ আদায় করে থাকি। আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি নিম্নলিখিত কিছু কৌশল অবলম্বন করলে ঋণ আদায়ে নিশ্চিত সফলতা অর্জন সম্ভব। যেমন –
লেগে থাকা- লেগে থাকলে এবং ঋণ গ্রহীতার ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা থাকলে আদায় হবেই। আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে, আশা ছেড়ে দিলে হবে না।
বারবার তাগাদা দিতে হবে, কোনো পরিস্থিতিতেই ধৈর্য্য হারানো যাবে না।
পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে কখনো নরম, কখনো গরম এবং সময় সুযোগ এবং পরিস্থিতি বুঝে আইনের বিষয়টিও তুলে ধরতে হবে।
ঋণ আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তার কখনো চরম অবস্থায় পৌঁছা উচিত হবে না।
সর্বাবস্থায় সাহস বজায় রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে ঋণ খেলাপী দুর্বল, তিনি ব্যাংক থেকে টাকা নিয়েছেন। হুমকি ধমকি দিতে পারেন, এটি তার অভিনয় হিসেবে দেখতে হবে।
কর্মকর্তাদের নিজের সম্মান সমুন্নত রাখতে সচেষ্ট থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, ঋণ খেলাপী যতই প্রভাবশালী হন না কেন তিনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে দুর্বল।
বাস্তবায়ন অযোগ্য বক্তব্য থেকে সর্বাবস্থায় বিরত থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, ব্যাংক কারো বিরুদ্ধে আইন ও নিয়মনীতি বহির্ভূত কিছু করতে পারে না। ঋণ খেলাপী যদি কখনো আজেবাজে কথা বলেন, পাল্টা ধমক বা আজেবাজে কথা বলা যাবে না।
কোমল থেকে কঠিন হতে হবে, মনে রাখতে হবে ঋণ খেলাপীকে হেয় প্রতিপন্ন করা ব্যাংকের উদ্দেশ্য নয় বরং আসল উদ্দেশ্য হলো ব্যাংকের টাকা আদায় করা।
মন্তব্য করুন