গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে আবদুল বাছিত বাচ্চু-হাজিপুরকে মডেল ইউনিয়ন করতে সব চেষ্টাই করবো
বিশেষ প্রতিনিধি॥ নির্বাচিত হওয়ার পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় কুলাউড়ার হাজিপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল বাছিত বাচ্চু বলেন, হাজিপুর ইউনিয়নের মানুষ আমার ৯৫ বছর বয়সী মায়ের মুখে হাসি ফুঁটিয়েছে। নিজের শেষ রক্তবিন্ধু দিয়ে হলেও আমি এই ইউনিয়নের মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাবো। হাজিপুরকে একটি মডেল ইউনিয়ন করতে সব চেষ্টাই্ করে যাবো ইনশাল্লাহ।
আবদুল বাছিত বাচ্চুর জন্ম হাজিপুর ইউনিয়নের সাধনপুর গ্রামে এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে। বাবা আবদুল লতিফ (ললই বাবু) ছিলেন একজন সমাজ হিতৈষি ব্যক্তি। মা খয়রুন্নেছা একজন গৃহিনী। ৮ভাই-বোনের মধ্যে ষষ্ট আবদুল বাছিত বাচ্চু ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অনেকটা চঞ্চল প্রকৃতির। ছাত্রজীবনে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায় ছিল তার অত্যধিক শখ। পাশাপাশি সমাজের নানা অসংগতি ছোটবেলা থেকেই তাকে পীড়া দিত। ১৯৮৫ সালে পিতার মৃত্যুর পর পরিবারে এক ধরণের অস্থিরতা দেখা দেয়। বাড়ি ছাড়েন বাচ্চু। তবে হাল ছাড়েননি। শহরে অন্যের বাচ্চাদেও পড়ানোর পাশাপাশি নিজের পড়া চালিয়ে যান। অন্তত ৭বছর পাঠ বিরতির পর ১৯৯৩ সালে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি উত্তীর্ণ হন। পরে টিউশনি করে করে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও সিলেট এমসি কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করেন। ১৯৯৭ সালে কুলাউড়া মানব ঠিকানা পত্রিকার বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমে একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে তিনি কর্মজীবন শৃরু করেন। পাশাপাশি চলে হাজিপুর তথা কুলাউড়া-জুড়ীর মানুষের কল্যাণে পথচলা। এসময় দেশের প্রথম ট্যাবলয়েড দৈনিক মানবজমিন বের হলে এই পত্রিকার কুলাউড়া প্রতিনিধির দায়িত্ব পান আবদুল বাছিত বাচ্চু। একই সাথে সিলেটের প্রাচীন পত্রিকা দৈনিক যুগভেরীর সাথেও জড়িত থেকে কাজ করেণ। ২০০০ সালে সিলেট থেকে নতুন শতাব্দীর দৈনিক শ্যামল সিলেট বের হলে প্রথমে সিনিয়র রিপোর্টার ও পরে বার্তা সম্পাদকের দ্বায়িত্ব নেন। আবদুল বাছিত বাচ্চু ভোরের কাগজ, সমকালসহ অনেক প্রতিষ্ঠিত কাগজে কাজ করেন।
আবদুল বাছিত বাচ্চু জানান, এলাকায় ছাত্র ও যুব সমাজের সাথে নিবিড় সম্পর্কের কারণে ছোট বেলা থেকেই সমাজের ভালো কিছু করার চিন্তা করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন ছাত্র ও পেশাজিবী সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পাশাপাশি ক্লাব সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘদিন। গঠন করেন বিভিন্ন ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। কুলাউড়া প্রেসক্লাবে তিনি ৩ বার সাধারণ সম্পাদক ও ৩ বার সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা টাইমস ও সকালের খবর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি। একই সাথে মৌলভীবাজারের সর্বস্থরের সাংবাদিকদের একমাত্র সংগঠণ জেলা সাংবাদিক ফোরামের তিনি সিনিয়র সহ-সভাপতি। ৭ মে অনুষ্ঠিত হাজিপুর ইউনিয়নের সর্বকালের সব ছেয়ে এক প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ নির্বাচনে বড় দলগুলোর প্রার্থীদের পিছনে ফেলে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। সাংবাদিকদেও সাথে আপলাপকালে আবদুল বাছিত বাচ্চু জানান, এটা তার জীবনে এক বড় সাফল্য। বিশেষ করে ব্যারিস্টার মুত্তাকিম চৌধুরী, ড. আবেদ চৌধুরী, ডা. হোসেন রাজা চৌধুরী ও আবদুল মুয়িদ চৌধূরীর মত সুগারিকদের ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হওয়া এক বড় ভাগ্যের ব্যাপার।
তিনি এই বিজয়ের কৃতিত্ব প্রথমেই দেন ইউনিয়নের সর্বস্তরের অধিকার বঞ্চিত ভোটারেদের। বিশেষ করে বিগত পরিষদ ও চেয়ারম্যন ইউনিয়নের অনেক এলাকার লোকজনের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন যা তার বিজয়ের পথ সুগম করেছে। পাশাপাশি ইউনিয়নের নারী ভোটারদের বেশিরভাগই তার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বিজয়ী হওয়া অনেক সহজ হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। নিরোপেক্ষ নির্বচন নিশ্চিত করতে বৃহত্তর সিলেট তথা প্রবাসে অবস্থারনরত সাংবাদিকদের ভুমিকা এবং নির্বাচনের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের কার্যকর তৎপরতা এই বিজয় নিশ্চিত করেছে।
আবদুল বাছিত বাচ্চু তার এ বিজয়ে অবদান রাখায় সর্বস্থরের সাংবাদিকবৃন্দ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, স্থানীয় প্রশাসন এবং সর্বস্থরেরর ভোটারেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। পাশাপাশি প্রবাসী ভাইিয়েরা তাদের বাড়িতে এমনকি আত্মীয়-স্বজনকে মোটর সাইকেল প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য অনুরোধ করায় তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি জানান ১৮ বছর যাবৎ হাজিপুর ইউনিয়ন কাঙ্খিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। পাশাপাশি ন্যায় বিচার না পাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নি”্ছ।ে এ অবস্থা উত্তরণে তিনি যথা স্ধ্যা চেষ্টা করবেন বলে জানান। একই সাথে জরাজীর্ণ রাস্তা-ঘাট সংস্কার, নতুন নতুন রাস্তা নির্মাণ, ইউনিয়নের অবশিষ্ট এলাকা বিদ্যুতায়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন তথা দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে প্রয়োজনী ভুমিকা রাখতে চান সাংবাদিক সমাজের এই নেতা। তিনি বলেন, এলাকার মসজিদ মন্দির সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্ন্য়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। বিশেষ করে হাজিপুরকে একটি মডেল ইউনিয়নে রূপান্তরে যা যা করার সব চেষ্টাই তিনি করবেন। এজন্য জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, এলাকার সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যন মেম্বারসহ সকল মহলের প্রয়োনীয় সহযাগিতা কামনা করেন নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল বাছিত বাচ্চু। সর্বশেষ ইউনিয়নের ভোপটারদের প্রতি তার বার্তা, তাকে ভোট কে বা কারা দিয়েছে তা বড় নয়। এথন তিনি হাজিপুরের সকল মানুয়ের চেয়ারম্যান। সত্য সুন্দর ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সকলের প্রতি তার সমান দৃষ্টি থাকবে এটাই প্রতিশ্রুতি রইল। এক কথ্য়া দল ও ধর্ম যার যার, চেয়ারম্যান বাচ্চু সবার।
মন্তব্য করুন